কলকাতা, ৩ জুন : জাতীয় সরোবর শিরোপাপ্রাপ্ত রবীন্দ্র সরোবরের পরিবেশের উন্নতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে সুরক্ষার কাজে নিযুক্ত ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কেএমডিএ। এই অভিযোগ তুলে প্রচার-অভিযানে নেমেছেন পরিবেশবাদীদের একাংশ।
পরিবেশবাদী সোমেন্দ্রমোহন ঘোষ, সুমিতা ব্যানার্জী, সমীর বোস প্রমুখ দাবি করেন,“*রবীন্দ্র সরোবরের বাস্তুতন্ত্র ধ্বংসের দিকে এগোচ্ছে,যারজন্য দায়ী এই সরোবরে আশ্রয় নেওয়া ক্লাবগুলি, যারা গ্রিন ট্রাইব্যুনালের কোন নির্দেশ মানছেনা,
*২০১৬য় ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে বিশেষজ্ঞ কমিটির তৈরি করা জাতীয় সরোবরের পরিবেশের যে মূল্যায়ন করা হয় তাকে কোনও রকম গুরুত্ব না দিয়ে কেএমডিএ একের পর এক নিয়ম ভেঙে চলেছে,
*সরোবরের জল ও জলজপ্রাণীদের স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য যে নিবিড় বনভূমি দরকার তা রক্ষা না করে সেই জমিগুলিতে খেলার উন্নতির নাম করে বেনামে ব্যবসা চালাতে দিচ্ছে কেএমডিএ,
*ক্লাবগুলিকে নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থে সরোবরের বাস্তুতন্ত্র রক্ষায় প্রয়োজনীয় সমস্ত ঘাস ও লতাগাছ যুক্ত জমি বিনষ্ট করে কংক্রিটের চাদরে মুড়ে ফেলতেও প্রশ্রয় দিচ্ছে কেএমডিএ,
*সরোবরের মধ্যে অবস্থিত ক্লাবগুলি পরিবেশের ও বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতি করে যথেচ্ছ শব্দতান্ডব ও আলো সহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে সরোবরকে ব্যবহার করছে। কেএমডিএ নীরব দর্শক,
*জাতীয় সরোবরের পাহারায় নিযুক্ত কেএমডিএ-র কার্যকলাপে অসন্তুষ্ট ও আতঙ্কিত হয়ে সরোবরকে ভালবাসেন অসংখ্য মানুষ এবং বেশ কয়েকজন পরিবেশবিদের কোনও পরামর্শেই কর্ণপাত করেনা কেএমডিএ,
*কেএমডিএ র কার্যকলাপ দেখে মনে হয় তারা কেবল পাহারাদার মাত্র নয় তারাই এই জাতীয় সরোবরটির মালিক,
*সরোবরের মধ্যে আসা রাস্তার শব্দ ও বায়ুদূষণের মাত্রা বৃদ্ধি আটকাতে সাদার্ণ অ্যাভিনিউ বরাবর চার থেকে পাঁচটি মাঝারি থেকে বড় বৃক্ষসারির প্রয়োজন কিন্তু বনসৃজনের এই উপযুক্ত জমিগুলিই ক্রীড়া অ্যাকাডেমিকে ছেড়ে দিচ্ছে আর এই সাধারণ জনগণের মালিকানার জমিতে ব্যক্তিগত ক্রীড়াব্যবসা চালাচ্ছে ক্লাবগুলি
*খেলার বিকাশের জন্য গোটা সরোবর স্টেডিয়াম অব্যবহৃত পড়ে থাকা সত্বেও সেখানে কোনও ক্লাব আগ্রহ দেখাচ্ছেনা। তাতে মনে হয় একটা সার্বিক চক্রান্ত কাজ করছে, যাতে সরোবরটি নষ্ট হয় এবং এখানে আবাসন গড়া যায়,
*এরই ফলস্বরূপ ৮ নং গেটের লাগোয়া কোণের ৫ বিঘার জমিটি একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিকে মাসিক ভাড়ায় ব্যবহার করতে দিয়েছে কে এম ডি এ। অথচ জমিটি দূষণ আটকানোর জন্য সবুজ বৃক্ষপ্রাচীর গড়ে তোলার জন্যে হতে পারত একটি আদর্শ জমি। ওই কোম্পানি এখনই জমিটিকে বিভিন্ন ঘাসমারা বিষ দিয়ে সবুজহীন করে তুলছে,
এর প্রতিবাদ করে বিভিন্ন পরিবেশ সংগঠন ও সাধারণ সচেতন মানুষ গর্জন করছে এবং অবিলম্বে এইসব পরিবেশ বিদ্ধংসী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার দাবী জানাচ্ছে।” লেক লাভার্স ফোরাম এবং মর্নিং ওয়াকার্স গিল্ডের তরফেও রবীন্দ্র সরোবরের পরিবেশ রক্ষার দাবি তোলা হয়েছে।