
দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: ঘন ঘন মুড সুইং-এর প্রবনতা দেখা দিচ্ছে? কাজে মনোযোগ রাখতে পারছেন না? ভুলে যাচ্ছেন অনেক কিছু, মনে রাখতে কষ্ট হচ্ছে? এমনকি কোনও কারণ ছাড়াই ক্লান্তি বা অবসাদও ঘিরে ধরছে? যদি এমন উপসর্গ দেখা দেয়, তাহলে এখনই সতর্ক হওয়া জরুরি। কারণ এগুলিই হতে পারে ‘সাইলেন্ট স্ট্রোক’-এর প্রাথমিক লক্ষণ। হ্যাঁ, এই রোগ সহজে ধরা পড়ে না—ব্রেন স্ট্রোকের মতো তীব্র উপসর্গ দেখা যায় না বলেই তা অজান্তেই শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।
সম্প্রতি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় জানা গিয়েছে, ‘সাইলেন্ট স্ট্রোক’ আগেভাগে কোনও ইঙ্গিত দেয় না। এটি ঘটে উপসর্গবিহীনভাবে—মস্তিষ্কের কোনও অংশে রক্তপ্রবাহ সাময়িকভাবে বাধাপ্রাপ্ত হলেও তা সঙ্গে সঙ্গে বোঝা যায় না। ব্রেন স্ট্রোকের মতো কথা জড়িয়ে যাওয়া বা হাত-পা অবশ হওয়ার মতো স্পষ্ট লক্ষণও দেখা যায় না। সাধারণত এমআরআই স্ক্যানেই এই সমস্যাটি ধরা পড়ে। ঘন ঘন সাইলেন্ট স্ট্রোক হলে মস্তিষ্কের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ফলে ভবিষ্যতে ডিমেনশিয়া বা বড় স্ট্রোকের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।
সাইলেন্ট স্ট্রোক কেন হয়?
মস্তিষ্কের ছোট রক্তনালীগুলি ব্লক হয়ে গেলে এটি ঘটে। উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস, ধূমপান এবং বার্ধক্যজনিত কারণে রক্তনালী সরু হয়ে গিয়ে মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ কমে যায়। এই রক্তনালীগুলোতে কোনও কারণে রক্ত জমাট বেঁধে আটকে গেলে মস্তিষ্কের কোষগুলো নিস্তেজ হয়ে পরে। সেগুলি তখন আর কোনও সংকেত বহন করতে পারে না। ফলে বারে বারে ভুলে যাওয়া, বিভ্রান্তি প্রভৃতি সমস্যা তৈরি হয়।
কীভাবে সতর্ক হবেন?
১. নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করান।
২. কম লবণ, কম চর্বিযুক্ত এবং উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার খান। ট্রান্স ফ্যাট এবং অতিরিক্ত চিনি এড়িয়ে চলুন।
৩. প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিটের মাঝারি ধরনের শারীরিক পরিশ্রম করুন।
৪. সম্পূর্ণভাবে ধূমপান ত্যাগ করুন এবং মদ্যপানের অভ্যাস থাকলে তা ছেড়ে দিন।
৫. অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
৬. রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়মিত পরীক্ষা করুন।
৭. নিয়মিত কোলেস্টেরল পরীক্ষা করান।
৮. গলার ক্যারোটিড ধমনীতে চর্বি জমেছে কিনা, তা মাঝে মাঝে পরীক্ষা করান।
৯. চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এমআরআই বা সিটি স্ক্যান করে মস্তিষ্কের অবস্থা নির্ণয় করুন।
