Tripura

1 year ago

Tripura:স্বাধীনতার অমৃতকালে নতুন পথের সূচনার আশায় ত্রিপুরা : সকলের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা ও অংশগ্রহণ জরুরি

India
India

 

আমবাসা (ধলাই): ১৯৪৯ এর ১৫ অক্টোবর এ মাণিক্য রাজবংশের শাসনে থাকা ত্রিপুরা যোগ দিয়েছিল ভারতবর্ষে। এই ছোট্ট রাজ্যের তিনদিকে তৎকালীন সময়ে পাকিস্তানের শাসনাধীন পূর্ব পাকিস্তান বা বর্তমানের বাংলাদেশ। কিন্তু তারপরও রাজ্যের এবং রাজ্যবাসীদের ভবিষ্যৎ ও লাভালাভের কথা মাথায় রেখে তৎকালীন দায়িত্বপ্রাপ্ত মহারানী কাঞ্চনপ্রভা দেবী ভারতভুক্তির ঘোষণাপত্র স্বাক্ষর করেন ১৫ অক্টোবর, ১৯৪৯। এরপর থেকে ত্রিপুরা ভারতবর্ষের অঙ্গরাজ্য। স্বাধীনতার অমৃতকালে যদি পেছন ফিরে তাকানো হয় তাহলে দেখা যাবে স্বাধীন ভারতবর্ষে এই রাজ্যের অপ্রাপ্তি যেমন রয়েছে, প্রাপ্তির ঝুলিও তেমন শূন্য নয়। রাজনৈতিক লাভালাভের হিসেব থেকে এই রাজ্যের সহজ সরল, মানুষগুলোকে নিয়ে নানা কৌশল করতে করতে বিচ্ছিন্নতাবাদ এবং সংস্ত্রাসবাদ একসময় অনিয়ন্ত্রিত পর্যায়ে পৌঁছে যায়। এখন অবস্থা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে হলেও সমস্যা পুরো দূর হয়ে যায় নি। এর পাশাপাশি নেশা আসক্তি , নেশা বাণিজ্য, মাফিয়া দৌরাত্ম ও জুয়ার দাপাদাপি এই রাজ্যকে কালিমালিপ্ত করেছে ও করছে। পাহাড়ি বা জনজাতি সম্প্রদায় ও বাঙালিদের ঐক্যে ফাটল ধরিয়ে রাজনীতির নোংরা খেলা চলেছে বহু দশক। এই সবকিছু রাজ্যের নিজস্ব কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, সম্পদ ও সম্ভাবনাকে পেছনে রেখেছে বহুদিন। এই ক্ষেত্রে কেন্দ্রয় সরকারের তরফ থেকে 'লুক ইস্ট' বা 'পূর্বোত্তরে দৃষ্টিজ্ঞাপন' নীতি কোন সদর্থক প্রভাব ফেলতে পারেনি।

তারপরও এই রাজ্য জাতীয় সড়ক , রেল ও বিমান যোগাযোগ , আধুনিক ও উচ্চ কারিগরি এবং বৃত্তিমুখী শিক্ষার কিছু সুযোগ পেয়েছে। তবে সেই সকল সুবিধার সবকিছুই মূলত রাজধানী কেন্দ্রিক বা রাজ্যের নির্দিষ্ট এলাকা কেন্দ্রিক ছিল। ২০১৮ থেকে এই ক্ষেত্রে এক ব্যাপক পরিবর্তন দেখা যায়। বর্তমান ভারত সরকারের 'অ্যাক্ট ইস্ট' বা 'উত্তর পূর্বাঞ্চলে কর্মমুখরতা' নীতি এই ক্ষেত্রে অনেকটাই সহায়ক হয়। বর্তমানে প্রায় গোটা রাজ্য রেল মানচিত্রে যুক্ত। উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে প্রতি মহকুমায়। রয়েছে প্রযুক্তিগত ও বৃত্তিমুখী শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের সুযোগ। ধলাই জেলার মতো পিছিয়ে পড়া বা উন্নয়নকামী জেলার জেলা সদরে গড়ে উঠছে স্বাস্থ্য শিক্ষার কলেজ। এই সকল পরিবর্তন সম্মিলিতিভাবে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রকে উন্মুক্ত করে দিচ্ছে রাজ্যের জন্য। এই প্রেক্ষাপটে স্বাধীনতার অমৃতকাল আরও বেশি তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে এই জেলায় এবং গোটা রাজ্যে। রাজ্যবাসী আন্তরিকভাবে চাইছেন নেশা, জুয়া, মাফিয়ার দৌরাত্ম বন্ধ হোক রাজ্যে। এতো যুগ ধরে মহিলা সশক্তিকরণের যে কথা ব্যবহার করা হয়েছে নিছক রাজনীতির জন্য তা বাস্তবায়িত হোক।

আশার কথা বর্তমান সরকারও এ বিষয়ে যথেষ্ট আন্তরিক। পদক্ষেপ করা শুরুও হয়েছে। ফলে সকলে চাইছেন, রাজনীতির গন্ডির বাইরে বেরিয়ে বৃহত্তর স্বার্থে সকল রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং প্রত্যেক ব্যক্তি নিজের নিজের ভূমিকা ও দায়িত্ব পালন করুন। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই রাজ্য আগামী প্রজন্মের কাছে এবং গোটা দেশের সামনে হয়ে উঠুক এক উজ্জ্বল উদাহরণ, এক আলোক বর্তিকা। এই প্রাপ্তিই হোক এই অমৃতকালের আসল অর্জন। নিজেদের ভূমিকা পালনেকে কতদূর এগিয়ে আসেন সেটাই এখন দেখার বিষয় ।



You might also like!