West Bengal

1 year ago

Narendrapur Ramakrishna Mission : ঘরের ছেলে ফিরল ঘরে! রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্র নিজেই ফিরল তাঁর বাড়িতে

Narendrapur Ramakrishna Mission (File Picture)
Narendrapur Ramakrishna Mission (File Picture)

 

দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ বাড়ি ফিরে এল নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র মুক্তেশ্বর মাহাত। বৃহস্পতিবার সন্ধায় সে নিজে থেকেই সন্ধ্যায় মেদিনীপুরের গুড়গুড়িপাল থানার মুড়াডাঙার বাড়িতে ফিরে আসে। তাঁর বাবা ললিত মাহাত যখন তন্ন তন্ন হয়ে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ছেলের খোঁজে এক স্টেশন থেকে অন্য স্টেশনে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, ঠিক তখনই প্রত্যাবর্তন ঘটে ঘরের ছেলের। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যেয় বাবার কাছে সুসংবাদ যায়, বাড়ি ফিরেছে ছেলে। খবর শুনে সঙ্গে থাকা দুই পুলিশকর্মীকে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন তিনি।

কিন্তু ঠিক কি কারণে এই পথ নির্বাচনে তৎপর হয়েছিল মুক্তেশ্বর? আদতে জানা যাচ্ছে, হস্টেলে বন্ধুদের টিটকিরি সহ্য করতে না পেরে রাগের মাথায় রবিবার রাতের অন্ধকারে হস্টেল ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ছাত্রটি। দড়ি বেঁধে প্রাচীর টপকে ‘বাই বাই নরেন্দ্রপুর’ বলে বেরিয়ে পড়ে সে। ক্যাম্পাস ছাড়ার আগে প্রার্থনা করার ঘরে গিয়ে স্বামীজিকে প্রণাম করে। হল মাস্টার ও মহারাজের ঘরের দিকে তাকিয়ে প্রণাম করে হস্টেল থেকে বেরিয়ে যায়। কিছুটা হেঁটে একটি জায়গায় রাত কাটিয়ে ভোরে বাস ধরে হাওড়া স্টেশনে পৌঁছয়।

মেদিনীপুর লোকালে উঠে এক বৃদ্ধের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। একবার পাঁশকুড়া স্টেশনে নেমে ফের লোকাল ট্রেনে খড়গপুর স্টেশনে চলে আসে। খড়্গপুর থেকে আবার মেদিনীপুর স্টেশন। সেখানে ওয়েটিং রুমে রাতে ঘুমিয়ে পড়ে। হস্টেল থেকে পালানোর সময়ে তার কাছে পাঁচশো টাকা ছিল। তা দিয়ে কখনও বিস্কুট, কখনও বা ফুটপাথের খাবার কিনে খেয়েছে।

রাতে মেদিনীপুর স্টেশনে কাটিয়ে পরদিন মঙ্গলবার সকালে ফের হাওড়া চলে যায়। আবার ফেরে আসে মেদিনীপুরে। বুধবারও মেদিনীপুরেই ছিল বলে ছাত্রটির দাবি। মুক্তেশ্বর জানিয়েছে, ‘বন্ধুরা আমাকে টিটকিরি মারত। বলত, তোকে এখানে রাখা যাবে না। শম্ভুদার কাছে নিয়ে যাব। হেড স্যারের কাছে নিয়ে যাব। মহারাজের কাছে নিয়ে যাব।’ তার কথায়, ‘শম্ভুদা হলো হলের ইনচার্জ। সামান্য কারণে এসব শুনে রাতেই হস্টেল ছেড়ে পালানোর মতলব আঁটি।’

বাড়িতে কেন ফিরলে না? মুক্তেশ্বর বলে, ‘আমি পালিয়ে এসেছি শুনে বাবা-মা যদি বকাঝকা করে তাই বাড়িতে আসিনি। একবার মুখ ঢেকে বাড়ির সামনে ঘুরেও গিয়েছি। আমাকে কেউ চিনতে পারেনি। বৃহস্পতিবার মায়ের কথা ভেবে বাড়িতে ফিরে আসি।’

মুক্তেশ্বরের বাবা ললিত মাহাত এবং মা মুক্তি মাহাত দু’জনেই পেশায় শিক্ষক। মা মুক্তি মাহাত বলেন, ‘ছেলেকে কোথাও পাঠাব না। আমাদের কাছে রেখে পড়াশোনা করাব। মিশন কর্তৃপক্ষ, পুলিশকে ধন্যবাদ।’ মুক্তেশ্বর অবশ্য লেখাপড়ার জন্য ফের নরেন্দ্রপুরে পিরতে চাইছে। তার কথায়, ‘মহারাজ যদি আমার সঙ্গে থাকেন তাহলে বন্ধুরা কী বলল তাতে কিছু যায় আসে না।’

You might also like!