Festival and celebrations

11 months ago

Durga Puja 2023 : শ্রীরামপুর রাজবাড়ির পুজোয় এক সময় আসর জমাতেন খোদ সাহেব কবিয়াল অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি

Durga Puja (Symbolic Picture)
Durga Puja (Symbolic Picture)

 

দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ পুরানো বাংলাকে জানতে হলে জানতে হবে বাংলার ইতিহাসকে। বাংলার ইতিহাসেই লুকিয়ে রয়েছে বাংলা  ও বাঙালির পুরাতন ঐতিহ্য ও কত জানা অজানা তথ্য। বাংলা ও বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো, এই আনন্দানুষ্ঠান নিয়ে কতই না গল্প ও কল্প কথা শোনা যায়। সেই সব গল্পের মধ্যেও ধরা পড়ে পুরানো বাংলার প্রতিচ্ছবি। 

বাংলার ইতিহাসে হুগলির শ্রীরামপুর রাজবাড়ির একটা আলাদাই স্থান রয়েছে, সত্যজিৎ রায় এক দিন ঘুরতে ঘুরতে সেখানে হাজির হন  'ঘরে বাইরে' ছবির শ্যুটিং সাইট দেখতে। খবর ছড়াতেই উপচে পড়ল ভিড়। বেগতিক দেখে শ্যুটিংয়ের পরিকল্পনার সেখানেই ইতি! এ বাড়িতে বিভিন্ন সময়ে এসেছেন রুপোলি জগতের বহু তারকা।

শুধু তাই নয়, এ বাড়িতে অতিথি হয়ে এসেছেন বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বই। শোনা যায়, ত্রিবেণী সম্মেলন উপলক্ষে এসেছিলেন মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধী। এসেছেন ডাক্তার বিধান রায়। যোগসূত্র এ বাড়িরই বলাইচন্দ্র গোস্বামী, যিনি ছিলেন শ্রীরামপুর পুরসভার চেয়ারম্যান। এই বাড়ির আর এক সদস্য তুলসীচন্দ্র গোস্বামী ছিলেন চিত্তরঞ্জন দাশের কাছের মানুষ।উল্লেখ্য, বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র বসুর সঙ্গেও ছিল তুলসীচন্দ্রের বিশেষ হৃদ্যতা। সেই সূত্রে সুভাষও এসেছেন এ বাড়িতে।

এ বাড়ির অতীত ঐতিহ্য জুড়ে রয়েছেন বহু দিকপাল ব্যক্তিত্ব। যার মধ্যে রামজয় গোস্বামী অন্যতম। জোড়াসাঁকোর দ্বারকানাথ ঠাকুরের সঙ্গে তিনি যৌথ ভাবে ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক স্থাপন করেন।এ বাড়ির আর এক সফল ব্যবসায়ী রঘুরাম গোস্বামীর লোকমুখে নাম হয় 'প্রিন্স অফ মার্চেন্ট'। শোনা যায়, যখন ডাচরা শ্রীরামপুর ছেড়ে চলে গেলেন, তখন এই রঘুরাম পুরো শ্রীরামপুর কিনে নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ইংরেজদের বাধাদানের কারণে তিনি তা পারেননি।

উল্লেখ্য, চৈতন্য পার্ষদ অদ্বৈত আচার্যের পুত্র অচ্যুতানন্দের কন্যার বংশধরের সাথে বিয়ে হয় পাটুলির পণ্ডিত লক্ষ্মণ ভট্টাচার্যের। যিনি নবাব আলিবর্দির কাছ থেকে চক্রবর্তী উপাধি পান। তাঁর পুত্র রামগোবিন্দ টোলে অধ্যাপনা করতেন। এই রামগোবিন্দ গোস্বামী শ্রীরামপুর গোস্বামী পরিবারের আদিপুরুষ। 

জনশ্রুতি আছে,নবাব আলিবর্দি খাঁয়ের শাসনকালে রামগোবিন্দ স্ত্রী মনোরমাকে নিয়ে জলপথে পাটুলি থেকে গঙ্গাসাগরের উদ্দেশে যাত্রা করেছিলেন। কলকাতার কাছাকাছি মনোরমার হঠাৎ প্রসবযন্ত্রণা ওঠে। রামগোবিন্দকে তাই শ্রীরামপুরে থামতে হয়। শেওড়াফুলির রাজা মনোহর রায় তা জানতে পেরে তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করেন। সেই সূত্রে জমিদারি পান রামগোবিন্দ। তাঁর নাতি হরিনারায়ণ গোস্বামীর আমলে দুর্গাপুজোর সূচনা। পরে মূল বসতবাড়ির অনুকরণে প্রাসাদ সংলগ্ন ঠাকুরদালানে জাঁকজমক করে পুজো শুরু করেন রঘুরাম। যে পুজো এ বছর ৩৪০-এ পড়ল।এ বাড়ির দুর্গাপুজোয় আসর জমিয়ে গিয়েছেন অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি, ভোলা ময়রা থেকে রূপচাঁদ পক্ষী।পুজোর দিনের সেই মজলিস আর বসে না , নিভেছে ঝাড়বাতির আলোও কিন্তু পজো নিয়ে সেই উন্মাদনা হইহুল্লোড় হয় আজও তবে এখন তা কেবলই লোকজনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।


You might also like!