West Bengal

6 hours ago

Darjeeling Himalayan Railway: দার্জিলিংয়ে ফিরছে ১৪২ বছরের পুরোনো স্টিম ইঞ্জিন –হিমালয়ান ট্র্যাকে নতুন করে দৌড়োবে ইতিহাস!

Railway To operate Special Steam, Diesel Joyride Services In Darjeeling Himalayan Railway
Railway To operate Special Steam, Diesel Joyride Services In Darjeeling Himalayan Railway

 

দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ের (DHR) উদ্যোগে ফের প্রাণ ফিরে পেতে চলেছে ভারতের রেল ইতিহাসের এক অমূল্য সম্পদ—১৪২ বছরের পুরোনো একটি স্টিম ইঞ্জিন। দিল্লির রেল মিউজিয়ামে দীর্ঘদিন ধরে শোকেস করে রাখা এই ঐতিহাসিক ইঞ্জিনটিকে শীঘ্রই নিয়ে আসা হচ্ছে দার্জিলিংয়ে। যদি  সব পরিকল্পনা সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয়, তাহলে আগামী মাসেই দেশের রাজধানী থেকে পাহাড়ি পথে পৌঁছে যাবে ইঞ্জিনটি। 

এই ইঞ্জিনটি তৈরি হয়েছিল ১৮৮২-৮৩ সালে, ব্রিটিশ আমলে। প্রথমে এটি সক্রিয়ভাবে পাহাড়ি রাস্তায় চলত, পরে ১৯৯৯ সালে ভারতীয় রেল বোর্ডের সদর দপ্তরে শোকেস হিসেবে রাখা হয়। ২০২২ সালে সেটিকে স্থানান্তর করা হয় দিল্লির রেল মিউজিয়ামে। রেলপ্রেমীদের কাছে এটি এক ঐতিহাসিক বস্তু হিসেবেই বিবেচিত। সম্প্রতি দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ের এক প্রতিনিধি দল দিল্লির মিউজিয়ামে গিয়ে ইঞ্জিনটি পরিদর্শন করেন এবং এটিকে পুনরায় সচল করে ট্র্যাকে ফেরানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেন। রেল বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে—ইঞ্জিনটি ফের পাহাড়ি ট্র্যাকে দৌড়বে। ইঞ্জিনটি দার্জিলিংয়ে পৌঁছনোর পর  DHR-এর তিনধারিয়া ওয়ার্কশপে শুরু হবে তার পুনরুজ্জীবন প্রক্রিয়া। এখানকার অভিজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার ও কারিগররা ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। এর আগে, এই ওয়ার্কশপের কর্মীরাই সফলভাবে প্রাণ ফিরিয়েছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে ছোট স্টিম ইঞ্জিন হিসেবে পরিচিত ‘বেবি সিভক’-কে। DHR-এর ডিরেক্টর ঋষভ  চৌধুরী জানিয়েছেন, "ইঞ্জিনটি মেরামতের বিষয়ে আমরা আশাবাদী। একবার সফলভাবে চালাতে পারলে, ভবিষ্যতে আরও বেশ কয়েকটি বসে যাওয়া ইঞ্জিন—যেমন গুয়াহাটি, হাওড়া এবং দিল্লি থেকে—নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে।" 

১৪২ বছরের পুরোনো এই স্টিম ইঞ্জিনটি শুধুই একটি যন্ত্র নয়, এটি রেল ইতিহাসের এক জীবন্ত অধ্যায়। যদি এই ইঞ্জিনটি ট্র্যাকে ফিরতে পারে, তাহলে তা পর্যটকদের জন্য এক অনন্য হেরিটেজ রেল রাইডের সুযোগ করে দেবে। দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে ইতিমধ্যেই এই ইঞ্জিনটিকে পর্যটনের কেন্দ্রবিন্দু করে একটি  হেরিটেজ রুট তৈরি করার পরিকল্পনা করছে। DHR এর জনপ্রিয়তা আরও বাড়াতে রেল কর্তৃপক্ষ তিনটি নতুন জয়রাইড চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই জয়রাইডগুলির মধ্যে কিছু সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দেখার জন্য পরিকল্পিত, আবার কোনওটিতে পর্যটকরা চা বাগানে গিয়ে চা পাতার তোলার কাজ দেখতে পারবেন। এই জয়রাইডগুলি আসন্ন দুর্গাপুজো থেকেই শুরু হবে বলে জানা গেছে। এখানে স্টিম ও ডিজেল—দু’ধরনের ইঞ্জিনই ব্যবহার করা হবে। জয়রাইডের ভেতর ব্রেক জার্নি বা মাঝপথে থেমে বিশেষ দৃশ্য দেখানোর ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। বর্তমানে DHR-এর হাতে রয়েছে ১৩টি সচল স্টিম লোকোমোটিভ। 

দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে শুধুমাত্র পাহাড়ি রেলপথ নয়, এটি UNESCO-র ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবেও স্বীকৃত। ফলে এই ধরনের ইঞ্জিন পুনরুজ্জীবনের মাধ্যমে রেল শুধুমাত্র ঐতিহ্য সংরক্ষণ করছে না, বরং পর্যটন উন্নয়ন ও আঞ্চলিক অর্থনীতিতেও তা বড় ভূমিকা রাখবে।ঋষভ চৌধুরী বলেন, "এই ইঞ্জিনটি ট্র্যাকে ফেরত পাঠাতে পারলে আমরা শুধু ইতিহাস বাঁচাব না, পর্যটকদের জন্য নতুন অভিজ্ঞতারও দরজা খুলে যাবে।"

You might also like!