দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ ঝাড়গ্রাম জেলার নয়াগ্রাম অঞ্চলের জংলা এলাকায় পুরোনো অভ্যেসের টানেই একদল ছাত্রছাত্রীকে নিয়ে ফিল্ডওয়ার্কে গিয়েছিলেন কেশপুর কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক সুমন প্রতিহার। সেই সময়েই তাঁর নজর পড়ে ঘাড় থেকে পিঠ পর্যন্ত লাল লাল ছোপ দেওয়া অতি ক্ষুদ্র ব্যাঙটার উপরে। একটা নয়, বেশ কয়েকটা। বর্ষার ভেজা মাটিতে গাছের তলায় লাফালাফি করছে। প্রাণীবিদ্যার অধ্যাপকের অভিজ্ঞ চোখ প্রথম দর্শনে বুঝে উঠতে পারেনি ব্যাঙের প্রজাতি। নিছক কৌতূহলেই কয়েকটা নমুনা সংগ্রহ করে নেন গবেষণাগারে ভালো করে দেখার জন্য।
কেশপুর কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপকের ওই কৌতূহল বাংলার তো বটেই, ভারতের জীববৈচিত্র্যের দুনিয়ায় মাইলফলক হয়ে রইল। নয়াগ্রামের জঙ্গল থেকে তুলে নেওয়া ব্যাঙের ওই প্রজাতি (মাইক্রোহাইলা তরাইয়েনসিস) পৃথিবীতে ক্ষুদ্রতমগুলির অন্যতম। এত দিন ভারতে এই মাইক্রোহাইলা পরিবারের অন্য কয়েকটি প্রজাতির ব্যাঙের দেখা মিললেও এমন ক্ষুদ্র প্রজাতিটি ভারতে নেই বলেই মনে করা হতো।
জেডএসআইয়ের গবেষক কৌশিক দেউটি বলছেন, ‘ভারতের ভূখণ্ডে এখনও পর্যন্ত ৪১৩ প্রজাতির ব্যাঙের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। সেই তালিকায় আরও একটি নাম যোগ হলো। এটা প্রাণীবিজ্ঞানীদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে আরও গুরুত্বপূর্ণ হলো পশ্চিম মেদিনীপুর সংলগ্ন এলাকায় এর খোঁজ পাওয়া।’
জীববৈচিত্র্যর হট-স্পট বলতে মানুষের মনে প্রথমেই আসে হিমালয় এবং পশ্চিমঘাটের পার্বত্য অঞ্চলের কথা। কিন্তু আপাত-শুষ্ক রাঢ় বাংলার প্রত্যন্ত এলাকাও যে জীববৈচিত্র্যর জন্য অত্যন্ত আকর্ষক হতে পারে, মাইক্রোহাইলা তরাইয়েনসিসের সন্ধান আরও একবার সেটা বুঝিয়ে দিল।