West Bengal

4 months ago

Mamata Banerjee: প্রবল গরমেও প্রচারে ঝড়! একাই একশোর পথে মমতা

Mamata Banerjee (File Picture)
Mamata Banerjee (File Picture)

 

দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ একাই একশো! নির্বাচনী জনসভা, রোড-শো’র সংখ্যায় দ্রুত সেঞ্চুরি-র দিকে এগিয়ে চলেছেন তৃণমূলনেত্রী। গত ৩১ মার্চ কৃষ্ণনগরের ধুবুলিয়ায় দলীয় প্রার্থী মহুয়া মৈত্রের সমর্থনে প্রথম জনসভা করেছিলেন তিনি। এরপর উত্তরবঙ্গে টানা জনসভা, রোড-শো করে ফের দক্ষিণবঙ্গে চলে আসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত বুধবার, ২৫ বৈশাখ হুগলির বলাগড়ে রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে জনসভা করে তৃণমূলনেত্রী দীর্ঘদিন পরে কলকাতায় ফেরেন।

বৃহস্পতিবার অবশ্য তাঁর কোনও নির্বাচনী কর্মসূচি ছিল না। টানা এই ৩৯ দিনের ঝোড়ো প্রচার-পর্বে জনসভা, রোড-শো মিলিয়ে মোট ৬০টি কর্মসূচিতে অংশ নেন তিনি। এই লোকসভা নির্বাচনে মমতার প্রচারের স্ট্রাইক রেট পরবর্তী সময়ে যদি অব্যাহত থাকে, তা হলে সপ্তম দফার ভোটের আগেই তিনি মোট জনসভা এবং রোড-শো’র সংখ্যা একশো ছুঁয়ে ফেলবেন বলে তৃণমূল নেতৃত্বের পর্যবেক্ষণ।

দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে উলুবেড়িয়া, হাওড়া, ব্যারাকপুর, বসিরহাট, বারাসত, দমদম, যাদবপুর, জয়নগর, মথুরাপুর, ডায়মন্ডহারবার সহ অন্তত ১২টি লোকসভা কেন্দ্রে এখনও তৃণমূলনেত্রী একটিও জনসভা করেননি। এছাড়া প্রতিটি কেন্দ্রে তিনি কমপক্ষে তিনটি জনসভা ও রোড-শো করেছেন। কোনও কোনও লোকসভা কেন্দ্রে আবার সেই সংখ্যাটা চার।

প্রথম ইনিংসের এই ঝোড়ো ব্যাটিং প্রবল তাপপ্রবাহের মধ্যেই করতে হয়েছে তাঁকে। তীব্র গরমের কারণে তাঁর শরীরও খারাপ হয়েছিল। সে সময়ে অ্যান্টিবায়োটিক খেতে হয়েছিল বলে তৃণমূলনেত্রী নিজেই জানিয়ে ছিলেন। যদিও অসুস্থতার কারণে নির্ধারিত প্রচার-সূচিতে তেমন কোনও অদলবদল করা হয়নি।

রোড-শো’তে বরাবর তৃণমূল নেত্রী পায়ে হাঁটেন, হুডখোলা গাড়িতে জনসংযোগ করেন না। প্রথম ইনিংসের এই প্রচার পর্বে একাধিক দিন তিনি দুপুরে জনসভা করে বিকেলে পদযাত্রা করেছেন। এমনকী, বাংলায় প্রচারের ফাঁকে অসমে গিয়েও দলীয় প্রার্থীর হয়ে সভা করে এসেছেন। দলনেত্রীর এই টানা কর্মসূচি নিয়ে তৃণমূলের রাজ্যসভার সচেতক সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, ‘অদম্য ইচ্ছেশক্তি না থাকলে এটা সম্ভব নয়। দীর্ঘ ৩৪ বছরের বাম জমানায় প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াইয়ের জেরেই ওর অদম্য এই ইচ্ছেশক্তি তৈরি হয়েছে।’

নির্বাচনী জনসভা বা রোড-শো করার নিরিখে দলীয় কোনও নেতা বা নেত্রী আপাতত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছাকাছি নেই। বিপক্ষ শিবিরের মূল সেনাপতিরাও এত সভা-পদযাত্রা এখনও করে উঠতে পারেননি। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গে পরপর জনসভা, রোড-শো করেছেন। কিন্তু মমতার তুলনায় তাঁর কর্মসূচির সংখ্যা এখনও কম।

মুর্শিদাবাদ লোকসভায় প্রার্থী হওয়ার কারণে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম টানা জনসংযোগ কর্মসূচি করেছেন। কিন্তু তাঁর জনসভার সংখ্যাও অনেক কম। আলিমুদ্দিন সূত্রে খবর, মুর্শিদাবাদ লোকসভার ভোট হয়ে যাওয়ায় সিপিএম রাজ্য সম্পাদকের আগামী কয়েকদিন ঠাসা কর্মসূচি রয়েছে। তবে তাও ১০০ ছোঁয়ার সম্ভবনা কম।

২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও মমতা ঝোড়ো প্রচার শুরু করেছিলেন। নন্দীগ্রামে পায়ে চোট পাওয়ার পরে কয়েক দিন তাঁর প্রচার থমকে গেলেও দ্রুত তিনি হুইল চেয়ারে করে ময়দানে নেমে পড়েন। এবারের নির্বাচনে দলনেত্রীর এই প্রচারের প্রবণতা নিয়ে অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘শেষ পর্যন্ত ওঁর সভা-রোড’শোর সংখ্যা একশো ছাড়িয়ে যাবে। উনি মঞ্চে ঘুরেঘুরে ভাষণ দেন, এই পরিশ্রম করার ক্ষমতা ভগবান প্রদত্ত। আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে কাউকে এই ভাবে টানা প্রচার করতে দেখিনি।’

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী কর্মসূচি ইতিমধ্যে তিরিশ ছুঁয়েছে। ডায়মন্ডহারবারে নিজের কেন্দ্রে প্রচারের পাশাপাশি অভিষেক কোনও কোনও লোকসভা কেন্দ্রে একাধিক জনসভা করেছেন। দুর্যোগের কারণে বৃহস্পতিবার কালনা ও রামপুরহাটে যেতে না পারলেও ভার্চুয়াল মাধ্যমে জনতার উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন তিনি।

তৃণমূলের দাবি, মমতা এবং অভিষেকের প্রচার সূচি এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে যে একটি লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত অধিকাংশ বিধানসভা তাঁদের প্রচারের আওতায় চলে আসছে। এতে সবটা কভারও হচ্ছে। যদিও বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের দাবি, ‘রাজ্যের মানুষ প্রত্যাখ্যান করতে চলেছে বলে তৃণমূলনেত্রী চেষ্টা করছেন মানুষের মন পাওয়ার। কিন্তু যতই সভা-পদযাত্রা করুন না কেন, তার প্রভাব ফলাফলে পড়বে না।’

You might also like!