দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ বাংলার পুজোতে সাবেকিয়ানার পাশে আজকের সময়ে নিজের এক আলাদাই স্থান করে নিয়েছে থিমের পুজো। যেখানে সাবেকিয়ানার সাথে তালে তাল মিলিয়ে চারু ও কারু শিল্প মিলে তৈরী করেছে এক দারুন সিম্ফনি। উত্তর কলকাতার জগৎ মুখার্জ্জী পার্ক পুজো কমিটি এবার সেইসব শিল্পীদের নেপথ্য অনুপ্রেরণাকে সামাজিক এবং আন্তরিক স্বীকৃতি দিল। তাদের এবারের থিম ‘ফুলদি’।
কে এই 'ফুলদি'? ফুলদি হলেন ফুলকুমারী দাশ ওরফে সোমা দাশ। এই ফুলদিরা আছেন বলেই আজ ও শিল্প বেঁচে আছে। যাদের সাহায্যে গড়ে ওঠে নতুন শিল্পসত্তা। যাঁদের জগতজোড়া নামে গর্বিত হয় দেশ-কাল-সমাজ।বোধ হয় ব্যপারটা এখনো খানিক ধোঁয়াশায় রইল! আসলে ফুলদি হলেন আর্ট কলেজের মডেল। যাঁকে ও যাঁদের স্টাডি করেই রং, লাইন, আলো-ছায়া গভীরতা শেখেন তরুণ শিল্পীরা। যদিও এই পেশার মানুষের মনে বার বার প্রশ্ন জেগেছে, শৈল্পিক প্রয়োজনে শরীর অনাবৃত করায় ঠিক কোথায় দোষ রয়েছে? কেন সমাজ মেনে নিতে পারে না? ন্যুড স্টাডির নিন্দা কেন?জগৎ মুখার্জ্জী পার্ক এবার তাদের থিম ভাবনায় সমাজের এই প্রান্তিক মানুষেরই গল্প শোনাবে। যাঁর নেতৃত্বে রয়েছেন শিল্পী পরিমল পাল।
শুধু ফ্রেমবন্দি ক্যানভাস বা ভাস্কর্য নন, এবার এই 'ফুলদি' রা দীর্ঘদিনের অবহেলা কাটিয়ে গোটা আকাশটাকে উপভোগ করতে চলেছেন। দশভুজার আরাধোনায় সরাসরি সম্মান জানানো হচ্ছে পেশাদার মডেল ফুলদি ওরফে সোমা দাশকে।শিল্পের অনুপ্রেরণা যেহেতু মডেল, তাই রং-বেরংয়ের ক্যানভাসে সেজে উঠছে মণ্ডপ। প্রবেশদ্বারে থাকছে একটি রঙের ধারা। এছাড়াও থাকছে ইলুইশন পেন্টিং। দেখানো হয়েছে সেই ষোলো বছর বয়স থেকে ফুলদির জার্নি- গ্রাম থেকে শহর। মণ্ডপের সামনেও থাকছে ফুলদির পোর্ট্রেট। থাকছে একটি ভাস্কর্য। এছাড়াও রঙ, তুলি, পোর্ট্রেট দিয়েই সাজানো হচ্ছে মণ্ডপ।
রাজা রবি বর্মা, হেমেন মজুমদার, অমৃত শেরগিলদের মতো বিখ্যাত শিল্পীদের পোর্ট্রেটের রেপ্লিকায় বিষণ্ণ-রঙিন হবে জগৎ মুখার্জ্জী পার্কের মাতৃ মন্ডপ। উল্লেখ্য, কলকাতার অন্যতম সেরা পুজোর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন যাঁকে নিয়ে থিম, সেই ফুলদি।