দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ জ্যৈষ্ঠ মাসের অমাবস্যা তিথিতে এই ফলহারিণী কালীপূজা অনুষ্ঠিত হয়। মোক্ষফল প্রাপ্তির জন্য এই অমাবস্যার বিশেষ মাহাত্ম্য আছে ৷ দক্ষিণেশ্বর থেকে কালীঘাট-তারাপীঠে ফলহারিণী কালীপুজো করা হয়। অনেক গৃহস্থ বাড়িতেও হয় এই পুজো। তারাপীঠে তারা মাকে এদিন ফলের মালার সাজে সাজানো হয়।
এইদিন মাকে বিভিন্ন মরশুমি ফল দিয়ে পুজো করা হয়। জ্যৈষ্ঠমাসে আম, জাম, লিচু, কাঁঠালের মতো নানা রকম মরশুমি ফল পাওয়া যায়। এ দিন মনস্কামনা পূর্ণ করতে মা কালীকে ফল নিবেদন করেন ভক্তরা। বলা হয় মানত করা এই ফল ইচ্ছে পূরণ না হওয়া পর্যন্ত খাওয়া নিষেধ। ইচ্ছে পূরণের পর সেই বিশেষ ফলটি গঙ্গায় ভাসিয়ে পুজোর আয়োজনের পরামর্শ দেন প্রাজ্ঞরা। কিন্তু এই অমাবস্যাকে কেন ফলহারিণী অমাবস্যা বলা হয় জানেন? জেনে নিন, এই দিনটির মাহাত্ম্য।
বলা হয়, বলা হয় জীবকে তিনি যা দেন, তা তাদের কর্মফল অনুসারেই দেন। মা তারার বিশেষ রূপ নাকি ফলহারিণী দেবী এই তিথিতে দেবীর পুজো-আরাধনায় অশুভ কর্মফলের বিনাস হয়। বদলে শুভ ফল প্রাপ্ত হয়। তাই এই অমাবস্যা তিথিতে দেবী কালী পূজিতা হন ফলহারিণী কালী নামে। এই অমাবস্যার তিথিতে মায়ের পুজো ভালো ভাবে সম্পন্ন করলে, মা সমস্ত অশুভ ফলের নাশ করে শুভ ফলের প্রাপ্তি ঘটান ৷ সমস্ত অশুভ কর্মফল হরণ করেন বলেও এই অমাবস্যার কালীপুজোরে ফলহারিণী কালীপুজো বলা হয়।
এই দিন পরমহংস রামকৃষ্ণ দেব মা সারদাদেবীকে ষোড়শী রূপে পুজো করেছিলেন।তাই রামকৃষ্ণ মঠ ও আশ্রমে এই ফলাহারিণী কালীপুজো ষোড়শী পুজো নামে পরিচিত। শ্রীরামকৃষ্ণদেব তাঁর মোক্ষপ্রাপ্তির জন্য এই নিয়মে পুজো করলেও দিনটিতে অনেকেই নানা ফল দিয়ে মা কালীর পুজো করে থাকেন। ফল এখানে প্রতীক তা আসলে সাধকের কর্ম-রূপ ফল। দেবীর চরণে এদিন ভক্ত তাঁর জীবনের সমস্ত কর্মফল নিবেদন করেন। পুজোর সময়ে অবশ্যই একটি তেলের প্রদীপ জ্বালাতে ভুলবেন না।
বলা হয়, এই দিন মায়ের বিশেষ পুজোয় সকলের বিদ্যা, কর্ম ও অর্থ ভাগ্যের উন্নতি ঘটে। সাংসারিক দাম্পত্য জীবন ও নানা ক্ষেত্রে মানুষ যে বাধার সম্মুখীন হন, সে বাধা কেটে যায় এবং মায়ের কৃপায় অভিষ্ঠ ফল লাভ হয়। সেই সঙ্গে মানসিক ও আধ্যাত্মিক দিকের জাগরণ ঘটে এই বিশেষ তিথিতে।