কলকাতা, ২২ ফেব্রুয়ারি : চলতি বছরে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ২৫ বছর পূর্তি। সেই উপলক্ষে শুক্রবার কলকাতার লরেটো কলেজ ভাষাগত বৈচিত্র্য ও মাতৃভাষার গুরুত্ব তুলে ধরতে বিশেষ উদযাপনের আয়োজন করেছিল।
উল্লেখ্য, উত্তর-পূর্ব ভারতের অসংখ্য ভাষা, উপভাষা ও সংস্কৃতির সংমিশ্রণ এই অঞ্চলের অন্যতম বৈশিষ্ট্য, যা বহুভাষিকতা ও সাংস্কৃতিক ঐক্যের প্রতিচ্ছবি। বিশ্বায়নের ফলে অনেক ভাষা হারিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকলেও, ভাষার সংরক্ষণ ও প্রচার, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষা, শিক্ষার উন্নয়ন ও শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই, রজতজয়ন্তীর এই বছর কলেজের তরফে উত্তর-পূর্ব ভারতের ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য উদযাপন করা হয়। এর ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধা ও সচেতনতা তৈরি করবে বলে মনে করছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন সাহিত্য একাডেমির প্রাক্তন রিজিওনাল সেক্রেটারি এবং বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগের প্রাক্তন আধিকারিক ও লেখক রামকুমার মুখোপাধ্যায়। তিনি তাঁর বক্তব্যে উপস্থিত পড়ুয়াদের হারিয়ে যাওয়া ভাষাগুলির কারণ এবং তার বিপদের দিকগুলি যেমন উপস্থাপিত করেন, তেমনই আবার যে ভাষাগুলি হারিয়ে গিয়েও আবার মূলস্রোতে ফিরে আসতে পেরেছে, তার কথাও উল্লেখ করেন। এই প্রসঙ্গে তিনি উত্তর- পূর্ব ভারতের তিনটি ভাষা নিয়ে কথা বলেন। উপস্থিত ছিলেন নিশি পুলুগুর্থা।
এছাড়াও মিজোরাম থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে উপস্থিত ছিলেন লেখিকা মালসমি জেকব। তিনি উত্তর পূর্ব ভারতের প্রতিটি রাজ্যের ভিন্ন ভাষা, লিপি, ব্যবহার, সংস্কৃতি এবং তাদের বর্তমান লেখকদের চর্চা ক্ষেত্রকে উল্লেখ করেন এবং অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ থাকে, উওর পূর্ব ভারতের ছাত্রীদের নিয়ে তৈরি একটি প্যানেল। এই প্যানেলে উপস্থিত ছিলেন অসম, সিলেট, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, মনিপুর এর পাঁচজন ছাত্রী। তাদের অঞ্চলের ভাষার ইতিহাস, বৈচিত্র্য, লোকায়ত জীবন এবং এই মাতৃভাষার ওপর প্রচলিত ভাষার আগ্রাসনের নীতি নিয়ে নিজেদের অভিমত প্রকাশ করেন তাঁরা। ছিল বাংলার সুর, ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস এবং উত্তর পূর্ব ভারতের কয়েকটি বিশেষ নৃত্যের সুন্দর উপস্থাপনা। এছাড়াও উপস্থাপিত হয় ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস, ইউনেস্কোর থিম, উত্তর পূর্ব ভারতের ভাষা মানচিত্র দিয়ে তৈরি প্রদর্শনী।