দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ ৫৬ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অন্যতম জনপ্রিয় শিল্পী উস্তাদ রাশিদ খান। গত কয়েক বছর ধরে শিল্পী প্রস্টেট ক্যানসারে ভুগছিলেন। চিকিৎসায় সাড়াও দিচ্ছিলেন। এর মধ্যে সম্প্রতি তাঁর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ (স্ট্রোক) হয়। সেখান থেকেই অবস্থার অবনতি শুরু। শিল্পীকে দক্ষিণ কলকাতার একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। সেখানেই মঙ্গলবার বিকেল ৩টে ৪৫ মিনিটে প্রয়াত হলেন তিনি। রেখে গেলেন স্ত্রী, দুই কন্যা এবং এক পুত্রকে।
মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতালে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে শিল্পীর খোঁজ নিয়ে বেরিয়ে আসেন হাসপাতালের বাইরে। সেখানে দাঁড়িয়েই সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘চিকিৎসকদের যদি কিছু বলার থাকে বলুন, তার পর আমি বলব। ওঁর ছেলে রয়েছেন এখানে। ও ভাল গান করে।’’ এর পরেই চিকিৎসক বলেন, ‘‘এত দিন হাসপাতালে থাকার ফলে সংক্রমণ হয়েছিল। ওঁকে ভেন্টিলেশনে পাঠাতে হয়। ওঁকে ‘রিভাইভ’ করতে পারিনি। ৩টে ৪৫ মিনিটে তিনি মারা যান।’’ এর পরেই মমতা বলেন, ‘‘রশিদ আমার ভাইয়ের মতো, গঙ্গাসাগর থেকে জয়নগরে গিয়ে ফোন এসেছিল। নবান্নে ফিরে খবর আসে, কিছু একটা হয়েছে। রাশিদ আলি খান বিশ্ববিখ্যাত নাম। ওঁর পরিচয় দিতে হবে না। বাংলাকে ভালবেসে বাংলায় থেকে গিয়েছেন। বিশ্বের সব প্রান্তে গিয়ে প্রচার করেছেন।’’
১৯৬৮ সালের ১ জুলাই উত্তরপ্রদেশের বদায়ূঁতে জন্ম রাশিদের। তিনি রামপুর-সাসওয়ান ঘরানার শিল্পী। যে ঘরানার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ইনায়েত হুসেন খাঁ-সাহিব। রাশিদ তালিম নিয়েছেন এই ঘরানারই আর এক দিকপাল উস্তাদ নিসার হুসেন খাঁ-সাহিবের কাছ থেকে। যিনি ছিলেন রাশিদের দাদু। রাশিদের মামা গোয়ালিয়র ঘরানার উস্তাদ গুলাম মুস্তাফা খাঁ-সাহিবের থেকেও তালিম নিয়েছেন রাশিদ। মূলত শাস্ত্রীয় সঙ্গীত গাইলেও ফিউশন বা বলিউড এবং টলিউডের ছবিতে বহু জনপ্রিয় গানও গেয়েছেন শিল্পী।
নিজের সঙ্গীত প্রতিভার জন্য সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি পুরস্কার, পদ্মশ্রী, পদ্মভূষণ সম্মান যেমন পেয়েছেন, তেমন বাংলা থেকেও পেয়েছেন বঙ্গবিভূষণ সম্মান।