দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ ধর্মপ্রান ব্যক্তিদের কাছে কৌশিকী অমাবস্যার একটি আলাদাই মাহাত্ম্য রয়েছে। অনেকেই বাড়িতে কালীপুজো করে থাকেন।দশমহাবিদ্যার অন্যতম মহাবিদ্যাশক্তি হল আদ্যাশক্তি। সেই আদ্যাশক্তির আরাধনা করা হয় এই বিশেষ তিথিতে। ভাদ্রমাসের এই তিথিতে তন্ত্রমতে ও শাস্ত্রের রীতি মেনেই কালীপুজো করা হয়ে থাকে।
লোকমুখে প্রচলিত আছে কঠিন ও গুপ্ত সাধনার মাধ্যমে কৌশিকী অমাবস্যা পালন করলে সিদ্ধিলাভ ঘটে, আশাতীত সাফল্য লাভ করতে পারেন ভক্তরা। শুধু তাই নয়, এই অমাবস্যার বিশেষ লগ্নে পুজো করলে স্বর্গ ও নরকের দরজা খুলে যায়।
শাক্ত বাঙালিদের কাছে এই অমাবস্যার গুরুত্ব অপরিসীম, চলতি বছরে সেই তিথি পালনের জন্য ইতি মধ্যেই দলে দলে ভক্তরা ভিড় জমিয়েছে তারাপীঠে। সারা বিশ্ব থেকেই লক্ষ লক্ষ মানুষ এই ময় বীরভূমের জনপ্রিয় ও জাগ্রত দেবীর কাছে নিজের ইচ্ছে ও মঙ্গল কামনা প্রার্থনার জন্য ভিড় জমান প্রতিবছর।
পঞ্চাঙ্গ মতে, এবছর কৌশিকী অমাবস্যা পালিত হবে আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর। শেষ হবে ১৪সেপ্টেম্বর অমাবস্যায়। হিন্দুশাস্ত্রেই শুধু নয়, বৌদ্ধশাস্ত্রেও এই অমাবস্যার গুরুত্ব রয়েছে।দিন দেবী কালীর তথা তারা মায়ের বিশেষ পুজো করা হয়ে থাকে। অনেকেই বাড়িতে কালীপুজো করে থাকেন। সারাদিন-রাত একটা ঘিয়ের প্রদীপ ঠাকুরের সামনে জ্বালিয়ে রাখার নিয়ম প্রচলিত আছে এই দিনটিতে। নৈবেদ্য হিসেবে আতপ চাল, নারকেল, ১০৮টি জবা ফুল, ঘিয়ের প্রদীপ ও ঘি নিবেদন করা হয়ে থাকে।
পৌরাণিক কাহিনি মতে, শক্তিশালী ও পরাক্রমশালী অসুর নিকুম্ভ হত্যা করতে দেবীর শরীরকোষ থেকে আরও এক দেবী সৃষ্টি হয়। শুরু হয় আদ্যাশক্তি ভগবতীর স্তব। সেই থেকে নাম হয় কৌশিকী। দেবী কৌশিকী সৃষ্টির পর ভগবতী কৃষ্ণবর্ণ ধারণ করেন। তারপর থেকে তিনি দেবী কালিকা বা কালী রূপে মর্ত্যে বন্দনা পেয়ে থাকেন। কৌশিকী অবতারে রূপ ধারণ করলে কালীর চার হাত, গলায় নরমুণ্ড, দেহে ব্যাঘ্রচর্ম পরিধান করেন।
কথিত আছে, এই তিথিতেই সিদ্ধিলাভ করেছিলেন সাধক বামাখ্যাপা।সে কারনে কৌশিকী অমাবস্যায় তারা মায়ের সঙ্গে সঙ্গে বামাখ্যাপারও পুজো করা হয়ে থাকে। এই পুজোয় খাঁড়া ও কুশ-কাটা ব্যবহার করা হয়। রীতি অনুযায়ী, তারা মাকে দেওয়া হয় পাঁচ রকমের ফল, ফুল, মিষ্টির ভোগ। তারপরেই সারারাতব্যাপী পুজোর রীতি প্রচলিত রয়েছে, তবে কেবল পুজোই নয় চলে তন্ত্রসাধনাও।
এই বিশেষ দিনে প্রথা অনুসারে দুপুরের ভোগে থাকে শোল মাছ পোড়া। সঙ্গে থাকে ভাত বা পোলাও, পাঁচ রকমের ভাজা, মিষ্টি, শাক, পায়েস ইত্যাদি।