দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: রাশিয়ার কাছ থেকে অপরিশোধিত তেল কেনার বিষয়কে কেন্দ্র করে ফের ভারতকে চাপে রাখার চেষ্টা করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই ইস্যুতে ভারত সরকারের উপর বাড়তি শুল্ক চাপানোর হুমকি দিয়ে তিনি কার্যত দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে নতুন করে টানাপড়েন তৈরি করলেন। তবে তাঁর এই সিদ্ধান্তে অস্বস্তিতে পড়েছে স্বয়ং ট্রাম্পের দল, রিপাবলিকান পার্টি।
রিপাবলিকানদের তরফ থেকেই এবার প্রকাশ্যে কড়া সমালোচনা শোনা গেল ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে। প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত ও রিপাবলিকান নেত্রী নিকি হ্যালি স্পষ্ট ভাষায় জানান, ‘ইউক্রেন যুদ্ধকে মাথায় রেখে ভারতের রাশিয়া থেকে তেল কেনা উচিৎ নয়। কিন্তু চিন, যে আমাদের শত্রু এবং রাশিয়া ও ইরানের থেকে সবচেয়ে বড় তেল আমদানির দেশ। তাদেরকে ৯০ দিনের জন্য শুল্কে ছাড় দেওয়া হয়েছে। চিনকে ছাড় দেওয়া কোনওভাবেই উচিৎ নয়।’ এ প্রসঙ্গে ভারত ইস্যুতে তাঁর আরও পরামর্শ, ‘ভারতের মতো শক্তিশালী বন্ধুদের ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করা কোনওভাবেই কাম্য নয়।’
উল্লেখ্য, সম্প্রতি রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্য ভারতকে হুঁশিয়ারি দিয়ে ট্রাম্প জানিয়েছেন, “বাণিজ্যের জন্য ভারত ভালো অংশীদার নয়। তারা আমাদের সঙ্গে যথেষ্ট বাণিজ্য করে। কিন্তু আমরা তাদের সঙ্গে বাণিজ্য করি না। তাই ভারতের উপর আমরা ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছিলাম। কিন্তু আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে তা বৃদ্ধি করা হবে। কারণ, ভারত রাশিয়া থেকে তেল কিনছে এবং তারা ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে রাশিয়াকে সাহায্য করছে।” এর আগেও সোশাল মিডিয়ায় ট্রাম্প বার্তা দিয়েছিলেন, ‘ভারত রাশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণে তেল কিনছে। সেই তেলের বেশিরভাগই তারা খোলা বাজারে বিক্রি করে মুনাফা কামাচ্ছে। রাশিয়ার লাগাতার হামলার জেরে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে ইউক্রেন। ইউক্রেনের মৃত্যুমিছিলে আদও রুশ ‘বন্ধু’ ভারতের কিছু এসে যায় না।’
ট্রাম্পের এই মন্তব্যের পরই কড়া প্রতিক্রিয়া দেয় ভারত। বিদেশমন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতিতে বলা হয়, ‘রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের যুদ্ধ শুরুর পর বেশিরভাগ সামগ্রীই ইউরোপমুখী হয়েছিল। তাই রাশিয়া থেকে তেল কেনা শুরু করে ভারত। শুধু তাই নয়, সেই সময় বিশ্বের জ্বালানির বাজার স্থিতিশীল রাখতে আমেরিকাই রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্য ভারতকে উৎসাহিত করেছিল।’আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের লাগাতার সমালোচনাকে ‘অযৌক্তিক’ বলে আখ্যা দিয়েছে ভারত। নয়াদিল্লির স্পষ্ট বার্তা, জাতীয় স্বার্থের কথা মাথায় রেখেই দেশ তার সিদ্ধান্ত নেবে। ভারতের পাল্টা প্রশ্ন, আমেরিকা নিজেও তো রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য করছে—পারমাণবিক শিল্পের জন্য ইউরেনিয়াম হেক্সাফ্লোরাইড, বৈদ্যুতিক গাড়ির জন্য প্যালাডিয়াম ও অন্যান্য রাসায়নিক আমদানি করছে তারা। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের দলের নেত্রী নিকি হ্যালিও সতর্ক করেছেন প্রেসিডেন্টকে, বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের সঙ্গে সংঘাতের পথ ভালো কিছু বয়ে আনবে না।
India should not be buying oil from Russia. But China, an adversary and the number one buyer of Russian and Iranian oil, got a 90-day tariff pause. Don’t give China a pass and burn a relationship with a strong ally like India.
— Nikki Haley (@NikkiHaley) August 5, 2025