Festival and celebrations

6 months ago

Jamai Sasthi 2024: দেবী ষষ্ঠীর ব্রত কিভাবে পরিণত হল জামাই ষষ্ঠীতে? জানুন

Jamai Sasthi  (Symbolic Picture)
Jamai Sasthi (Symbolic Picture)

 

দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ মেয়ের সুখী দাম্পত্য জীবন ও জামাইয়ের মঙ্গলকামনায় শাশুড়িরা জামাইষষ্ঠী ব্রত পালন করে থাকেন।

এই ব্রত পালন আসলে কি?

১. জামাই ষষ্ঠী আসলে সন্তানের দেবী মা ষষ্ঠীর পুজো। এটি আবার অরণ্যষষ্ঠী হিসেবেও পালিত হয়।

২. মা ষষ্ঠী শুধু গ্রাম দেবী নন। বরং মঙ্গলকাব্যের অপর দুই দেবী শীতলা ও মনসার মতোই তিনি নানান অঞ্চলে পূজিত।

৩. বায়ু পুরাণ অনুযায়ী ষষ্ঠী ৪৯টি দেবীর অন্যতম। অপর একটি পুরাণে তাঁকে ‘সমস্ত মাতৃদেবীর মধ্যে আরাধ্যতমা’ বলে বর্ননা করা হয়েছে।

৪. যাজ্ঞবল্ক্যস্মৃতিতে মা ষষ্ঠী স্কন্দদেবের পালিকা মা ও রক্ষয়িত্রী। আবার পদ্মপুরাণে তিনি স্কন্দের স্ত্রী।

৫. মঙ্গলকাব্যে মা ষষ্ঠীর কাহিনির উল্লেখ পাওয়া যায়। ষষ্ঠী মঙ্গলে সর্পদেবীর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের উল্লেখ পাওয়া যায়।

৬. বাংলার পাশাপাশি অন্য রাজ্যেও ষষ্ঠী পুজোর সঙ্গে সন্তানের মঙ্গলরে সম্পর্ক রয়েছে। উত্তর ভারতে বিশেষত বিহার, উত্তর প্রদেশে সন্তান জন্মের ৬ দিন পর একটি অনুষ্ঠান হয়। এতে ছট্টি বা ছঠি বলা হয়। ষষ্ঠী সেখানে ছঠি মাতা। আবার ছট পুজোর সঙ্গে সন্তানের মঙ্গলকামনার যোগ রয়েছে। ওডিশায় সন্তান জন্মের ৬ দিন বা ২১ দিন পর ষষ্ঠী দেবী পূজিত হন।

৭. বাংলাদেশে ষষ্ঠী দেবীর মূর্তি পুজো হয়। মার্জারবাহিনী ষষ্ঠীর কোলে এক বা একাধিক শিশু থাকে। দুধ পুকুরের সামনে বট গাছের নীচে তাঁর অবস্থান।

৮. অন্য ধারণা অনুযায়ী ষষ্ঠী আবার অমঙ্গলের দেবী। তিনি ক্ষুব্ধ হলে মা ও সন্তানকে কষ্ট ভোগ করতে হয়। কাশ্যপ সংহিতা মতে ষষ্ঠী জাতহরণি। তিনি মাতৃগর্ভ থেকে ভ্রুণ অপহরণ করেন। সন্তান জন্মের ৬ দিনের মধ্যে তাঁকে ভক্ষণ করেন। তাই শিশু জন্মানোর পর ষষ্ঠ দিনে তাঁকে পুজো করা হয়।

৯. তবে সন্তানের মঙ্গল কামনার এই উৎসবটি কী ভাবে জামাই ষষ্ঠীতে পরিণত হল? মনে করা হয়, ১৮-১৯ শতকে বাল্যবিবাহ ও বহুবিবাহের কারণে অল্প বয়সেই বাল বিধবা হয়েছেন অনেক ঘরের মেয়েরা। তাই নিজের মেয়ের সুখী দাম্পত্য জীবন কামনা করে বাঙানি মায়েরা জামাইয়ের মঙ্গলকামনা করে ব্রত পালন করতে শুরু করেন। তার পর থেকেই অরণ্যষষ্ঠী বা মা ষষ্ঠীর পুজো জামাই ষষ্ঠী হিসেবে পালিত হতে শুরু করে।

১০. জামাই ষষ্ঠী প্রসঙ্গে একটি কাহিনিও প্রচলিত আছে-- কথিত রয়েছে, এক গৃহবধূ স্বামী গৃহে নিজে মাছ চুরি করে খেয়ে বার বার দোষ দিতেন এক কালো বেড়ালের ওপর। এর প্রতিশোধ নিতে ছোট বউয়ের বাচ্চা হলেই ওই কালো বেড়ালটি তাঁর সন্তান তুলে মা ষষ্ঠীর কাছে লুকিয়ে দিয়ে আসে। গৃহবধূ তা জানতে পেরে ষষ্ঠী দেবীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। দুই শর্তে তাঁকে ক্ষমা দান করেন ষষ্ঠী দেবী। শুক্ল ষষ্ঠীর দিনে তাঁর পুজো করার আদেশ দিন তিনি। পাশাপাশি বেড়ালকে তাঁর বাহন হিসেবে সম্মান জানানোর কথা বলেন। ষষ্ঠীদেবীর আরাধনা শুরু করেন ওই গৃহবধূ৷ দেবী তুষ্ট হলে বনেই সে নিজের সন্তানকে ফিরে পায়। এই জন্যই ষষ্ঠীদেবীর অপর নাম অরণ্যষষ্ঠী।

অন্য দিকে মাছ চুরি করে খাওয়ার জন্য শ্বশুর-শাশুড়ি ওই গৃহবধূর পিতৃগৃহে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। তখন মেয়েকে দেখার জন্য ব্যাকুল মা-বাবা ষষ্ঠীপুজোর দিনে জামাইকে নিমন্ত্রণ জানান। ষষ্ঠী পুজোর দিনে স্বামীর সঙ্গে নিজের বাপের বাড়ি যান ওই মেয়েটি। তার পর থেকেই ষষ্ঠীপুজো পরিণত হয় জামাইষষ্ঠীতে।



You might also like!