দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি ও অফিসের সামনে রেইকি করার অভিযোগে রাজারাম রেগে নামে এক ব্যক্তিকে মুম্বই থেকে গ্রেফতার করে আনা হয়েছে কলকাতায়। তাঁকে আগামী ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে ব্যাঙ্কশাল আদালত। রাজারাম কোনওভাবে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে টার্গেট করার চেষ্টা করছিলেন কি না, রেইকির পিছনে তাঁর ঠিক উদ্দেশ্য কী ছিল, তা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে অভিযুক্তকে।
মুম্বই হামলার কয়েক বছর আগে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই ও লস্কর-ই তৈবা জঙ্গি সংগঠনের মদতে এই রাজারামের সঙ্গেই দেখা হয়েছিল মুম্বই হামলার অন্যতম চক্রীর। অভিযোগ, পাক জঙ্গিদের এই লিঙ্কম্যানকেই নাকি কালীঘাটে ঘুরঘুর করতে দেখা গিয়েছিল। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির চারপাশে রেইকিও করে যায় সে। গতকালই তাকে মুম্বই তেকে পাকড়াও করে পুলিশ। ট্রানজিট রিমান্ডে নিয়ে আসা হয় কলকাতায়।
ধৃতকে জেরা করে ও তার মোবাইল ঘেঁটে পাঁচ জন লিঙ্কম্যানের হদিশ পাওয়া গেছে। লালবাজারে তরফে জানানো হয়েছে, শেক্সপিয়ার সরণি থানাতে মামলা হয়েছে। মুম্বই হামলার মতো কোনও নাশকতার উদ্দেশ্যে রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সোমবার মুম্বই থেকে গ্রেফতার করা হয় রাজারাম রেগেকে। এরপর ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতায় এনে ধৃতকে তোলা হয় আদালতে। ধৃত রাজারাম রেগেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
লালবাজার সূত্রে খবর, মুম্বইয়েরই বাসিন্দা রাজারাম। ২ দিনের জন্য কলকাতায় এসেছিল সে। পুলিশের ধারণা, কলকাতায় অভিষেকের বাড়ি ও অফিসে রেইকি করে অভিযুক্ত। এমনকী, ভুয়ো পরিচয়ে অভি।েকের আপ্ত সহায়ককে ফোন করে অভিষেকের সঙ্গে দেখা করারও চেষ্টা করে রাজারাম।
সোমবার গ্রেফতার হওয়ার পরে লালবাজারের গোয়েন্দা আধিকারিকরা যখন রাজারামকে নিয়ে বিমানে কলকাতার দিকে রওনা দিচ্ছেন, তখনও সে গোয়েন্দাদের জানিয়েছে, সে পেশায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। কিন্তু ‘কনসালট্যান্সি’তেই তার রোজগার। এতেই বিপুল টাকা রোজগার করে সে মুম্বইয়ের মাহিমে ফ্ল্যাটও কিনে পরিবার নিয়ে থাকে।
পুলিশ জানাচ্ছে, লস্কর-ই তৈবার নির্দেশে ডেভিড হেডলি যখন মুম্বইজুড়ে রেইকি করছে, তখন এক লিঙ্কম্যানের মাধ্যমে রাজারামের সঙ্গে যোগাযোগ হয় হেডলির। তখনও রাজারাম নিজেকে ‘কনসালট্যান্ট’ বলে পরিচয় দিত। রাজারাম মুম্বইয়ের দাদারে শিব সেনা ভবনের ভিতরই তার সঙ্গে দেখা করেছিল। নিজেকে রাজারাম শিব সেনার জনসংযোগ আধিকারিক হিসাবে পরিচয় দিয়েছিল। যদিও এনআইএ-র কাছে রাজারাম দাবি করেছিল, শিব সেনা ভবনে তার যাতায়াত রয়েছে। একজন শিব সেনা সদস্য হিসাবে অনেকেই তার সঙ্গে দেখা করতে আসেন। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, আইএসআই ও লস্করের হামলার লক্ষ্য ছিলেন মুম্বইয়ের শিব সেনা নেতারা। রাজারাম সেই লিঙ্কম্যানেরই কাজ করত কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে।