ক্যানিং: সোমবার দুপুরে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের দফতরে বিক্ষোভ দেখালেন একদল মৎস্যজীবীরা। জোর করে অফিসে ঢোকার চেষ্টাও করেন তাঁরা। সুন্দরবনের জঙ্গল, নদী, খাঁড়িতে মাছ কাঁকড়া ধরার স্থায়ী বিএলসি বা অনুমতি পত্র দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ দেখান মৎস্যজীবীরা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে ক্যানিং থানার পুলিশ আসে ঘটনাস্থলে। শেষে সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে মৎস্যজীবীদের কয়েকজন প্রতিনিধি সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের আধিকারিকদের সাথে কথা বলেন।
মৎস্যজীবীদের দাবি, সুন্দরবনের নদী খাঁড়িতে মাছ, কাঁকড়া ধরার উপর নানাধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি করছে বন দফতর। একদিকে যেমন মাঝে মধ্যেই মৎস্যজীবীদের জাল, নৌকা কেঁড়ে নেওয়া হচ্ছে, তেমনি অন্যদিকে সুন্দরবনের নদী, খাঁড়িতে মাছ, কাঁকড়া ধরার জন্য যে অনুমতি বা বিএলসি লাগে তা বাতিল করে দিতে চাইছে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প। স্থায়ী বিএলসির বদলে অস্থায়ী বা প্রভেশানাল বিএলসি প্রদান করা হচ্ছে। কিন্তু মৎস্যজীবীদের দাবি তাঁদের স্থায়ী বিএলসি চাই। আর সেই দাবিতেই বিগত বেশ কিছুদিন ধরে তাঁরা নানা ভাবে আবেদন, নিবেদন করছেন। কিন্তু সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প কিছুতেই কিছু মানতে চাইছে না বলে অভিযোগ মৎস্যজীবীদের। কয়েকদিন আগেও ব্যাঘ্র প্রকল্পের দফতরে আন্দোলন করেছিলেন সুন্দরবন মৎস্যজীবী রক্ষা কমিটির সদস্যরা। তখনও মৎস্যজীবীদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন আধিকারিকরা। কিন্তু সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের তরফে সোমবারও বিএলসি নবীকরণের জন্য মৎস্যজীবীরা এলে তাঁদেরকে অস্থায়ী বিএলসি দেওয়া হলে তাঁরা প্রতিবাদ করেন। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে ক্যানিং থানার পুলিশ আসে সেখানে। শেষ পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সাথে দীর্ঘক্ষণ বৈঠকের পর চলতি মরশুমের জন্য স্বাভাবিক বিএলসি দেওয়ার কথা স্বীকার করেন দফতরের আধিকারিকরা। মৎস্যজীবী গনেশ মন্ডল, আরাফ পিয়াদারা বলেন, “ আমরা এই সুন্দরবনের নদী, খাঁড়িতে মাছ, কাঁকড়া ধরেই জীবিকা নির্বাহ করি। বছরের পর বছর বিএলসি নিয়েই মাছ ধরতে যাই। এবার আমাদের বিএলসি জমা নিয়ে প্রবেশানাল বিএলসি দিচ্ছে। পুরাতন বিএলসি বাতিল করতে চাইছে ব্যাঘ্র প্রকল্প। তাই আমরা প্রতিবাদ আন্দোলনে নেমেছি।”
যদিও বন দফতরের দাবি, যারা বিএলসি ব্যবহার করছেন তাঁদের অনেকেই মাছ, কাঁকড়া ধরেন না বর্তমানে। নিজেদের সেই লাইসেন্স মোটা টাকায় ভাড়া খাটাচ্ছেন। ডিএফডি জোন্স জাস্টিন বলেন, “ যারা বর্তমানে বিএলসিধারী রয়েছেন তাঁদের অনেকেই মৎস্যজীবী নন। বিএলসি মোটা টাকায় ভাড়া খাটানো হচ্ছে। এই সব বিএলসি বাতিল করে যারা প্রকৃত মৎস্যজীবী তাঁদেরকে বিএলসি দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।”