দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ প্রথমেই অবাক হবেন না এটা ভেবে যে উত্তর প্রদেশে আবার সমুদ্র যখন নেই তখন বিচ কোথায়? মজাটা সেখানেই। চুকা বিচ কোনও সমুদ্র সৈকত নয়। এটি হল পিলিভিট ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্রের অন্তর্গত একটি জলাধারের সৈকত। এই বিচ গড়ে উঠেছ মাহফ অরণ্য এলাকায় শারদা সাগর ড্যাম এবং নেপাল থেকে উত্তরপ্রদেশ সীমানা পেরিয়ে আসা শারদা ক্যানালের মধ্যবর্তী অঞ্চলে। এই শারদা সাগর জলাধারটি ১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং চওড়ায় ২.৫ কিলোমিটার। এই জলাধারের গা ঘেঁষেই রয়েছে সবুজ অরণ্য এবং বালিতে ঘেরা তটভূমি। পিলিভিট জেলার এই লুকোনো সৈকতের কথা কেউই প্রায় জানেন না বললেই চলে। সেই কারণেই যাঁরা ঘুরতে যাওয়ার জন্য অফবিট ডেস্টিনেশনের খোঁজ করেন, তাঁরা জল-জঙ্গল আর বন্যপ্রাণীর মাঝে প্রকৃতির কোলে বাকি পৃথিবীর সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে দুটো দিন নিরিবিলিতে কাটিয়ে আসতে পারেন অনায়াসে।
এখানে দেখা মিলবে অজস্র পাখির। তাই পক্ষীপ্রেমীদের জন্য চুকা বিচ একেবারে স্বর্গরাজ্যই বলা যায়। এছাড়া ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্রের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় দক্ষিণরায়ের দেখা পাওয়ার সুযোগ যে রয়েছেই, সে কথা বলা বাহুল্য। টাইগার রিজার্ভে জঙ্গল সাফারি মিস করবেন না। বাঘ ছাড়াও এই এলাকায় রয়েছে অজস্র প্রজাতির বন্যপ্রাণী। ঘুরে আসতে পারেন নেহরু পার্ক থেকেও।
প্রাথমিকভাবে ব্যাঘ্র সংরক্ষণ প্রকল্পের সুবিধার্থে এই এলাকাটিকে একটি পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছিলেন আইএফএস আধিকারিক রমেশ পাণ্ডে। শারদা ড্যামকে কেন্দ্র করে ইকো-ট্যুরিজম গড়ে তোলার উদ্যোগ নেন তিনি এবং তাঁর কয়েকজন বন্ধু। তাঁদের উদ্যোগে সেখানে ২ বছরের মধ্যে ৪টি ইকো-হাট গড়ে ওঠে। পরে রমেশের বদলির পর স্থানীয় প্রশাসন এবং বন দফরের উদ্যোগেই ধীরে ধীরে পূর্ণতা পায় চুকা বিচ।
যাওয়া - পিলিভিট রেলপথে ভারতের বেশিরভাগ শহরের সঙ্গেই সংযুক্ত। এছাড়া সড়কপথেও পিলিভিট পৌঁছে সেখান থেকে গাড়িতে পৌঁছে যেতে পারবেন চুকা বিচে।
থাকা - প্রকৃতির সান্নিধ্য যাতে পূর্ণমাত্রায় উপভোগ করা যায়, তার জন্য সৈকত সংলগ্ন এলাকায় গাছ এবং জলের উপর সরকারি উদ্যোগে গড়ে উঠেছে একাধিক খড়ের চালের কুঁড়েঘর, যা ইকো-হাট নামেই পরিচিত। চুকা বিচে গেলে ট্রি-হাউজে থাকার সুযোগ হাতছাড়া করবেন না। এছাড়া জলের উপরেই রয়েছে ওয়াটার হাট। এই ইকো হাটে থাকার অভিজ্ঞতা যে সাধারণ হোটেল কিংবা হোমস্টের তুলনায় একেবারেই আলাদা সেকথা হলফ করে বলা যায়।