ঢাকা : রোহিঙ্গা সঙ্কটের চেয়ে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধকে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনেতা এবং আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলি বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে বলে অভিযোগ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার । বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা সংকটের একটি স্থায়ী সমাধানেরও দাবি তুলে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কটের স্থায়ী সমাধান থেকে বিশ্ব নজর সরিয়ে নিয়েছে । নিরাপত্তা পরিষদ ও সাধারণ পরিষদের প্রস্তাব বাস্তবায়নের দাবিও জানিয়েছেন তিনি।
রাষ্ট্রসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে রাষ্ট্রসংঘ সদর দফতরে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে এক উচ্চ পর্যায়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানের পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন। রোহিঙ্গাদের নিজ মাতৃভূমি মায়ানমারে ফিরিয়ে দিতে সম্মিলিত প্রচেষ্টা আরও বহুগুণ বাড়াতে বৈশ্বিক সম্প্রদায় বিশেষ করে আশিয়ান সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। রোহিঙ্গা সঙ্কটের স্থায়ী সমাধানে বিশ্বের সামনে চারটি প্রস্তাব তুলে ধরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “মায়ানমার থেকে উদ্ভূত এই (রোহিঙ্গা) সমস্যার স্থায়ী সমাধান নিশ্চিত করতে সম্মিলিত প্রচেষ্টা আরও বহুগুণ বাড়াতে হবে।” প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর প্রথম ও দ্বিতীয় প্রস্তাবে বলেন, “আমি বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন বিষয়টি সমাধান করে এবং এই দুর্দশাগ্রস্ত ও অসহায় মানুষের জীবনধারণের জন্য মানবিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখে।” তৃতীয় প্রস্তাবে তিনি বলেন, “এই জাতিগত সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ক্রমাগত, ঘৃণ্য নৃশংসতাকারী অপরাধীদের জবাবদিহি নিশ্চিত করে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে।”
শেখ হাসিনা বলেন, “রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া এবং পরিবারের সদস্যদের প্রতি নির্মম হত্যাকাণ্ডের কারণে ১০ লাখ মানুষ বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। এরপর থেকে আমরা আমাদের মাটিতে তাদের আশ্রয় এবং তাদের মৌলিক ও মানবিক সেবা দিয়ে আসছি।” ইস্যুটি এখন স্থবিরতার পর্যায়ে পৌঁছেছে বলেও মনে করেন তিনি। এ নিয়ে তিনি বলেছেন, “গত ছয় বছরে একজনও বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা মায়ানমারে তাদের বাড়িতে ফিরে যেতে পারেনি। বাংলাদেশে দীর্ঘ উপস্থিতি তাদের আরও হতাশার দিকেই ঠেলে দিচ্ছে।”