কলকাতা, ২৮ আগস্ট : ২৯ আগস্ট হকির জাদুকর ধ্যানচাঁদের জন্মদিন। এই বিশেষ দিনটি ভারতে জাতীয় ক্রীড়া দিবস হিসেবে পালন করা হয়। তবে হকি নয়, কুস্তিতেই ছোটবেলা থেকে আগ্রহ ছিল ধ্যানচাঁদের। যদিও পরে কুস্তি ছেড়ে হকিতে মনোনিবেশ করেন তিনি। তারপর হকি খেলে তিনি বিশ্বের দরবারে ভারতকে অনেক সম্মান এনে দিয়েছেন। ইংরেজদের অধীনস্ত ভারতীয় হকি দলের হয়ে ১৯২৮, ১৯৩২ ও ১৯৩৬ অলিম্পিক খেলে প্রতিবারই তিনি দেশকে সোনা এনে দিয়েছিলেন। ১৯২৬ সাল থেকে ১৯৪৯ পর্যন্ত ধ্যানচাঁদ তাঁর পুরো কেরিয়ারে ৪০০-র উপরে গোল করেছেন। ১৯৫৬ সালে তিনি ভারত সরকারের পক্ষ থেকে পদ্মভূষণ সম্মানে ভূষিত হন। ১৯২৮ সালের আমস্টারডাম অলিম্পিক্সে সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিলেন ধ্যানচাঁদ। সেবারই হকির জাদুকর হিসেবে নামকরণ হয় ধ্যানচাঁদের।
ভারতীয় হকিতে অসামান্য অবদানের জন্য ধ্যানচাঁদের জন্মদিনটিকেই ভারত সরকার ২০১২ সাল থেকে জাতীয় ক্রীড়া দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। ১৯৩২ সালের লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকের একটি ম্যাচে আমেরিকাকে ২৪-১ গোলে হারিয়েছিল ভারত। সেই রেকর্ড ২০০৩ সাল পর্যন্ত অক্ষত ছিল। ম্যাচে ৮ গোল করেছিলেন ধ্যানচাঁদ। তাঁর ভাই রূপ সিংহ করেছিলেন ১০ গোল। ওই টুর্নামেন্টে ৩৫ গোল করেছিল ভারত। তার মধ্যে ধ্যানচাঁদ ও তাঁর ভাই মিলে করেছিলেন ২৫ গোল। জীবনের শেষ ম্যাচ ধ্যানচাঁদ খেলেন বাংলার বিরুদ্ধে। ১৯৫৬ সালে ৫১ বছর বয়সে অবসর নেন ধ্যানচাঁদ।
শোনা যায়, হিটলার ধ্যানচাঁদের খেলা দেখে এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে তাঁকে জার্মান নাগরিকত্ব দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তা নিতে অস্বীকার করেন ধ্যানচাঁদ। ভারতের কিংবদন্তি এই হকি জাদুকরের নামে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় একটি মূর্তি গড়া হয়েছে। এত কীর্তির অধিকারী হকির জাদুকর জীবনের শেষ সময়টা ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ১৯৭৯ সালের ৩ ডিসেম্বর নয়াদিল্লির এইমসে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।