দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ তিনি যে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের অবিচ্ছেদ্য অংশ, তা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সোমবার, পঞ্চম দফার ভোটের দিনও বাংলায় ভোট-প্রচারে এসে বিরোধী শিবিরে ফাটল ধরানোর চেষ্টায় কোনও খামতি রাখলেন না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ‘ইন্ডিয়া’ জোটে তৃণমূলের অবস্থান নিয়ে এদিন ঝাড়গ্রামের সভা থেকে খোঁচা দিলেন তিনি।
প্রশ্ন তুললেন, কেন ক’দিন আগে কংগ্রেসকে আক্রমণ করে এখন আবার নিজেদের ‘ইন্ডিয়া’ জোটের শরিক বলছে তৃণমূল? নমোর পর্যবেক্ষণ, জোটের পক্ষে সওয়াল করে তৃণমূলের কোনও লাভ হবে না বলেই। তাঁর ব্যাখ্যা, কংগ্রেস ডুবন্ত জাহাজ! আর তৃণমূলের জাহাজও ফুটো হয়ে গিয়েছে। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য এ বারের লোকসভা ভোটে বিজেপির ভরাডুবি সর্ম্পকে একশো শতাংশ নিশ্চিত।
এদিনই বাঁকুড়ার ওন্দার সভা থেকে তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী, ‘বিজেপি যাচ্ছে। বিজেপি হারছে। বিজেপি আসবে না, আসছে না।’ এদিন নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে পূর্বাভাস দিয়েছেন মোদীও। তাঁর কথায়, ‘পাঁচ দফার ভোটেই ইন্ডিয়া জোট পরাস্ত হয়ে গিয়েছে। ৪ জুন ফল প্রকাশের দিনই এই জোট ধ্বংস হয়ে যাবে। ইন্ডিয়া জোট শেষ হওয়ার কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে।’
সম্প্রতি নির্বাচনী জনসভা থেকে তৃণমূলনেত্রী ঘোষণা করেছিলেন, বাংলার মানুষের স্বার্থে ক্ষমতায় আসার পর তৃণমূল ‘ইন্ডিয়া’ জোটকে বাইরে থেকে সমর্থন করবে। তাঁর এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে ঘোলা হতে শুরু করে রাজনীতির জল। পরের দিনই দলীয় অবস্থান ব্যাখ্যা করে মমতা বলেন, ‘আমরা ইন্ডিয়া জোটে ছিলাম। জোটে থাকব। ভুল বোঝাবুঝির কোনও অবকাশ নেই। ওই জোট দিয়েই আমরা দিল্লিতে সরকার তৈরি করব।’
সোমবার ঝাড়গ্রামের সভা থেকে প্রধানমন্ত্রী ইঙ্গিত দেন, ভোট মিলছে না বলেই তৃণমূল আক্রমণের অভিমুখ ঘনঘন বদল করছে। তাঁর কথায়, ‘বাংলার লোক তৃণমূলকে ভোট দিচ্ছে না। তাই কখনও বিজেপিকে গালাগাল দিচ্ছে, কখনও বাংলার মানুষকে।’ মোদীর সংযোজন, ‘ক’দিন আগেও কংগ্রেসকে গালাগাল দিচ্ছিল তৃণমূল। এখন ওরা বলছে, আমরা ইন্ডি জোটের শরিক! কিন্তু বাংলার মানুষ জানে, কংগ্রেস ডুবন্ত জাহাজ। তৃণমূলের জাহাজও ফুটো হয়ে গিয়েছে। কংগ্রেস আর তৃণমূল একে অন্যের জাহাজে চাপলে ভরাডুবি অনিবার্য।’
বিজেপির আক্রমণকে উড়িয়ে দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত ক’দিন ধরে নির্বাচনী সভায় বলেছেন, ‘ইন্ডিয়া’ জোট ক্ষমতায় আসার পর সরকারিস্তরে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিন ওন্দায় তিনি বলেন, ‘আমরা দিল্লিতে গিয়ে এনআরসি বাতিল করব, একশো দিনের কাজ আবার নতুন করে শুরু করব।’
মমতার কটাক্ষ, ‘আগে ওরা (বিজেপি) বলেছিল, চারশো পার। এখন মানুষ বলছে বিজেপি হবে পগারপার। বাংলা যদি এগিয়ে যায়, দিল্লিতে আমাদের দরও বাড়বে। আগামী দিনে বাংলা ভারত থেকে বিজেপিকে তাড়াবে। বাংলা ইন্ডিয়া জোটকে লিড দেবে। মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেবে।’
এদিন ঝাড়গ্রামের সভা থেকে শুধু তৃণমূলকে নয়, কংগ্রেসকেও চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেছেন মোদী। কংগ্রেস-সহ ‘ইন্ডিয়া’ জোটের শরিকদের ‘সাম্প্রদায়িক’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘১২ বছর আগের একটা ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। যেখানে কংগ্রেসের শাহাজাদা বলছেন যে, তাঁরা এসসি, এসটিদের থেকে সংরক্ষণ কেড়ে নিয়ে সংখ্যালঘুদের দেবে। কংগ্রেসের মতো বড় সাম্প্রদায়িক দল ভারতবর্ষে নেই। ইন্ডি জোটের শরিকরাও একইরকম সাম্প্রদায়িক।’