Travel

1 year ago

Ziro Valley:বর্ষায় ঘুরে আসুন অরুনাচলের 'জিরো'ভ্যালিতে - মন উজাড় করা আনন্দ পাবেন

Ziro Valley
Ziro Valley

 

দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ পাহাড়ে ঘুরতে যাওয়ার প্রসঙ্গ উঠলেই গড়পড়তা বাঙালির মাথায় আসে দার্জিলিং কিংবা সিকিমের কথা। মোটকথা পাহাড় বললেই উত্তরবঙ্গ বোঝেন বেশিরভাগ মানুষ। নয়তো বা হিমাচল প্রদেশ, কিংবা কেরল। এ ব্যাপারে বেশ খানিকটা পিছনেই পড়ে থাকে অরুণাচলপ্রদেশ (Arunachal Pradesh)। অথচ ভারতের উত্তর-পূর্ব দিকের এই রাজ্যে যে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কী অপরূপ মণিমুক্তো ছড়িয়ে রয়েছে, তা না গেলে বোঝা সম্ভব নয়। আজ সেই অরুণাচলেরই এমন এক জায়গার কথা বলব আপনাদের, যেখানে গেলে দেশে থেকেও বিদেশভ্রমণের অনুভূতি মিলবে। পাইন গাছের জঙ্গল, দৈত্যাকার বাঁশঝাড়ে ঘেরা সর্পিল রাস্তা, দিগন্তবিস্তৃত ধানের খেত, আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রাম, মাছ চাষের ফার্ম-সব মিলিয়ে অরুণাচল প্রদেশের জিরো ভ্যালি (Ziro Valley) মন জুড়িয়ে দেবেই দেবে।

কী দেখবেন (Ziro Valley) 

ইটানগর থেকে জিরো ভ্যালি দূরত্ব ১৫ কিলোমিটার। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা ১,৫০০ কিলোমিটার। পুরো উপত্যকাটিতে অন্তত ৩০০ পাখি এবং ১৭০ প্রজাতির প্রজাপতির বাস। এই এলাকাটি বিশেষভাবে বিখ্যাত ‘জিরো মিউজিক ফেস্টিভ্যাল’-এর জন্য। এই আউটডোর ফেস্টিভ্যালে চল্লিশটিরও বেশি স্থানীয় ব্যান্ড অংশ নেয়।

পুরো উপত্যকা জুড়েই ছড়িয়ে রয়েছে অজস্র ছোট বড় পাহাড়। ফলে যাঁরা ট্রেকিং করতে ভালবাসেন তাঁদের জন্য জিরো ভ্যালি একেবারে উপযুক্ত জায়গা। পাইন বনের মধ্যে দিয়ে হাঁটতে হাঁটতেই চোখে পড়বে পাহাড়ের ঢালে সূর্যের আলোর খেলা, গাছের মাথায় পড়ে ঝিলমিলিয়ে ওঠে রোদ্দুর। এখানকার জীববৈচিত্র্যও অসাধারণ। পাখি এবং প্রজাপতির পাশাপাশি অজস্র গাছপালা রয়েছে এখানে, যার মধ্যে রয়েছে বাঁশ, ফার, রডোডেনড্রন এবং ফার্ন। ডোলো মান্ডো পাহাড় হল জিরো ভ্যালির সবচেয়ে জনপ্রিয় টুরিস্ট স্পট। আবার নীলচে সবুজ পাইন গাছের জঙ্গলের জন্য বিখ্যাত মিডে। ট্যালি ভ্যালিতে রয়েছে একটি অভয়ারণ্য। সেখানেও নানা প্রজাতির জীবজন্তু এবং প্রজাপতি রয়েছে। অ্যাডভেঞ্চারের ইচ্ছা থাকলে কিলে পাখোতে ট্রেক করতেই হবে। এখানে ক্যাম্পিংয়েরও সুবন্দোবস্ত রয়েছে।

এই জিরো ভ্যালির মূল বাসিন্দারা হলেন আদিবাসী আপাতানি সম্প্রদায়ের মানুষজন। মূলত হং, বামিন এবং হিজা গ্রামেই বাস তাঁদের। এই সম্প্রদায়ের মহিলারা ঐতিহ্য মেনে এখনও মুখ জুড়ে উল্কি আঁকান। এছাড়া নাকে পরে থাকেন বেতের নাকছাবি। এই সম্প্রদায়ের মূল জীবিকা হল ধান চাষ। তাই এই গ্রামগুলিতে সুবিস্তীর্ণ ধানখেত দিয়ে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ মিলবে। ধানক্ষেতের মধ্যেই ছোট ছোট জায়গা করে বিভিন্ন প্রজাতির মাছও চাষ করা হয়ে থাকে। গ্রামগুলিতে ঘোরার জন্য পর্যটকদের অনেকেই বাইক ব্যবহার করেন।

কখন যাবেন

এপ্রিল থেকে জুন হল জিরো ভ্যালি ঘোরার জন্য সেরা সময়। গ্রীষ্মকাল হলেও এই তিন মাস এখানকার আবহাওয়া খুবই মনোরম থাকে। তবে জিরো মিউজিক ফেস্টিভ্যাল দেখতে চাইলে যেতে হবে সেপ্টেম্বর মাসে। প্রতিবছরই এই মাসের চারটি দিন জুড়ে চলে উপত্যকার সংগীত উৎসব। সেখানে অংশ নেওয়া ব্যান্ডগুলি অল্টারনেটিভ কিংবা পপ-ফাঙ্ক থেকে শুরু করে পোস্ট-রক, জ্যাজ, হিপহপ, মেটাল, ইলেকট্রনিক ইত্যাদি বিভিন্ন ঘরানার সংগীত পরিবেশন করেন। এই সময় এখানে স্থানীয় ঐতিহ্যবাহী খাবারেরও মেলা বসে যায়।

কীভাবে যাবেন

বিমানপথে যেতে চাইলে অসমের লীলাবাড়ি বিমানবন্দরে নামা সবচেয়ে সুবিধা জনক। সেখান থেকে সড়কপথে পৌঁছে যেতে পারবেন জিরো ভ্যালিতে। এছাড়া অসমের জোড়হাট এবং তেজপুর বিমানবন্দর থেকেও গাড়ি পাওয়া যায়। সড়কপথে অসমের গুয়াহাটি থেকে জিরো ভ্যালি যাবার জন্য সরাসরি বাস রয়েছে। ইটানগর থেকেও সড়কপথে যাওয়া যায় উপত্যকায়। ট্রেনে যেতে চাইলে জিরো ভ্যালির সবচেয়ে কাছের রেলস্টেশন হল নাহারালাগুন। গুয়াহাটি থেকে ট্রেনে এই স্টেশনে পৌঁছে সেখান থেকে ভাড়ার গাড়িতে সহজেই জিরো ভ্যালিতে পৌঁছে যাওয়া যাবে।


You might also like!