দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: অটোরিকশার মতো এবার টোটোর জন্যও নির্দিষ্ট রুট নির্ধারণ করা হবে। যাত্রী চাপিয়ে যেকোনো জায়গায় চলাচল আর সম্ভব থাকবে না তিন চাকার এই যানটির। টোটো নিয়ন্ত্রণে এবার রাজ্য সরকার কঠোর পদক্ষেপ নিতে চলেছে।
সোমবার এ বিষয়ে সমস্ত জেলা প্রশাসন, পুরসভা, টোটো সংগঠন এবং পুলিশের সঙ্গে বৈঠকে করেছে পরিবহণ দপ্তর। সেখানে টোটো চলাচলের গাইডলাইন পরিষ্কার করে দেওয়া হয়। টোটোর সংঠিক সংখ্যা নির্ধারণে করা হবে টোটো শুমারও। পাশাপাশি টোটো সংগঠনগুলোর তরফে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, এক ব্যক্তির নামে একাধিক টোটোর রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হোক। কোনও ‘মহাজনি প্রথা’ তাঁরা মানবেন না বলে জানিয়েছেন। বৈঠকে ঠিক হয়েছে, প্রত্যেক টোটোকেই জেলাস্তরে স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে নথিভুক্ত করা হবে। দেওয়া হবে নম্বার প্লেটও। তাতে কিউআর কোড থাকবে। তা স্ক্যান করেই বোঝা যাবে এক রুটের টোটো অন্য রুটে ঢুকে যাচ্ছে কি না! আরও একটি সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে রাজ্য। এখনও পর্যন্ত টোটোর থেকে কোনও ট্যাক্স পায় না সরকার। আগামিদিনে এই যানের জন্য বার্ষিক ট্যাক্স নেওয়া হবে।
পরিবহণ দপ্তর সূত্রে খবর, বর্তমানে যে টোটো রাস্তায় চলে, সেগুলোর অধিকাংশই বেআইনি। টোটোচালকদের এই টোটো বদলে ই-রিকশা নামানোর জন্য সময় দেওয়া হবে। তবে তা নিয়ে তাড়াহুড়ো করতে চায় না দপ্তর। এক আধিকারিকের কথায়, “রাস্তায় চলা টোটোগুলো অধিকাংশই দু’তিন বছরের বেশি চলে না, তাই সেগুলো বদলানোর সময়ই এই ই-রিকশায় বদল করে দিতে হবে।” পাশাপাশি যাত্রী নিরাপত্তার স্বার্থে টোটো নিয়ে এর আগেই গাইডলাইন প্রকাশ করেছিল রাজ্য। সেখানে বলা হয়েছিল, জাতীয়, রাজ্য সড়ক-সহ রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় আর চলবে না অটো, টোটো। কিন্তু তাতে চিত্রটা বদলায়নি। ফলে এবিষয়ে আরও কড়া হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশকে। ট্রাফিকের এক কর্তার কথায়, “জাতীয় ও রাজ্য সড়কে দেদার চলছে অটো-টোটো-সহ একাধিক বেআইনি তিনচাকা গাড়ি। যার জেরে বাড়ছে যানজট। এমনকী, একাধিক দুর্ঘটনাও ঘটছে এই বেআইনি যানবাহনের জন্য। প্রাণ যাচ্ছে অনেকের। শুধু তাই নয়, জাতীয় ও রাজ্য সড়কে এই তিনচাকা যান চলাচলের দরুন পণ্যবাহী গাড়ির গতিও শ্লথ হচ্ছে। ফলে ক্ষতি হচ্ছে পণ্য পরিবহণেও। তাই জাতীয় ও রাজ্য সড়কে টোটো, অটো বা রিকশা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পরিবহণ দপ্তর। বদলে স্থানীয় পুরসভা, পঞ্চায়েতগুলিকে বৈঠক করে টোটো-অটোর রুট ঠিক করতে বলা হয়েছে।
একদিকে প্রশাসনের কাছে টোটোর সঠিক সংখ্যা নেই, অন্যদিকে টোটোর জন্য কোনো নির্দিষ্ট রুটও ঠিক করা হয়নি। তাই সরকার টোটোগুলিকে নম্বরপ্লেট দিয়ে নির্দিষ্ট রুটে চলার ব্যবস্থা করতে চাইছে। স্থানীয় পুরসভাকে ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনা করে রুট নির্ধারণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেসব রুটে টোটোর সংখ্যা বেশি, সেখানে রোটেশন পদ্ধতিতে চলাচল করতে বলা হবে।