Breaking News
 
Himachal Pradesh:হিমাচলের প্রাকৃতিক দুর্যোগে ব্যথিত অনুরাগ, নিহতদের প্রতি সমবেদনা বিজেপি নেতার Gaza: ত্রাণের লাইনে মৃত্যুর মিছিল! গাজায় ৭৯৮ প্যালেস্টিনীয়কে গুলি করে হত্যা, জানাল রাষ্ট্রসংঘ AC local: বনগাঁ শাখায় নতুন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত লোকাল, মালদহ রুটে ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস! সম্ভাব্য সূচনা ১৮ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে Kapil Sharma's cafe: কানাডায় কপিল শর্মার ক্যাফেতে খলিস্তানি হামলা, দায় স্বীকার ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ হরজিত লাড্ডির! Niti Ayog: নীতি আয়োগের রিপোর্টে মানচিত্র বিভ্রাট! মুখ্যমন্ত্রীর চিঠির পর সরল নীতি আয়োগের ত্রুটিযুক্ত মানচিত্র Shashi Tharoor: ‘গণতন্ত্রের অন্ধকার অধ্যায়’ – ইন্দিরা গান্ধীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্য সমালোচনায় শশী থারুর!

 

Video

2 months ago

Marjina Khatun | মর্জিনার জীবন: যেখানে দারিদ্র্য চিৎকার করে, তবু স্বপ্ন মরেনা

 

যে বয়সে হাতে বই-খাতা থাকা উচিত, সে বয়সে হাঁড়ি-পাতিল, কাপড় কাঁচা আর অসুস্থ বাবার দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে প্রতিদিন নতুন করে বাঁচার চেষ্টা করে ছোট্ট মেয়েটি—মর্জিনা খাতুন। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুমারগঞ্জ ব্লকের মোহনা পঞ্চায়েতের গয়েশপুর গ্রামে জন্ম নেওয়া মর্জিনার জীবন যেন একটি মর্মান্তিক বাস্তবতার কাহিনি।

বর্তমানে সে গোপালগঞ্জ রঘুনাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। তার এক সমবয়সী ভাই স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে। তবে মর্জিনার পরিবারের পরিস্থিতি যে কোনও সাধারণ পরিবারের চেয়ে অনেক বেশি জটিল। বাবা মকসেদুল মন্ডোল প্যারালাইসিসে আক্রান্ত, সম্পূর্ণ শয্যাশায়ী না হলেও কাজকর্মে পুরোপুরি অক্ষম। মা মানসিক ভারসাম্যহীন এবং বেশিরভাগ সময়ই বাড়ির বাইরে বাইরে ঘুরে বেড়ান। সংসারে নেই কোনো স্থায়ী উপার্জনের উৎস। কোনোরকমে ভিক্ষা করে আর স্থানীয় কিছু মানুষের দয়া-সহানুভূতির ওপর নির্ভর করেই চলছে তিনজনের জীবন।

তাদের বাসস্থানটি এতটাই জরাজীর্ণ ও অব্যবস্থাপূর্ণ যে সেটিকে বাসযোগ্য বলা কঠিন। বৃষ্টির দিনে ছাদ চুঁইয়ে পড়ে জল, বাড়ির আনাচে-কানাচেতে মাঝেমধ্যে দেখা যায়  বিষধর সাপ। নেই কোন বিদ্যুৎ সংযোগ। শুধু তাই নয়, বাড়ির এমন অবস্থা যে কোনও গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র রাখারও কোনও সুরক্ষিত জায়গা নেই। সবকিছুই যেন এক অনিশ্চয়তা ও শঙ্কার মাঝে ডুবে থাকা জীবন। এই অবস্থাতেই মর্জিনার প্রতিদিন শুরু হয়, সকালে রান্না করে  বাবাকে স্নান করিয়ে খাইয়ে সেবা যত্ন করে এবং  ঘরের কাজ শেষ করে সে স্কুলে যায়।  মর্জিনা পড়াশোনায় হয়তো খুব উজ্জ্বল নয়, কিন্তু তার আগ্রহ ও নিষ্ঠা প্রশ্নাতীত।

গ্রামের কিছু সহৃদয় মানুষ মাঝে মাঝে খাবার, পুরনো জামাকাপড় বা কিছু অর্থ দিয়ে সহায়তা করেন। কিন্তু তা স্থায়ী নয়। মর্জিনার মতো শিশুরা সরকারি সাহায্য, সমাজের সচেতন শ্রেণির সহানুভূতি ও সংহতির অপেক্ষায় দিন গোনে। স্কুলে যাওয়া থেকে শুরু করে জীবনধারণের ন্যূনতম চাহিদা—সবই এখানে সংগ্রামের সমার্থক।

এই পরিবারটির কথা জানার পর স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ হওয়া জরুরি। সরকারি সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প যেমন — ‘আবাস যোজনা’, ‘প্রতিবন্ধী ভাতা’ ‘অন্ত্যোদয় অন্ন যোজনা’ ইত্যাদি প্রকল্পের আওতায় এনে মর্জিনাদের জীবন কিছুটা হলেও সহজ করা সম্ভব। 

মর্জিনার জীবন একটি প্রশ্নচিহ্ন হয়ে দাঁড়িয়ে আছে সমাজের সামনে—একটি শিশু কতটা দুঃখ সহ্য করে বড় হতে পারে? সেই প্রশ্নের জবাব আমাদেরই দিতে হবে, আজ না হোক কাল। কারণ, এই শিশুটির স্বপ্ন হারিয়ে গেলে শুধু একটিই জীবন নয়, হেরে যায় একটি সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ, হেরে যায় সমাজ।

You might also like!