International

1 year ago

Ukraine war in the narrative of the Russian army:রাশিয়ার সেনাদের বয়ানে ইউক্রেন যুদ্ধ

Ukraine war in the narrative of the Russian army
Ukraine war in the narrative of the Russian army

 

দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ জার্মানির বাভারিয়া রাজ্যের মিউনিখ শহরে চলছে অক্টোবর ফেস্ট। সেখান থেকে সামান্য দূরে শহরতলিতে বসবাস করেন ভ্যাসিলি। এটা তাঁর আসল নাম নয়। নাম প্রকাশ করলে রাশিয়ায় তাঁর পরিবারের ওপর আক্রমণ হতে পারে, তা-ই পরিচয় গোপন রাখতে চেয়েছেন তিনি।

রাশিয়া থেকে পালিয়ে জার্মানিতে এসে বসবাস করছেন এই রুশ সেনা কর্মকর্তা। দীর্ঘদিন রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে কাজ করেছেন তিনি। মাসখানেক আগে জার্মানিতে পালিয়ে এসেছেন।রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে বন্দুক চালানোর পল্টনে কাজ করতেন ভ্যাসিলি। বহুদিন ধরেই সেনাবাহিনীর কাঠামো ও অবস্থা নিয়ে বিরক্ত ছিলেন তিনি। কাজ ছেড়ে অন্য কিছু করার কথা ভাবছিলেন। তারই মধ্যে শুরু হয় ইউক্রেন যুদ্ধ। ভ্যাসিলি ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, 'আমার বাবা ইউক্রেনের। তাই ইউক্রেনের মানুষ আমার নিজের লোক। তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না।’

কিন্তু রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই অনুরোধ শোনেননি। তিনি ডিক্রি ঘোষণা করেন যে, যুদ্ধে না গেলে সেনা জওয়ান ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ১০ থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। এই সময় কমান্ডারের কাছ থেকে ফোন পান ওই কর্মকর্তা। যুদ্ধে যোগ না দিলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর কোনো উপায় না দেখে দেশ ছেড়ে পালান ভ্যাসিলি।

জার্মানিতে এমন বেশ কিছু রাশিয়ার সেনা এসে আশ্রয় নিয়েছেন। তবে অধিকাংশই যাচ্ছেন কাজাখস্তান ও আর্মেনিয়ায়। বেশ কিছু এনজিও তাদের পালানোর ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। জঙ্গলের রাস্তা দিয়ে পৌঁছাতে হচ্ছে কাজাখস্তানে।

ভিক্টরও সেভাবেই কাজাখস্তানে আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, অন্তত ৫০০ রাশিয়ার সেনা আপাতত কাজাখস্তান ও আর্মেনিয়ায় আছেন। ভিক্টরও এই সেনার আসল নাম নয়। আপাতত কাজাখ রাজধানী আস্তানায় আছেন তিনি। রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে কমিউনিকেশন অফিসার ছিলেন তিনি। ইউক্রেন যুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ক্রিমিয়ায় পাঠানো হয়েছিল তাঁকে।

যুদ্ধের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা এখনো মনে পড়ে তাঁর। সকাল পাঁচটায় ঘুম থেকে তুলে তাঁদের বলা হয়েছিল, অনেকটা পথ যেতে হবে। তাঁরা ইউক্রেনে প্রবেশ করেন। 

ভিক্টর বলেন, ‘চোখের সামনে যুদ্ধবন্দীদের হত্যা করতে দেখেছি। আমাদের কমান্ডার সে কাজ করতে বাধ্য হয়েছেন। তবে বেসামরিক মানুষের ওপর আক্রমণ আমরা চালাইনি। অনেক পরে ইন্টারনেটে সেসব ঘটনা পড়েছি।’ এপ্রিল পর্যন্ত যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন ভিক্টর। তারপর পালিয়ে এসেছেন। ওই ভয়াবহতা আর মেনে নিতে পারেননি।

‘পুতিন হত্যাকারী জানতাম, পাগল জানতাম না’

ইয়েভজেনিইও বাকিদের মতো পালিয়েছেন। রুশ সেনাবাহিনীর বিশেষ ইউনিটে কাজ করতেন তিনি। গরিব ঘরের ছেলে সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন সামাজিক সম্মানের আশায়। ইউক্রেন যুদ্ধে তিনিও যোগ দিতে বাধ্য হয়েছিলেন।  তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘কিয়েভের দিকে যাওয়ার সময় সঙ্গে কোনো যুদ্ধবন্দীকে রাখা হচ্ছিল না। কারণ, তাঁদের রাশিয়া ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো কোনো ব্যবস্থা ছিল না। রাস্তাতেই তাদের খতম করা হচ্ছিল।’ নিজে অবশ্য এমন কোনো হত্যার সঙ্গে যুক্ত নন বলে জানিয়েছেন এই সেনা।

বর্তমানে যুদ্ধের মূল এলাকা ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দনবাসেও ছিলেন তিনি। জানিয়েছেন, যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালানোর জন্য নিজেরাই নিজেদের পায়ে গুলি করতেন তাঁরা। তাঁর ক্ষেত্রেও এমনই ঘটনা ঘটেছে। বহু চেষ্টার পর পালাতে পেরেছেন তিনি। তিনি বলেছেন, ‘ভেবেছিলাম সাময়িক অভিযান চালাবেন যুদ্ধবাজ পুতিন। তিনি যে পুরোপুরি যুদ্ধে নেমে পড়বেন, আমরা ভাবিনি। পুতিন যে পাগল, তা আমরা বুঝিনি।’তাঁদের মতো আরও বহু রাশিয়ান সেনা পাশের দেশগুলোতে পালিয়ে গেছেন।

You might also like!