দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ- দেবতাদের সাথে অসুরদের দ্বন্দ্ব লেগেই থাকে। আর সেই দ্বন্দ্ব-এ মাঝে মধ্যে প্রাণ হারাতে হয় অসুরদের। কিন্তু দেবতাদের বিরুদ্ধে লড়াই বজায় রাখতে অসুরদের কখনই মৃত্যু হয় না। তবে এর নেপথ্যে রয়েছে এক গুরুর সঞ্জীবনী মন্ত্র।
তিনি হলেন গুরু শুক্রাচার্য। শুক্রাচার্য হলেন ঋষি ভৃগু ও কাব্য/দিব্য মাতার পুত্র। সপ্তর্ষিদের অন্যতম ঋষি তিনি। তিনি অসুর ও দানবদের গুরু হিসেবে শিক্ষা দিয়েছিলেন। তাই তিনি দৈত্য গুরু নামেও পরিচিত ছিলেন। অন্যদিকে শুক্রাচার্যকে হিন্দু ধর্মের সর্বোচ্চ শিক্ষকও বলা হয়।
হিন্দু পুরাণ অনুসারে, তাঁর কাছে ছিল সঞ্জীবনী মন্ত্রের জ্ঞান। এই জ্ঞানই একমাত্র মৃতদেহের মধ্যে প্রাণের সঞ্চার করতে পারে। যুদ্ধক্ষেত্রে শক্তিশালী অসুররা নিহত হলে তাঁদের দেহে প্রাণ সঞ্চার করতেন তিনি। এভাবেই অসুরদের পুনরায় যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করতেন।
তবে এই জ্ঞান অর্জন অতটাও সহজ নয় অর্জন করা। কোন গ্রন্থে লেখা নেই। এটি কেবল বর লাভের মাধ্যমেই সম্ভব ছিল। এর জন্য কঠিন তপস্যা করতে লাগলেন তিনি।
দেবতা ও অসুরদের মধ্যে প্রায়ই যুদ্ধ হতো। ফলে বহু অসুর প্রাণ হারান। এটি গুরু শুক্রাচার্যকে গভীরভাবে শোকাহত করেছিল। তাই তিনি কঠোর তপস্যা করতে শুরু করলেন। ভগবান শিবের কাছে সঞ্জীবনী মন্ত্র লাভের জন্য গভীর বনে গিয়েছিলেন। তিনি এই আশীর্বাদ লাভের জন্য গাছের মধ্যে উল্টো ঝুলে কঠিন তপস্যা করতে শুরু করলেন। এমনকী তিনি খাবার বা পানীয়ও পান করেন নি। অন্যদিকে তাঁর এমন কঠিন ধ্যান দেখে চিন্তিত হয়ে পড়লেন দেবকুল। তাই ধ্যান বন্ধ করতে দেবতা ইন্দ্র তাঁর মেয়ে জয়ন্তীকে পাঠালেন। শুক্রাচার্য যেহেতু গাছ থেকে উল্টো হয়ে ঝুলে ধ্যান করত তাই জয়ন্তী সুযোগ বুঝে জ্বলন্ত পাতায় তীব্র ঝাঁঝের লঙ্কা মিশিয়ে দিলেন। লঙ্কার কারণে শুক্রের খুব অস্বস্তি হয়েছিল শ্বাস নিতে। চোখমুখ প্রচন্ড জ্বালা করতে শুরু করেছিল। কিন্তু তবুও তিনি থামলেন না। কষ্ট নিয়েও তাঁর তপস্যা চালিয়ে যান। ভক্তির প্রতি এমন নিষ্ঠা দেখে জয়ন্তী শুক্রাচার্যের প্রেমে পড়লেন। পরবর্তীকালে এই জয়ন্তী হয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী। অন্যদিকে ভক্তের এমন তপস্যা দেখে ভগবান শিব মুগ্ধ হন। তাই, বর হিসেবে শিবজি তাকে সঞ্জীবনী মন্ত্র দিয়েছিলেন।