দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় দুই বছর ধরে হিংসায় জর্জরিত মণিপুরে অবশেষে পা রাখতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ১৩ মে রাজ্য সফরে যাচ্ছেন তিনি। তবে তার আগেই বিজেপিকে বড় ধাক্কা দিল কংগ্রেস। রাজ্যের তিনজন প্রভাবশালী নেতা দল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। মোদির সফরের প্রাক্কালে এমন ঘটনা রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
সোমবার দিল্লিতে গিয়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন বিজেপির দুই প্রাক্তন বিধায়ক ওয়াই সুরচন্দ্র সিং, এল রাধাকিশওর সিং এবং বিজেপির শীর্ষ নেতা উত্তমকুমার নিংথৌজাম। এআইসিসি সদর দপ্তরে দুই প্রাক্তন বিধায়ক এবং বিজেপির শীর্ষ পদাধিকারিকে দলে স্বাগত জানান কংগ্রেসের রাজ্য পর্যবেক্ষক সপ্তগিরি শংকর উলাকা এবং মণিপুর কংগ্রেস সভাপতি কে মেঘচন্ত্র সিং। কংগ্রেসের দাবি, মণিপুরজুড়ে যে প্রবল অশান্তি এবং অসন্তোষ তৈরি হয়েছে, বিজেপি নেতাদের এই দলত্যাগ সেটারই বহিঃপ্রকাশ।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের মে মাস থেকে জাতি সংঘর্ষে জ্বলছে মণিপুর। কুকি-মেতেই সংঘাতের বলি হয়েছেন বহু মানুষ। শান্তি ফেরাতে লাগাতার চেষ্টা হলেও দফায় দফায় অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে উত্তর-পূর্বের রাজ্যটি। ঘরে বাইরে চাপের মুখে গত ৯ ফেব্রুয়ারি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বিরেন সিং। ১৩ ফেব্রুয়ারি সে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয়। এহেন পরিস্থিতিতে বিরোধীরা বারবার দাবি করেছেন, প্রধানমন্ত্রী নিজে যেন মণিপুরে যান। সেখানকার মানুষের দুরাবস্থার ছবি নিজের চোখে দেখে আসুন। কিন্তু দু’বছর কেটে গেলেও মণিপুরে পা রাখেননি প্রধানমন্ত্রী। মণিপুরে শেষবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পা পড়েছিল ২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি মাসে। এবার প্রধানমন্ত্রী সে রাজ্যে পা রাখতে চলেছেন।
কংগ্রেস ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করতে শুরু করেছে। কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতা বলেন, "বিজেপি যেখানে মানুষের ভরসা হারাচ্ছে, সেখানে কংগ্রেসই একমাত্র বিকল্প। মণিপুরে শান্তি ফেরাতে আমাদের পরিষ্কার রূপরেখা আছে। মানুষ সেটা বুঝতে পারছেন, তাই নেতারা আমাদের দলে আসছেন।" সঙ্গে কংগ্রেস রাজ্য নেতৃত্ব জানিয়েছে, মোদির সফরের সময় রাজ্যজুড়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ, স্মারকলিপি পেশ এবং মানববন্ধনের মতো কর্মসূচি নেওয়া হবে। তারা চায় প্রধানমন্ত্রী হিংসায় ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলুন এবং প্রতিশ্রুতি দিন দ্রুত সমাধানের।
জানা গিয়েছে, আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর মিজোরাম সফরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানকার রেললাইন উদ্বোধনের পর তিনি মণিপুরের উদ্দেশে রওনা হতে পারেন। রাজধানী ইম্ফল এবং হিংসা বিধ্বস্ত চূড়াচাঁদপুরে তাঁর জনসভা করার সম্ভাবনা থাকলেও, এখনও কিছুই চূড়ান্ত নয়। সরকারিভাবে প্রধানমন্ত্রীর সফরসূচি এখনও ঘোষণা করা হয়নি। এরই মাঝে মণিপুরে নতুন সরকার গঠনের জল্পনা ঘনীভূত হচ্ছে। আর সেই জল্পনার আবহেই বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিলেন একাধিক নেতা।