দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: দেশের অন্যতম বৃহৎ তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা টাটা কনসাল্টেন্সি সার্ভিস (TCS) চলতি অর্থবর্ষেই প্রায় ১২ হাজার কর্মী ছাঁটাই করতে চলেছে। সংস্থার তরফে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, তাদের গ্লোবাল কর্মীবাহিনীর প্রায় ২ শতাংশ ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) ক্রমবর্ধমান প্রভাব এবং প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের সাথে সামঞ্জস্য রাখতে গিয়েই এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। টিসিএস-এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, জুন ২০২৫ পর্যন্ত সংস্থায় কর্মরত ছিলেন প্রায় ৬ লক্ষ ১৩ হাজার কর্মী। সেই হিসেবে প্রায় ১২ হাজার কর্মী এই ছাঁটাইয়ের ফলে চাকরি হারাতে চলেছেন। সূত্রের খবর, শুধুমাত্র জুনিয়র স্তরের কর্মী নন, বরং মধ্যম ও উচ্চপদস্থ স্তরের কর্মীদেরই ছাঁটাইয়ের আওতায় আনা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্ত টিসিএসের দীর্ঘমেয়াদি কর্মী-গঠনের কৌশলেরই অংশ বলে মনে করা হচ্ছে।
গত কয়েক বছরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) এবং অটোমেশনের অগ্রগতির ফলে একাধিক সংস্থায় কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। টিসিএস-ও তার ব্যতিক্রম নয়। সংস্থার অন্দরেই বিভিন্ন স্তরে এআই-এর ব্যবহার দ্রুতগতিতে বাড়ছে। সেই কারণে কিছু মানবসম্পদ অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়ছে। তবে সংস্থার সিইও ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর কে কৃতিবাসন জানিয়েছেন, “ছাঁটাইয়ের কারণ শুধুমাত্র এআই নয়। এটি একটি সামগ্রিক কৌশলগত পরিবর্তন। ধাপে ধাপে ছাঁটাই করা হবে, এবং যাঁদের চাকরি যাবে, তাঁদের অন্যত্র কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য সংস্থা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে।”কৃতিবাসন আরও জানিয়েছেন, এই ছাঁটাই এইচআর নীতিমালা অনুযায়ীই হবে এবং সংস্থা কর্মীদের পাশে থাকবে। ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের জন্য:
• অন্যান্য সংস্থায় সুপারিশ ও আবেদন করার সুযোগ;
• বিমার কভার যথাসম্ভব বৃদ্ধি;
• প্রয়োজনে মানসিক কাউন্সেলিং-এর ব্যবস্থাও থাকবে।
এই ছাঁটাই প্রক্রিয়া আরও একবার দেখিয়ে দিল, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার রমরমা যে ভবিষ্যতে মানবসম্পদের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলতে চলেছে, তা আর অস্বীকার করার উপায় নেই। যদিও টিসিএসের মতো সংস্থা কর্মীদের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিচ্ছে, তবে প্রযুক্তিগত রূপান্তরের জোয়ারে চাকরির নিরাপত্তা যে আরও অনিশ্চিত হয়ে উঠছে, সেটাও স্পষ্ট।