Country

4 hours ago

Umarangso Coal Mine Accident: উমরাংসো কয়লা খাদান বিপৰ্যয় : ষষ্ঠ দিন উদ্ধার স্থানীয় বাসিন্দা দ্বিতীয় শ্রমিকের মৃতদেহ

Umarangso Coal Mine Accident
Umarangso Coal Mine Accident

 

উমরাংসো (অসম), ১১ জানুয়ারি  : অসমের অন্যতম পাহাড়ি জেলা ডিমা হাসাওয়ের অন্তর্গত উমরাংসোর তিন কিলো কালামাটির প্লাবিত ‘১৯ নম্বর আসাম কয়লা কোয়ারি’ থেকে আজ শনিবার সকালে দ্বিতীয় শ্রমিক, স্থানীয় (উমরাংসো) বাসিন্দা বছর ২৭-এর লিগেন মগরের মৃতদেহ উদ্ধার করেছেন ভারতীয় সেনা এবং এনডিআরএফ-এর অভিযানকারীরা।

খাদান বিপর্যয়ের ষষ্ঠ দিন আজ (শনিবার) সকাল প্ৰায় ৭.৩৬ মিনিট নাগাদ ভারতীয় সেনা এবং এনডিআরএফ-এর ১ নম্বর ব্যাটালিয়নের ডুবুরি লিগেন মগরের মৃতদেহ উদ্ধার করেছেন। নিহত শ্রমিককে ২৭ নম্বর উমরাংসোর কালাপানি বস্তির বাসিন্দা ২৭ বছর বয়সি লিগেন মগর বলে শনাক্ত করা হয়েছে। লিগেনের মৃতদেহটি পরবর্তী আইনি ব্যবস্থার জন্য উমরাংসো থানার পুলিশ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেছেন অভিযানকারীরা।

এনডিআরএফ-এর টিম কামান্ডার ইন্সপেক্টর রোশন কুমার সিং জানান, আজ সকালে প্লাবিত খাদানের গহ্বরে প্রবেশ করে জলে ভাসমান একটি মানবদেহ দেখে তাকে উদ্ধার করে উপরে নিয়ে আসেন ডুবুরিরা। পারে নিয়ে আসার পর তাঁকে লিগেন মগর বলে শনাক্ত করা হয়।

প্ৰসঙ্গত, দুর্ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্ৰী ড. হিমন্তবিশ্ব শৰ্মা খাদানে আবদ্ধ শ্ৰমিকদের যে তালিকা প্ৰকাশ করেছিলেন, তাতে মোট নয় (৯) জন শ্ৰমিকের নাম ছিল। এই নয়জনের মধ্যে এখন পৰ্যন্ত দুই শ্ৰমিকের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী অভিশপ্ত খাদানে এখনও আবদ্ধ রয়েছেন বাকি সাত (৭) শ্রমিক।

এর আগে দুর্ঘটনার তৃতীয় দিন (৮ জানুয়ারি) সকাল প্ৰায় পৌনে নয়টা নাগাদ ১ নম্বর ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স এবং ২১ নম্বর আৰ্মি প্যারা ডাইভার্স-এর জওয়ানরা জলে ভরতি গভীর খাদান থেকে প্ৰায় ৪২ বছর বয়সি নেপালের উদয়পুর জেলার অন্তর্গত তক্ষশিলা থানাধীন রামপুর (দুমন্না-২ ভিজপুর)-এর বাসিন্দা জনৈক মান হরভজন শেরচের ছেলে রাজেন শেরচ (গঙ্গাবাহাদুর শ্রেষ্ঠা)-এর মৃতদেহ উদ্ধার করেছিলেন। ৮ জানুয়ারির পর ৯ এবং ১০ জানুয়ারির অভিযানে কোনও সাফল্য আসেনি।

প্রসঙ্গত, গতকাল সারাদিন উদ্ধার অভিযান চালানোর পর রাতে তা বন্ধ করে দেওয়া হলেও আজ ভোর থেকে ফের অভিযান শুরু হয়েছে। তবে গোটা রাত কোল ইন্ডিয়া, নৌ-সেনা এবং ওএনজিসির পাঁচটি পাম্পের সাহায্যে খাদান থেকে জল নিষ্কাশনের কাজ চলছে। এতটা পাম্পের সাহায্যে প্ৰতি ঘণ্টায় ১,৯৩,৬০০ লিটার জল নিষ্কশন হচ্ছে। এখন পৰ্যন্ত জলস্তর কমেছে ৬ মিটার, জানিয়ে এনডিআরএফ-এর ইন্সপেক্টর রোশন কুমার বলেন, দিনরাত ২৪ ঘণ্টা অপারেশন চলছে।

উল্লেখ্য, গত সোমবার (৬ ডিসেম্বর) সকাল প্রায় ৯.০০টা নাগাদ অসমের অন্যতম পাহাড়ি জেলা ডিমা হাসাও-এর অন্তৰ্গত অসম-মেঘালয় আন্তঃরাজ্য সীমান্তবর্তী উমরাংসো থানা থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে প্রত্যন্ত তিন কিলোর কালাপানি বস্তির জঙ্গলে প্রায় ৩০০ ফুট গভীর ‘১৯ নম্বর আসাম কয়লা কোয়ারি’ (কয়লা খাদান)-তে আচমকা বাইরে থেকে হড়কা বানের জল হু হু করে দ্রুতগতিতে ঢুকে পড়লে বেশ কয়েকজন শ্ৰমিক আবদ্ধ হয়ে পড়েন। সরকারিভাবে আবদ্ধদের সংখ্যা নয় (৯) বলে জানানো হয়েছে।

৭ জানুয়ারি থেকে আবদ্ধ শ্রমিকদের উদ্ধার অভিযানে নামে ভারতীয় সেনা, আসাম রাইফেলস, এনডিআরএফ এবং এসডিআরএফ-এর ডুবুরিরা। উদ্ধার অভিযানে সাফল্য আসছে না দেখে নামানো হয় ভারতীয় সেনাবাহিনীর স্পেশাল রিলিফ টাস্ক ফোৰ্স ও ২১ প্যারা ডাইভার্স, বায়ুসেনা, নৌ-সেনা, কোল ইন্ডিয়া, ৩১ নম্বর আসাম রাইফেলস পাথফাইন্ডার ইউনিটকে।

গত কয়দিন প্ৰচণ্ড প্ৰাকৃতিক দুৰ্যোগের মধ্যে খাদানে আবদ্ধ সবাইকে উদ্ধার করতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সম্মিলিতভাবে অত্যাধুনিক সরঞ্জাম এবং অভিজ্ঞ ডুবুরির দল নিয়ে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর স্পেশাল রিলিফ টাস্ক ফোৰ্স ও প্যারা ডাইভার্স, বায়ুসেনা, নৌ-সেনা, ওএনজিসি, ৩১ নম্বর আসাম রাইফেলস পাথফাইন্ডার ইউনিট, এনডিআরএফ এবং এসডিআরফ-এর বিশেজ্ঞরা।এদিকে খাদানের জলে আর্সেনিক, বিষাক্ত পারদ, ম্যাঙ্গানিজ, নিক্যাল, শিষা, তামা এবং লোহার মিশ্রণ পাওয়া গেছে গুয়াহাটির জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি (পিএইচই) বিভাগের পরীক্ষায়।উল্লেখ্য, শ্রমিকদের উদ্ধার অভিযানে সব থেকে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে কয়লা খাদানে জল জমা হওয়ার ঘটনায়। বর্তমানে খাদানে জলস্তর প্রায় ৩০০ ফুটের কাছাকাছি। একদিকে পাঁচটি পাম্প দিয়ে জল নিষ্কাশন করা হচ্ছে, অন্যদিকে পুনরায় ভূগর্ভের জল এসে ভরতি হয়ে যাচ্ছে। সাইক্লিং পদ্ধতি চলছে নিষ্কাষণ ও জমায়েত হওয়ার ঘটনা। ড্রোন ক্যামেরার সাহায্যে সার্ভে করে ধরা পড়েছে, এই কয়লা খাদানের আশপাশ এলাকায় আরও ১০টি কয়লা খনি রয়েছে। আর ভূগর্ভ দিয়ে এ সব খনির সঙ্গে অভিশপ্ত খাদানের লিংক রয়েছে। যার দরুন জল নিষ্কাশন করার পর সঙ্গে সঙ্গে লাগোয়া খনি থেকে এই খনিতে এসে জল ভরে যাচ্ছে। তাছাড়া খানডং ড্যাম এবং কপিলি নদীর জলও ভিতর দিয়ে আসাম কয়লা খাদানে ঢুকছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

You might also like!