দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতে সরকারি ছুটি না হলেও মহালয়া এক গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় আচার হিসেবে পালন করা হয়। এই তিথি পিতৃপক্ষের সমাপ্তি এবং দেবীপক্ষের সূচনার প্রতীক। বিশেষত দেশের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলি—পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা ও আসামে মহালয়া অত্যন্ত শ্রদ্ধা ও গুরুত্বের সঙ্গে উদযাপিত হয়।২০২৫ সালের মহালয়া পালিত হবে ২১শে সেপ্টেম্বর,রবিবার। হিন্দু শাস্ত্র অনুসারে, এই দিনে পূর্বপুরুষরা পিতৃলোক থেকে পৃথিবীতে নেমে আসেন এবং তাঁদের জন্য তর্পণ করলে তুষ্ট হন। এর ফলে পরিবারে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে। কথিত আছে, মহাভারতের নায়ক কর্ণ স্বর্গে প্রবেশ করতে পারেননি, কারণ জীবদ্দশায় তিনি পূর্বপুরুষদের জন্য তর্পণ করেননি। পরে পৃথিবীতে ফিরে এসে তর্পণ সম্পন্ন করার পর তিনি স্বর্গে স্থান লাভ করেন। এই কিংবদন্তির মাধ্যমেই মহালয়া আচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
মহালয়া মানেই ভোরবেলা বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠে ‘মহিষাসুর মর্দিনী’ শোনা। অল ইন্ডিয়া রেডিও-র এই অনুষ্ঠান প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে মানুষের হৃদয়ে অনুরণিত হচ্ছে। দেবী দুর্গার মহিষাসুরের ওপর বিজয়ের মহিমা এই অনুষ্ঠানে ফুটিয়ে তোলা হয়। তবে, যেভাবেই দেখা হোক, মহালয়া আসলে এক অমাবস্যা তিথি। যা রবিবার দিনভর রয়েছে। ছাড়বে রাত ১২টা ২৫ পর্যন্ত। তবে, সূর্যোদয়ের কথা মাথায় রেখে এই তর্পণের কাজ ভোরবেলায় শেষ করেন লোকজন।
এই বিশেষ তিথিতে তর্পণ উপলক্ষে গঙ্গার ঘাটগুলোতে তিলধারণের জায়গা পর্যন্ত থাকে না। যাঁরা গঙ্গায় বা জলাশয়ে যান না, তাঁরা বাড়িতে পবিত্র জলপাত্র ব্যবহার করে তর্পণ সারেন। এজন্য তাঁরা ভোরবেলা স্নান করে শুদ্ধ বস্ত্র পরে দক্ষিণ দিকে মুখ করে বসেন। একটি পাত্রে গঙ্গাজল, তিল, ফুল ও কুশ নেন। পিতৃনাম ও গোত্র উচ্চারণ করে পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে তর্পণ সারেন।
বাংলার প্রতিমা শিল্পীরা এই বিশেষ তিথিতেই দেবী দুর্গার প্রতিমার চক্ষুদান করেন। যাতে দেবীর মধ্যে প্রাণসঞ্চার হয় বলেই শিল্পীদের বিশ্বাস। অনেকে এই তিথিতে বিশেষ চণ্ডীপাঠের আয়োজন করে থাকেন।