Festival and celebrations

11 months ago

Durga Puja 2023 : সন্ধেবেলায় জ্বলে না আলো, মা-এর পুজো করেন শবররাই, ৭৫০ বছর পুরনো দুর্গাপুজো ঝাড়গ্রামে

Durga Puja 2023
Durga Puja 2023

 

দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ বর্তমান যুগে বাঙালির দুর্গাপুজো (Durga Puja 2023) মানেই থিমের চাকচিক্য । তবে, বাঙালির দুর্গাপুজো মানেই যে শুধু থিম তা নয়, তার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ইতিহাস, গল্পকথা । আজ ঝাড়গ্রামের এমন আরও একটি দুর্গাপুজোর কথা বলব, যা প্রায় সাড়ে সাতশো বছরের পুরনো । যে পুজোর পিছনে রয়েছে ইতিহাস, যে পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এক অজানা গল্প ।

ঝাড়গ্রাম থেকে ২৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত রাজবাঁধের গুপ্তমণি । এখানেই রয়েছে মা গুপ্তমণির মন্দির । কথিত আছে, দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে গড়ে উঠেছিল এই মন্দির। একসময় ঝাড়গ্রাম-সহ বেশ কিছু এলাকা ছিল রূপনারায়ণ মল্লদেবের বংশের অধীনে। তৎকালীন রাজা নিজের রাজ্যকে রক্ষার জন্য রাজপ্রাসাদ থেকে বেশ কিছু গুপ্ত রাস্তা বানিয়ে ছিলেন । একদিন সেই গুপ্ত রাস্তা দিয়ে তাঁর হাতি নিরুদ্দেশ হয় । হঠাৎ রাজামশাইকে মা স্বপ্ন দেন, যে তাঁর গুপ্ত রাস্তার পাশেই তাঁর অধিষ্ঠান । সুগনি বাসার বাসিন্দা শবর পরিবারের নন্দ ভক্তা তাঁকে সেখানে দীর্ঘদিন সেবা করে আসছেন । রাজার আদরের হাতি রয়েছে তাঁর কাছে। তিনি যেন নন্দলাল ভুক্তার কাছে যান । এরপর মায়ের স্বপ্নাদেশ মতো রাজামশাই সেখানে গিয়ে হাতি ফিরে পান । তারপর সেখানে মায়ের মন্দির গড়তে বলেন তিনি । তিনিই মন্দিরের নাম দেন 'গুপ্তমণি'। মা এখানে গুপ্তভাবে ছিলেন তাই মায়ের নাম গুপ্তমণি ।

এখানকার পুজোর একটা অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল, কোনও পুরোহিত পুজো করেন না । মায়ের পুজো করেন শবররাই । এখানে মা আসলে একটি পাথরে বিরাজমান। মায়ের আলাদা করে মূর্তি গড়ে পুজো হয় না। চণ্ডীপাঠ হয় না । তৎকালীন শবর পরিবারের নন্দ ভক্তা যেভাবে পুজো করতেন ঠিক একই রকমভাবে এখনও শবররা পুজো করে আসছেন। দুর্গাপূজোর সময় এখানে ঘট বসিয়ে পূজা হয় এবং যে মূর্তি এখানে আবির্ভাব হয়েছিল সেই মূর্তিকে পুজো করেন শবররা । সন্ধ্যার সময় কোনও আলো জ্বলে না এখানে , অন্ধকারেই নিমজ্জিত থাকে মন্দির । মন্দিরে জ্বলে শুধুই মোমবাতি আর প্রদীপ । স্থানীয়দের দাবি , মন্দিরের ভিতর বহুবার বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হলেও,তা টেকেনি । এখানে বলি প্রথাও রয়েছে ।

কথিত আছে, কারও কোনও কিছু হারিয়ে গেলে, হাতি ঘোড়ার মাটির মূর্তিতে সুতো বেঁধে দিয়ে মানসিক করলে তা পরে ফিরে পাওয়া যায় । তিনি তুষ্ট থাকলে যে কোনও ধরনের দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায় বলে প্রচলিত বিশ্বাস । তাই এখানকার দুর্গাপুজো দেখতে বহু দূর থেকে ভক্তরা ছুটে আসেন । জাঁকজমকভাবে দুর্গাপুজো পালন করা হয় এখানে ।

You might also like!