নাগরাকাটা, ৪ মার্চ : কলকাতায় অ্যাডিনোভাইরাসের দাপটে শহরের শিশু হাসপাতালগুলিতে আইসিইউ ও জেনারেল বেডের অভাব, পরিস্থিতি ভীষণ উদ্বেগজনক। সর্দি, কাশি, জ্বর, ফুসফুসে সংক্রমণের মতো উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। এই ভাইরাসে মূলত আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরাই। পাশাপাশি ক্ষুদেদের জ্বর, সর্দি-কাশির সমস্যাও এখন প্রায় ঘরে ঘরে। এমন পরিস্থিতিতে গ্রাম-গঞ্জ সহ প্রত্যন্ত এলাকাগুলির দিকে তাকিয়ে শিশুদের টেলিমেডিসিন পরিষেবার ওপর আরও জোর দেওয়ার নির্দেশ রয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের ।
বর্তমানে ‘স্বাস্থ্য ইঙ্গিত’ নামে একটি পোর্টালের মাধ্যমে চালু থাকা পেডিয়াট্রিক টেলিমেডিসিন হাবগুলির পরিকাঠামো আরও শক্তিশালী করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ রয়েছে এমন সমস্ত হাসপাতালেই নয়া পেডিয়াট্রিক টেলিমেডিসিন হাব খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের উত্তরবঙ্গের অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি (জনস্বাস্থ্য) ডাঃ সুশান্ত রায় বলেন, শিশুদের রোগ মোকাবিলায় সমস্ত হাসপাতালই প্রস্তুত আছে। জলপাইগুড়ি মেডিকেল কলেজে ভেন্টিলেটারও এসেছে। টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে শিশু রোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেলার সুযোগ করে দেওয়া একটি বাড়তি উদ্যোগ। এর ফলে প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দারা আরও বেশী করে উপকৃত হবে। জলপাইগুড়ির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ অসীম হালদার বলেন, নির্দেশিকা মোতাবেক জলপাইগুড়ি মেডিকেল কলেজে পেডিয়াট্রিক টেলিমেডিসিন হাব গড়ে তোলা হচ্ছে। তবে এসময়ে শিশুদের জ্বর, সর্দি, কাশি সহ যে সমস্ত সমস্যা দেখা দিচ্ছে তা নিয়ে ভয় বা উদ্বেগের কিছু নেই। স্বাস্থ্য দপ্তর নিবি়ড় নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে বছর দুয়েক আগে সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলির (পূর্বতন উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্র) মাধ্যমে টেলিমেডিসিন পরিষেবা চালু হয়। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে শিশুদের আলাদা করে ওই পরিষেবার আওতাভুক্ত করার জন্য টেলি-পেড্রিয়াটিক হাব তৈরি করা হয়। এজন্য কলকাতার বিধান চন্দ্র রায় শিশু হাসপাতাল সহ অন্যান্য মেডিকেল কলেজের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের ওই হাব থেকে কাজে লাগানো হচ্ছিল। তাঁরা নিজেদের হাসপাতাল থেকেই অন লাইনে রাজ্যের নানা স্থানের সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রে আসা শিশুদের রোগ ভোগের প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান সহ চিকিৎসা করতেন।
এবারে অ্যাডিনো ভাইরাসের সমস্যা সহ শিশুদের শ্বাস যন্ত্রের সংক্রমণ(এআরআই) ক্রমশ ব্যাপক আকার ধারন করতেই টেলিমেডিসিন পরিষেবাকে চিকিৎসার কাজে আরও নিবিড়ভাবে কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। বাড়তি হিসেবে মেডিকেল কলেজ, জেলা, সুপার স্পেশালিটি, মহকুমা, রাজ্য সাধারণ হাসপাতালগুলির মতো সরকারী চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের যেখানে শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ রয়েছেন তাঁদেরকে কাজে লাগিয়ে নতুন হাব তৈরির নির্দেশ দেওয়া হল।