Festival and celebrations

11 months ago

Durga Puja 2023 : ক্ষমার প্রলেপ দিয়ে হত্যাকারীর পুজোয় সামিল হচ্ছে খোদ অসুরেরই বংশধরেরা

Durga Puja (Symbolic Picture)
Durga Puja (Symbolic Picture)

 

দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ মা দুর্গার মূর্তি কল্পনা করলেন চোখের সানে যে দৃশ্যকল্প ভেসে ওঠে তা খানিকটা এমন- দু'হাতে ত্রিশূল হাতে মহিসাসুরের পক্ষে পদাঘাত করে পলক ফেলা মুহুর্তে ত্রিশূলে বিদ্ধ করছেন মা পরাক্রমী মহিসাসুরকে। যুগ যুগ ধরে মা দুর্গাকে শক্তির প্রতীক ও মহিসাসুর কে আশুভ শক্তির প্রতীক হিসাবে আমরা কল্পনা করে আসছি। 

অনেকেরই জানা নেই হয়ত, উত্তরের পিছিয়ে থাকা এক জনজাতি হল ‘অসুর’। দীর্ঘদিন আদিবাসী জনজাতির এই মানুষেরা বিশ্বাস করে আসছেন, দেবীদুর্গা তাঁদের পূর্বপুরুষ মহিষাসুরকে বধ করেছিলেন। সেই কারণে দুর্গাপুজোয় তাঁরা শামিল হতেন না। দুর্গাপুজোর চারদিন নিজেদেরকে ঘরবন্দি করে রাখতেন অসুর সম্প্রদায়ের আট থেকে আশি সকলেই। কিন্তু সময় পালটেছে। আর তাই এবার দুর্গাপুজোয় শামিল হচ্ছেন অসুর সম্প্রদায়ের মানুষেরাও। দুর্গাপুজো তো শুধুই বৈদিক দেবীর বন্দনা নয়,এটি একটি সামাজিক উৎসবও বটে। আর তাই উৎসবের যে রোশনাই, তার টানেই শারদোৎসবে শামিল হচ্ছেন অসুর জনজাতির সাধারণ মানুষ।

একসময় দুর্গাপুজোর সময় এই জনজাতির মানুষেরা নিজেদের ঘরে বন্দী করে রাখতেন, কিন্তু কালের সেই করাল সময় কাটিয়ে তারাও ধীরে ধীরে সামিল হচ্ছেন এই পুজোয়। এই সম্প্রদায়ের মানুষেরা সক্রিয় ভাবে যোগ দিচ্ছেন দুর্গোৎসবে।উল্লেখ্য, শুধু মাঝের ডাবরি চা বাগান নয়, উত্তরবঙ্গের নাগরাকাটা, বানারহাট, মেটেলি-সহ কিছু এলাকায় অসুর সম্প্রদায়ের মানুষেরা বসবাস করেন। মূলত চা বাগানেই কাজ করেন এই এই জনজাতির মানুষেরা।

যেহেতু পুরাণ আর ইতিহাস এক নয়, তাই মহিষাসুর বধের ঘটনাকে ঐতিহাসিক বলে ধরে নেওয়ার বিষয়ে বিষয়ে বিতর্ক আছে। তবে বিশেষজ্ঞদের বক্তব‌্য, মিথ ইতিহাস পূর্ব ইতিহাসের প্রতীকী ইশারা। তাই বঙ্গে আর্য আগমন ও ভূমিসন্তান অনার্যদের সঙ্গে তাদের সংঘাত ও অনার্য প্রতিরোধের আখ‌্যানের নিরিখে মহিষাসুর বধের ভিন্ন বয়ান প্রচলিত ভূমিসন্তানদের মধ্যে। বিশেষত অসুর জনজাতি এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ‌্য।তবে অসুর সম্প্রদায়ের মানুষেরা যে অনার্য জনগোষ্ঠীর মানুষ তা নিয়ে দ্বিমত নেই কারও।

ঐতিহাসিকদের মতে, অসুর সম্প্রদায়ের কথা বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিলে উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু পৌরাণিক অসুরের সঙ্গে এই অসুর সম্প্রদায়ের কোনও যোগসুত্র পাওয়া যায়নি। তবে এটা ঠিক এই অসুর সম্প্রদায়ের মানুষদের বিশ্বাস, তারা দুর্গার হাতে বধ হওয়া অসুরের বংশধর। সেই কারণে তারা দুর্গা ঠাকুরের মুখ দেখতেন না। শুধু তাই নয়, দুর্গা পুজোর সময় অসুর সম্প্রদায়ের মানুষেরা শোকের গান গাইতেন।উল্লেখ্য, সেই গান গাওয়ার রীতি আজও চালু আছে।

You might also like!