দুরন্ত বার্তা ডিজিটালঃ ঢাকে কাঠি পড়তে আর মাত্র কয়েকদিনের অপেক্ষা, সারা শহর মেতে উঠবে উৎসবের আনন্দ। উৎসবের রঙে নিজেকে রাঙিয়ে নেবার বোধ হয় কোনো বয়স হয় না। কিন্তু বয়সের ভারে ঝুঁকে পড়া কাঁধগুলোর আর দুর্গাদর্শন হয়ে ওঠে না। বৃদ্ধাশ্রেমের আবাশিকদের খেয়াল রাখে আর কে? তবে এবার পুজোয় ছবিটা খানিকটা হলেও বদলাতে চলেছে। মহালয়াতেই বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের দেবীদর্শনের ব্যবস্থা করছে কলকাতার অজেয় সংহতি।
দক্ষিণ কলকাতার হরিদেবপুর এলাকার অতি জনপ্রিয় এই পুজো প্রতিবছরই চমক দেয় তাদের বিষয় ভাবনায়। কিন্তু এবার শুধুই থিমের চাকচিক্য নয়, বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকদের মুখে হাসি ফোটাতে অনন্য উদ্যোগ নিয়েছে এই অজেয় সংহতি পুজো কমিটি। পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা অরিজিৎ নন্দীর কথায়, “কলকাতার পুজোর এখন নতুন ট্রেন্ড প্রিভিউ শো। আমরাও সেই ট্রেন্ডে গা ভাসিয়েছি। তবে একটু অন্য রকমভাবে। আমরা ঠিক করেছি, মহালয়াতে কয়েক ঘণ্টার জন্য বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকদের জন্য খুলে দেওয়া হবে মণ্ডপ। তাঁরা আসবেন, প্রতিমা দর্শন করবেন। নিজেদের মতো করে সময় কাটাবেন।” তবে শুধুই মায়ের দর্শন নয়, মণ্ডপে তাঁদের জন্য থাকবে ফুচকা স্টল-সহ মনোরঞ্জনের নানা ব্যবস্থা। খানিকক্ষণের জন্য হলেও যাতে তাঁরা নিজেদের ছোটবেলায় ফিরে যেতে পারেন, তাই এই ভাবনা। রাতে খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থাও করবে পুজো কমিটিই।
পুজো আসে পুজো যায়, তবে বদল হয় না বৃদ্ধাশ্রেমের এই আবাশিকদের জীবন চর্যায়। একঘেঁয়ে শ্রোতে বয়ে চলা এই মানুষদের কিছু মুহূর্তের জন্য হলেও তাঁদের জীবনকে রঙিন করার এ ভাবনা মিশে গিয়েছে অজেয় সংহতির এবারের থিম ভাবনার সঙ্গেও। গতানুগতিক জীবনের তথাকথিত খাঁচা থেকে বেরিয়ে প্রাণ খুলে বাঁচার বার্তা দেবেন শিল্পী অমর সরকার। আর তার আগে বৃদ্ধাশ্রমের চার দেওয়ালের বন্দি জীবন থেকে সাময়িক মুক্তি দেওয়া হবে আবাসিকদের।
তাঁদের মণ্ডপে আনার জন্য বিশেষ গাড়ির ব্যবস্থাও করা হবে। তাই সেদিন মণ্ডপে সাধারণের প্রবেশ নিষেধ। দেবীপক্ষের সূচনা লগ্নে ‘আপনজন হারা’ প্রবীণদের আশীর্বাদ নিয়েই এবারের পুজো শুরু করতে চায় অজেয় সংহতি।