উত্তর ২৪ পরগনা, ৯ নভেম্বর : এবছর শীত পড়ে যাওয়ায় গাছে জবা ফুল কম ফুটেছে। আর সেখানেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে ফুল চাষিরা। পুজোয় জবা ফুলের কুঁড়ির দাম আকাশ ছোঁয়ার আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
রাজ্যের মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম ফুল বাজার উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগরের বাজার। এই জেলার গাইঘাটা ব্লকে প্রায় ৩৫০ হেক্টর জমিতে ফুলচাষ করা হয়। এর মধ্যে প্রায় ১০০ হেক্টর জমিতে জবা ফুলের চাষ হয়। কলকাতা-সহ রাজ্যের ভিন্ন জায়গায় এই বাজার থেকে প্রচুর ফুল যায়। রাজ্যের বাইরেও এই বাজার থেকে ফুল যায়।
বুধবার সেই ঠাকুরনগর বাজারে ইতিমধ্যেই জবার দাম বাড়তে শুরু করেছে। ব্যবসায়ী ও চাষিরা জানিয়েছেন, এক সপ্তাহ আগে জবা প্রতি হাজার ৩০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এখন সেই জবার দাম ৩০০-৪০০ টাকা ৷ মানে দাম কমেবশি পাঁচগুন বেড়েছে ।
তাঁরা বলছেন, এই বছর কালীপুজোর আগে শীত পড়তে শুরু করেছে। ফলে জবা ফুলের আকার যেমন ছোট হয়েছে তেমনি ফলনও কমে গিয়েছে। যত বেশি শীত পড়বে তত বেশি জবা ফুলের ফলন কমে যাবে। কালীপুজোর দিনে জবার চাহিদা বাড়ে।
স্বাভাবিকভাবে বাজারে চাহিদার তুলনায় ফুলের জোগান কম হলে দাম বাড়বেই। তাঁরা অনুমান করছেন, গত বছরের তুলনায় এই বছর জবা ফুল-সহ অন্য ফুলের দাম অনেকটা বাড়বে। গত বছর প্রতি হাজার জবার কুঁড়ি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা বিক্রি হয়েছে। এবছর তা এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা দরে বিক্রি হবে।
ঠাকুরনগর বাজার থেকে ফুল কিনে সেই ফুলের মালা কলকাতা বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করেন অনেক ব্যবসায়ী। তাঁদের একটা অংশ জানিয়েছেন, পুজোর দিনে হঠাৎ করে ফুলের দাম অত্যধিক বেড়ে গেলে মালার দাম বাড়াতে হবে। ফলে মালা বিক্রি করতে গিয়ে সমস্যায় পড়বেন তাঁরা। মুখ ফিরিয়ে চলে যাবেন অনেক ক্রেতারাই। এমনই সমস্ত আশঙ্কা নিয়ে আলোর উৎসবকে স্বাগত জানাবে ঠাকুরনগর।
'আমার মায়ের পায়ের জবা হয়ে ওঠ না ফুটে মন।' কালীপুজোর দিনে মাইকে বাজতে থাকে এই গান। কিন্তু কালী ভক্তদের মন এবার কতটা জবা হয়ে ফুটবে, তা নিয়ে রীতিমত প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।