দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ বেশিদিনের ছুটি নেই হাতে। পকেটেও টান। অথচ এক টুকরো পাহাড় দেখার জন্য প্রাণটা আনচান করছে। তাহলে আর দেরি না করে মাত্র ৩ দিনের ছুটিতে ঘুরে আসতে পারেন লেপচা জগৎ (Lepcha Jagat)। দার্জিলিং থেকে কিছুটা দূরে ঘুম পাহাড়ের কোলের এক অফবিট ডেস্টিনেশন।হাতেগোনা কয়েকটা হোম স্টে। চারিদিকে পাইন বনের ঘনজঙ্গল। এরই মাঝে ছোট্ট জনপদ লেপচা জগৎ। আকাশ পরিষ্কার থাকলে হোম স্টে-র ঘরে বসেই দেখা মিলবে তুষারাবৃত কাঞ্চনজঙ্ঘার। আর রাতে বারান্দায় দাঁড়িয়ে গরম কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে দেখতে পাবেন আলোয় মোড়া দার্জিলিঙ শহর। আশপাশে বেড়াতে যেতে চান? রয়েছে সেই সুযোগও।
দার্জিলিংয়ের জনপ্রিয়তা কখনওই বাঙালিদের মধ্যে কমবে না। তাই উত্তরবঙ্গ যাওয়ার পরিকল্পনা হলেই একবার হলেও ছুঁয়ে যান দার্জিলিং। সেই দার্জিলিং থেকে মাত্র ১৯ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে লেপচাজগৎ। লেপচাজগতে ‘মেঘ গাভীর মতো চরে’। পাইনে ঘেরা এই পাহাড়ি জনপদে মাঝে মাঝে ঢাকা পড়ে যায় একরাশ কুয়াশায়। ঠিক সেই মুহূর্তে পাইনের জঙ্গলে দাঁড়িয়ে লেপচাজগৎকে মনে হয় মায়াবি।
মূলত লেপচা অধিবাসিত গ্রাম, তাই নাম লেপচাজগৎ। গ্রামকে ঘিরে রয়েছে ওক, পাইন, রডোডেনড্রনের সমাহার। বেশ কিছু বছর আগেও লেপচাজগৎ ভ্রমণপিপাসুদের কাছে জনপ্রিয়তা পেয়েছিল না। কিন্তু এখন যদি ৩ দিনের ছুটিও কেউ পায়, দার্জিলিংয়ের পাশাপাশি লেপচাজগতেও হোমস্টে বুক করে নেন সকলে। আর কেন-ই বা করবেন না। দার্জিলিং থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে অবস্থিত এই ‘অফবিট’-এর যে কোনও তুলনা হয় না। এখানে সহজেই হারিয়ে যাওয়া যায় কুয়াশা মাখা প্রকৃতির কোলে।
প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আশঙ্কায় বর্ষায় অনেকেই পাহাড়ের ভ্রমণের পরিকল্পনা এড়িয়ে যান। আবার এমনও কিছু মানুষ রয়েছেন যাঁরা বৃষ্টি উপভোগের টানে বার বার ফিরে যান পাহাড়ে আর বেছে নেন লেপচাজগতকে। যদিও এখন মরসুমের কোনও নিশ্চয়তা নেই। তবু বছরের যে কোনও সময়ে আপনি লেপচাজগৎ পৌঁছে যেতে পারেন এখানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যতা উপভোগ করতে।
যদি আকাশ পরিষ্কার থাকে, তাহলে নীলের মাঝে ধরা দেয় কাঞ্চনজঙ্ঘা। লেপচাজগৎ থেকে অনায়াসে ঘুরে নেওয়া যায় তিনচুলে, দাওয়াইপানি, লামাহাটা, সুখিয়াপোখরি বাজার, সোনাদা, তাকদা, বড় ও ছোট মাঙ্গোয়া ইত্যাদি। কিন্তু লেপচাজগতে পাহাড়ের ঢাল বেয়ে যে এঁকেবেঁকে রাস্তা চলে গিয়েছে, যার চারধারে শুধুই পাইনের সমাহার, সেখানে হারিয়ে যাওয়ার আনন্দ এখানে বেশি রোমাঞ্চকর।
এখানে লেপচাদের সকাল শুরু হয় তাড়াতাড়ি। সুতরাং, আপনিও যদি দুটো দিন তাঁদের দলে নাম লেখান তাহলে হোমস্টেতে বসে বসে কাঞ্চনজঙ্ঘার উপর দিয়ে সূর্যোদয়ের দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন। আর এখানে সন্ধ্যেও হয় চোখের পলকে। তখন সঙ্গী শুধুই ঝিঁ ঝিঁর ডাক। তবে লেপচাজগতের কোলে বসে আলোয় মোড়া দার্জিলিঙয়ের দৃশ্য বেশি মায়াবি।