দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ বাংলার বিভিন্ন দিকে ঘুরে ঘুরে আপনি পেয়ে যেতে পারেন অজানা পুজোর অজানা সব তথ্য। এক একটি বাড়ির পুজোর ভিন্ন ভিন্ন নিয়মের মাঝেই লুকিয়ে রয়েছে ইতিহাস। মায়ের পুজোয় বলি দেওয়ার প্রথাতো বহু বছর ধরেই চলে আসছে। তবে আজ আপনাকে এমন এক পুজোর কথা বলব যেখানে এই বলি দেওয়ার প্রথায় কিছুটা ভিন্ন নিয়ম লক্ষ করা যায়। আসুন আজ আমরা চলে যাই সুদূর বর্ধমানের ঘোষ বাড়ির পারিবারিক পুজোয়।
বর্ধমান শহরের ইদিলপুর, সেখানকার ঘোষ বাড়ির পুজোয় দেওয়া হয় মোষ, ভেড়া আর ছাগল বলি। স্বপ্নাদেশ পেয়েই এই বাড়িতে প্রথম দুর্গা পুজোর সূচনা হয়। দেবীর স্বপ্নাদেশে ই চলে আসছে পুজোর নানান কাজকর্ম। প্রথা অনুসারে এই পরিবারের পুজোয় বলির আগে ভেড়ার সঙ্গে মোষের বিয়ে দেওয়া হয়। আর তারপর মোষ ও ভেড়ার বলি দেওয়া হয়। ঘোষ পরিবারের পুজোয় দামোদর থেকে ঘট আসে। আবার দামোদরেই বিসর্জিত সেই ঘট। রীতি মেনে বাঁকুড়ার ইন্দাসের শাসপুরের কুশমুড়ি গ্রাম থেকে আমন্ত্রন পান ৮জন ঢাকি।
এই পুজো সমন্ধে একটি গল্প কথা প্রচলিত আছে, শোনা যায় এক বছর নাকি দুর্গার প্রিয় ছেলে গণেশের পায়ের তলায় রঙ দেওয়া হয়নি। আজ থেকে প্রায় বছর চল্লিশেক আগে একবার প্রতিমাকে তাঁর বস্ত্র ও সাজসজ্জা করানোর সময় তাঁর ডান হাতের বুড়ো আঙুল ভেঙে যায়। এই ঘোষ পরিবারেরই এক সদশ্য জেনারেল ফিজিসিয়ান ছিলেন, যার নাম ছিল শ্যামচাঁদ ঘোষ। তিনি দেবীর আঙুলে ব্যান্ডেজ করে দিয়েছিলেন। এবং মহামায়া তাঁকে স্বপ্ন দেন। একবার ডাকাত এসেছিল এই বাড়িতে তবে কিছুই করতে পারেননি তারা। বাড়ির প্রতিটি দ্বারে দ্বারে দেবীকে দেখতে পেয়ে পালিয়ে গিয়েছিল ডাকাতদল।
ঘোষ পরিবারের আরও এক সদশ্য জানিয়েছেন, চারবছর আগে একবার তাঁর শ্বশুরবাড়ির পুজোয় চণ্ডীপাঠের সময় এক গৃহবধূ তাঁর কাছে এসে বলেন, তিনি ঘোষ পরিবারের দেবী দুর্গা। কিন্তু অনুপমবাবু তাঁকে নাকে নথ আর পায়ে নুপুর না পড়িয়েই চলে এসেছেন। অনুপমবাবু জানিয়েছেন, এরপরই তাঁর মনে পড়ে সত্যিই তিনি দেবীকে নথ আর নুপুর না পড়িয়েই চলে এসেছিলেন শ্বশুরবাড়ি। এমনকি দেবী নাকি সেই সময় তাঁকে বলেছিলেন, কেন তাঁকে মেটে শাড়ি পড়িয়েই রাখা হয়, ঘোষ পরিবারের বউদেরও কি এই শাড়ি পড়িয়ে রাখা হয়? অনুপমবাবু জানিয়েছেন, এরপরই তিনি বেনারসী শাড়ি কিনে দেবীকে পড়িয়ে দিয়েছিলেন।