দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ মা দূর্গার অসীম লীলা, কখনো তিনি করুনাময়ী মা আবার কখনো তিনি বিপত্তারনকারী। যে কোনও সঙ্কট থেকে উদ্ধার পেতে মা বিপত্তারিণীর স্মরনাপন্ন হই আমরা তাঁর। বাঙালির ঘরে ঘরে পালিত হয় এই ব্রত। প্রায় সব হিন্দু ঘরের মহিলারাই এই ব্রত পালন করে থাকেন। অম্বুবাচী নিরসনের পর আজ মহারোহে পালিত হচ্ছে এই ব্রত।
এই ব্রত অন্যান্য ব্রতপাঠের থেকে একটু আলাদা। দেবী দুর্গার ১০৮ অবতারের একটি ও দেবী সঙ্কটনাশিনীর এক অনন্য রূপ হলেন দেবী বিপত্তারিণী। সাধারণত, যে কোনও সঙ্কট থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য এই পুজো ভক্তিভরে পালন করা হয়ে থাকে।
প্রত্যেক বছর আষাঢ় মাসের রথযাত্রা থেকে শুরু করে উল্টোরথের মধ্যে শনিবার ও মঙ্গলবার বিপত্তারিণী ব্রত উত্সব পালন করা হয়ে থাকে।
ব্রতের উদ্দেশ্যঃ এই গুরুত্বপূর্ণ ব্রত ও উত্সবে পালন করার জন্য রয়েছে বিশেষ নিয়ম। এই নিয়মগুলি অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করা উচিত। এদিন মঙ্গলবার ও শনিবার সংসার ও পরিবারের মঙ্গল চেয়ে বেশ কিছু নিয়ম পালন করা হয়।
ব্রত পালনের নিয়মাবলীঃ এই ব্রত পালন করার আগের দিন নিরামিষ খাবার খাওয়ার বিধি রয়েছে। পুজো শেষে ১৩টি লুচি, ১৩ রকমের ফল, ১৩টি সুপারি, ১৩ রকমের ফুল, একটি নৈবেদ্য, ১৩ গাছি গিঁট দেওয়া লাল সুতো, ১৩টি দুর্বা, ১৩টি পান, ডাব, আমপল্লব দিয়ে পুজো করা হয়।মঙ্গলবার ব্রত উত্সব পালন করলে লাল সুতোয় ১৩টি গিঁট দেওয়া বাধ্যতামূলক। তাতে ১৩টি দুর্বাও যোগ করা উচিত।
এই ব্রত পালনকারীর সঙ্গে সঙ্গে পরিবারের সকলেরই নিরামিষ আহার করা উচিত। শুধু তাই নয়, ব্রত শেষ হওয়ার পর খাদ্য গ্রহণ করার পর ১৩টা করে খাওয়ার বিধি রয়েছে।
এই পুজো ও ব্রতের বিশেষ নিয়ম হল, সব কিছুই ১৩টা করে নিবেদন করা । ব্রতের আচার নিয়ম অনুসারে সবকিছুই উত্সর্গ করা হয় ১৩টি করে। তেরো রকম নৈবেদ্য সাজানো। এদিন কোনওভাবেই চাল, মুড়ি বা চিঁড়ে খাওয়া চলবে না।
ব্রতের ফলাফলঃ এদিন পুজোতে মায়ের উদ্দেশ্যে ফল ও পুজা সামগ্রীর সঙ্গে উৎসর্গ করা হয় লাল রঙের তাগা বা ডুরি। এই তাগা পুরুষদের ডান ও মহিলাদের বাম হাতে ধারণ করা উচিত। হিন্দুদের বিশ্বাস, এই লাল তাগা বেঁধে রাখলে সব রকম স্বামী-সন্তানের উপর সব রকম বিপদ থেকে দূরে রাখা সম্ভব।