দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ পুজো শুরু হতে আর বেশী দেরি নেই। চারিদিকে সাজো সাজো রব। পুজোতে খানা পিনা থেকে সাজ পোশাক সব কিছু নিয়ে তোড়জোড়ের শেষ নেই। তবে শুধু খাওয়া দাওয়া আর সাজ পোশাক নিয়ে প্ল্যান করলে তো চলবে না সাথে প্ল্যান করতে হবে প্যান্ডেল হপিং নিয়েও। এই প্ল্যানিং এ এক্সট্রা স্পাইস দিতে এক দারুন খবর দিতে পারি আপনাদের সকলকে, সেই খবরটি হল প্রায় এক দশক পর, দুর্গা পুজো উপলক্ষে কলকাতায় রাস্তায় নামতে চলেছে ট্রাম। এ বছর প্যান্ডেল হপিং করতে পারবেন ট্রামে চেপে। উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতা জুড়ে ট্রাম চলবে। পুজো পরিক্রমা সংক্রান্ত সাংবাদিক বৈঠকে এ কথা নিজে জানিয়েছেন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী।
উল্লেখ্য, চলতি বছরে কলকাতার ট্রাম পা রেখেছে ১৫০ বছরে। সেই সময়কার ‘জলের গাড়ি’ ছিল এশিয়ার প্রথম ট্রাম। কলকাতা শহরেই এশিয়ার প্রথম ট্রাম পরিষেবা শুরু হয়। কালের নিয়মে বিবর্তন এসেছে শহরের ট্রাম পরিষেবায়। ট্রামের চেহারা বদল থেকে শুরু করে ট্রাম ও রুটের সংখ্যা কমে গিয়েছে। ঘোড়ায় টানা ট্রাম থেকে বিদ্যুৎচালিত ট্রামের এখন উত্তরন ঘটেছে এসি ট্রামে। যদিও বর্তমানে হাতেগোনা কয়েকটি রুটে নির্দিষ্ট সময়ে ট্রাম চলে। সেই ‘শ্লথ গতির যান’কে পুজো পরিক্রমার অংশ করা হচ্ছে এ বছর।
দুর্গা পুজোয় সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী কলকাতার রাস্তায় চলবে ট্রাম পরিষেবা। সকাল ১০টা থেকে আপনি এসি ট্রামে চেপে ঘুরে দেখতে পারবেন উত্তর থেকে দক্ষিণের পুজো। যদিও নির্দিষ্ট কিছু রুটেই চলবে এসি ট্রাম। পুজোর ক’দিন এসপ্ল্যানেড-শ্যামবাজার এবং এসপ্ল্যানেড-গড়িয়াহাট-এসপ্ল্যানেড রুটে চলবে ট্রাম। কাশি বোস লেন, নলিনী সরকার স্ট্রিট, হাতিবাগান, সিংহী পার্ক এবং একডালিয়ার মতো জায়গার পুজো ঘুরে দেখতে পারবেন ট্রামে চেপে। কলকাতার রাস্তায় প্যান্ডেল হপিংয়ের পাশাপাশি যাত্রীদের জন্য ট্রামে চা-কফি, স্ন্যাকস ও দুপুরের খাবারের আয়োজনও থাকবে। আর এর জন্য আপনাকে খরচ করতে হবে মাথাপিছু ৬০০ টাকা।
শহরের বেশ কয়েকটি বড় পুজো ঘুরে দেখার পাশাপাশি ট্রামের সাহায্যে ঘুরে দেখতে পারেন বেলুড় মঠ, শোভাবাজার রাজ বাড়ির পুজো, বেহালার রায় বাড়ি পুজোও। সঙ্গে রয়েছে জমিয়ে খাওয়া-দাওয়া। যদিও পুজো পরিক্রমার এই প্যাকেজটির জন্য মাথাপিছু খরচ ১৯০০ টাকা। টিকিটের জন্য আপনাকে www.wbtconline.in ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইনে আবেদন করতে হবে।
পুজোর মরশুম, তাই ‘শ্লথ গতির যান’কেও সাজানো হবে উৎসবের রঙে। যাতে যাত্রীরা ট্রামে চেপে প্যান্ডেল হপিংয়ে পুজোর আমেজ মিস না করে। ট্রামের ভিতর বাজবে ঢাক ও।তাছাড়া, শ্যামবাজার হোক বা গড়িয়াহাট, শহরের মণ্ডপ ঘুরে দেখানোর জন্য ট্রামে উপস্থিত থাকবেন গাইডও।
যানজট নিয়ন্ত্রণের জন্য বিগত ১০ বছর পুজোর সময় ট্রাম চলাচল বন্ধ রাখা হত।তবে এবছর তার ব্যতিক্রম ঘটতে চলেছে, যা নিসন্দেহে বাংলার মানুষের কাছে পুজোর বোনাস হতে চলেছে ।