kolkata

4 months ago

Seikh Shahjahan:জমি দখল করে ২৬১ কোটির সম্পত্তির মালিক হয়েছিলেন শাহজাহানের,১১৩ পাতার চার্জশিটে জানাল ED

Seikh Shahjahan
Seikh Shahjahan

 

দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃসন্দেশখালি কাণ্ডে জেলবন্দি বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। জমি দখল করে প্রায় ২৬১ কোটি টাকার সম্পত্তি করেছেন শাহজাহান, এমনই চার্জশিটে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। পুরোটাই দুর্নীতি করে হয়েছে বলে তাদের দাবি।

ইডি সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত ২৬১ কোটি টাকার সম্পত্তির হদিস মিলেছে। এই বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির মালিক কী ভাবে হয়ে উঠেছিলেন শাহজাহান, তা-ও চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটির একটি সূত্রের খবর, মূলত পাঁচটি উপায়ে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক হয়ে ওঠেন শাহজাহান।

যে পাঁচ উপায়ে শাহজাহান সম্পত্তির বহর বাড়িয়েছেন, তার মধ্যে একটি হল চিংড়ির আমদানি-রফতানির ব্যবসা। কারও জমি জোর করে দখল করে নিতেন। প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে বহু জমি নিজের এবং ভাইদের নামে করে নিতেন। ভেড়িও যে জোর করে দখল করেছিলেন শাহজাহান, তারও হদিস পেয়েছে ইডি। মূলত, চিংড়ি আমদানি এবং রফতানির এজেন্ট হিসাবে কাজ করতেন। আর এই ব্যবসার মাধ্যমেই শাহজাহান প্রায় ২০০ কোটি টাকার সম্পত্তি করেছেন বলে ইডি সূত্রের খবর।

ইডি সূত্রে খবর, চিংড়ি আমদানি-রফতানির ব্যবসার পাশাপাশি শাহজাহানের আয়ের আর এক উৎস ছিল ইটভাটা এবং ইটের ব্যবসা। ইটভাটার মাধ্যমে শাহজাহান প্রায় ২০ কোটি টাকার সম্পত্তি করেছেন বলে ইডি সূত্রের খবর। শুধু তা-ই নয়, যে ব্যক্তির কাছ থেকে ইটভাটার মালিকানা জোর করে ছিনিয়ে নিয়েছিলেন, বর্তমানে সেই ব্যক্তিই ওই ইটাভাটার ম্যানেজার হিসাবে কাজ করছেন। বেশ কয়েকটি বয়ান ইডির হাতে এসেছে, যেখানে দাবি করা হয়েছে, বন্দুক দিয়ে ভয় দেখিয়ে ইটভাটা দখল করে নেয় শাহজাহান বাহিনী। এই সূত্র ধরেই দুরন্ত নামে এক ব্যক্তির খোঁজ পেয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি। এই দুরন্তই শাহজাহানের ছায়াসঙ্গী ছিলেন। তাঁর কাছে শাহজাহানের ফোন থাকতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

 শাহজাহানের আয়ের আর এক উৎস তোলাবাজি। বন্দুক দেখিয়ে, প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে তোলা আদায় করত শাহজাহান বাহিনী। এই তোলাবাজির মাধ্যমেও বেশ কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি বানিয়েছিলেন শাহজাহান।

টেন্ডারের মাধ্যমেও কোটি কোটি টাকা তুলেছিলেন শাহজাহান। ইডি সূত্রে তেমনই দাবি করা হয়েছে। সরকারি টেন্ডারগুলি শাহজাহান তাঁর হাতের বাইরে যেতে দিতেন না। ভাই আলমগিরের নামে সেই টেন্ডার নিতেন বলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটির দাবি। টেন্ডারের মাধ্যমে প্রায় ২০ কোটি টাকার সম্পত্তি বানিয়েছেন শাহজাহান।

শাহজাহানের সম্পত্তির আর এক উৎস ছিল মাছের আড়ত। এই আড়তের মাধ্যমে প্রায় ৮ কোটি টাকার সম্পত্তি তৈরি করেছেন বলে ইডি সূত্রের খবর। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটির দাবি, জমি দখল করে যে সম্পত্তি বানিয়েছিলেন শাহজাহান, বিভিন্ন ব্যবসায় সেই টাকা লাগিয়ে তা ‘সাদা’ করতেন বলেও মনে করছে ইডি।

তদন্তের ৫৬ দিনের মাথায় সোমবার আদালতে শাহজাহানের এই সম্পত্তি সংক্রান্ত চার্জশিট জমা দিয়েছে ইডি। চার্জশিটে জানানো হয়েছে, আনুমানিক ১৮০ বিঘা জমি দখল করেছেন শাহজাহান। তবে সেই পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। ১১৩ পাতার চার্জশিটে অভিযুক্ত হিসাবে রয়েছে শাহজাহানের ভাই আলমগিরের নাম। এ ছাড়াও দিদার বক্স মোল্লা, শিবপ্রসাদ হাজরার নাম রয়েছে অভিযুক্ত হিসাবে। সাক্ষী হিসাবে সরকারি আধিকারিকদেরও বয়ান নেওয়া হয়েছে। সিবিআই সন্দেশখালিতে অভিযান চালিয়ে যে অস্ত্র উদ্ধার করেছিল, সে কথারও উল্লেখ রয়েছে চার্জশিটে।

ইডি সূত্রের খবর, জমি দখল মামলায় শাহজাহানের বিরুদ্ধে ইডি যে চার্জশিট আদালতে জমা দিয়েছে, তাতে উল্লেখ রয়েছে, শাহজাহানকে সন্দেশখালির ‘বাদশা’ তৈরির নেপথ্যে হাত ছিল রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওরফে বালুর। বাম আমল থেকেই শাহজাহানের প্রভাব সন্দেশখালিতে বৃদ্ধি পেতে শুরু করলেও রমরমা আরও বৃদ্ধি পায় ‘বালু-যোগের’ পর। প্রসঙ্গত, রেশনবণ্টন দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে বালু গ্রেফতার হওয়ার পরেই তাঁর সঙ্গে নাম জড়িয়েছিল শাহজাহানের।


You might also like!