হুগলি, ১৩ জানুয়ারি : কেন্দ্রীয় সরকারের ''স্বচ্ছতা সর্বেক্ষণ সার্ভে ২০২৩''-এ দেশের ১০টি নোংরা শহরের তালিকায় রয়েছে হুগলি জেলার রিষড়ার নাম। দেশের ১০টি নোংরা শহরের তালিকায় রিষড়ার নাম থাকায় পৌরসভার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন রিষড়ার সাধারণ মানুষ, সমালোচনা করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)-ও। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে পৌরসভার কর্মশৈলী নিয়ে। রিষড়া পৌরসভা দূষণ নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে কবে উদ্বিগ্ন হবে, সেই বিষয়ে প্রশ্ন করেছেন স্থানীয় মানুষজন।
রিষড়ার বাসিন্দা ও ডাঃ বিশ্বেশ্বর দয়াল ফাউন্ডেশনের সহ-সভাপতি পুনম শ্রীবাস্তব বলেছেন, রিষড়ায় ডাস্টবিনের অভাব রয়েছে। মৈত্রী পথের দিকে প্রচুর ধোঁয়া হয়, যা অনেক ভোগান্তির কারণ। অনেকবার চেয়ারম্যানের কাছে গিয়ে জানানোর বিষয়ে ভেবেছি, কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাঁর কাছে যেতে পারিনি। পুনম বলেছেন, রিষড়া শহরের বাসিন্দা হিসাবে, কেন্দ্রীয় সরকারের ''স্বচ্ছতা সর্বেক্ষণ সার্ভে ২০২৩''-এ দেশের ১০টি নোংরা শহরের তালিকায় রিষড়ার নাম দেখে তিনি স্তম্ভিত।
আবার ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার রাজ্য মুখপাত্র হরি মিশ্র বলেছেন, রিষড়ার নাম দেশের সবচেয়ে নোংরা শহরের তালিকায় আসায় তিনি মোটেও অবাক নন। রিষড়ায় জনসংখ্যার ঘনত্ব উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতি সন্ধ্যায় ফসফেট কারখানা থেকে কিছু রাসায়নিক পদার্থ নির্গত হয়, যা দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে এবং শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। জানি না রিষড়া থানার পেছনের ময়দানে কি পোড়ানো হয়, যে সন্ধ্যার পর রিষড়া ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয় এবং মানুষের মুক্ত বাতাসে শ্বাস নিতেও কষ্ট হয়।
শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপি কিষাণ মোর্চার সাধারণ সম্পাদক এবং রিষড়ার বাসিন্দা রাকেশ সিং বলেছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের ''স্বচ্ছতা সর্বেক্ষণ সার্ভে ২০২৩''-এ দেশের ১০টি নোংরা শহরের তালিকায় রিষড়ার নাম থাকা অত্যন্ত লজ্জাজনক। তিনি বলেছেন, কেউ যদি যে কোনও সন্ধ্যায় রিষড়া দেখতে যান, তাঁর চোখ জ্বলতে শুরু করবে এবং শ্বাস নিতে কষ্ট হতে শুরু করবে। ক্রমবর্ধমান দূষণে দমবন্ধ হয়ে উঠেছে রিষড়ার বাতাস। কিন্তু কেউই এ দিকে নজর দেয় না। তিনি আরও বলেন, এ দিকে নজর দিতে হবে, অন্যথায় রিষড়াবাসীর জন্য বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে। তবে চেয়ারম্যান হওয়ার পর রিষড়া পৌরসভার চেয়ারম্যান বিজয় সাগর মিশ্র পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর রিষড়ার সংকল্প নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। রিষড়ায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য পৌরসভার পক্ষ থেকেও অনেক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের এই রিপোর্ট রিষড়ার জনসাধারণের জন্য খুবই হতাশাজনক। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত রিষড়া পৌরসভা থেকে এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।