দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: হুগলির শ্রীরামপুরে ভয়াবহ এক ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল। বিজেপির মণ্ডল সভাপতি মনোজ চক্রবর্তীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হওয়ায় এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। ঘরে মৃতদেহ উদ্ধারের পরই প্রশ্ন উঠেছে—এটি আত্মহত্যা, নাকি পরিকল্পিত খুন? ঘটনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে পারিবারিক অশান্তি ও বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ, এমনটাই দাবি মৃতের স্ত্রী ও প্রতিবেশীদের।
মঙ্গলবার সকালে হঠাৎই দীনবন্ধু চ্যাটার্জি লেনের এক বাড়ি থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় মনোজ চক্রবর্তীর দেহ। ৪৫ বছর বয়সী মনোজ শ্রীরামপুর পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছিলেন। কর্মসূত্রে তিনি উত্তরপাড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে কাজ করতেন। পাশাপাশি, তিনি বিজেপির একজন সক্রিয় কর্মী ও স্থানীয় মণ্ডল সভাপতি ছিলেন। দেহ উদ্ধার হওয়ার পর খবর যায় শ্রীরামপুর থানায়। পুলিশ এসে দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। ঘরটি সিল করে তদন্ত শুরু হয়েছে।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মনোজ চক্রবর্তী বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন বলে দাবি করেছেন তাঁর স্ত্রী বন্দনা চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “এক মহিলার সঙ্গে স্বামীর সম্পর্ক ছিল—তা বহুদিন ধরেই জানতাম। অনেক তথ্য-প্রমাণও আমার কাছে রয়েছে। আমি বহুবার ওকে ওই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে বলেছিলাম, কিন্তু সে শুনত না। বরং উলটে আমাকেও, এমনকি আমাদের ছেলেকেও মারধর করত।” বন্দনার এই দাবিকে আরও জোরালো করেছেন মনোজের প্রতিবেশীরা। একজন প্রতিবেশী জানান, “গতকাল রাতে মনোজবাবুর ছেলে আমার বাড়িতে ছিল। ওর মা রেখে গিয়েছিলেন। রাতে মনোজবাবু ও তাঁর স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হচ্ছিল, এমন শব্দ আমরা শুনতে পাই। বাসনপত্র ছোঁড়ার শব্দও এসেছিল। তবে সকালে এই ঘটনা শুনে আমরা হতবাক।”
ঘটনাটি আত্মহত্যা না খুন—তা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত মৃত্যুর প্রকৃত কারণ বলা সম্ভব নয়। এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, “ঘটনাস্থলে কিছু তথ্য আমরা সংগ্রহ করেছি। স্ত্রীর অভিযোগ, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই সংসারে অশান্তি চলছিল। আমরা সমস্ত দিক খতিয়ে দেখছি—ঘরটি ভেতর থেকে বন্ধ ছিল কিনা, কারও জোরপূর্বক প্রবেশের সম্ভাবনা ছিল কিনা, দেহে আঘাতের কোনও চিহ্ন রয়েছে কিনা, সবই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
বিজেপি শিবিরে মনোজ চক্রবর্তীর আকস্মিক মৃত্যু ঘিরে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। দলের স্থানীয় নেতৃত্ব জানিয়েছেন, “মনোজবাবু একজন নিষ্ঠাবান কর্মী ছিলেন। তাঁর মৃত্যু আমাদের জন্য বড় ক্ষতি। তবে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ দ্রুত উদঘাটন হোক—আমরা সেটাই চাই।”