kolkata

3 months ago

Coal Smuggling :ভোট মিটতেই জামুড়িয়া, বারাবনি, পান্ডবেশ্বরে সক্রিয় কয়লা পাচার চক্র

Coal smuggling
Coal smuggling

 

দুর্গাপুর  : ভোট মিটতেই আবারও সক্রিয় কালো হিরার রমরমা পাচার চক্র। ঝাড়খন্ড থেকে অজয় পেরিয়ে অবাধে ঢুকছে অবৈধ কয়লা। আবার কোথাও ইসিএলের সাইডিং থেকে অবাধে লুট হচ্ছে কয়লা।  পান্ডবেশ্বরে সিআইএসএফের অভিযানে উদ্ধার হয়েছে প্রচুর অবৈধ কয়লা। আর তাতেই প্রশ্ন উঠছে অবৈধ কয়লার চোরাচালানে।

জানা গেছে,  পান্ডবেশ্বরের ডালুরবাঁধ ৪ নং বিদ্যুত অফিসের পিছনে হানা দেয় ইসিএলের সিআইএসএফ বাহিনী। সেখানে নির্মিয়মান পান্ডবেশ্বর থানার লাগোয়া ইসিএলের জমিতে প্রায় ২৫ টন অবৈধ কয়লা বাজেয়াপ্ত করে সিআইএসএফ। জানা গেছে, ওই জমিটি ইসিএলের। এছাড়াও ঝাঁঝরা, ভাটমুড়া, নবগ্রাম, মাধাইপুর, দান্নো-মহাল এলাকায় অবাধে চলছে চোরাই কয়লার রমরমা কারবার। আসানসোল সাংগঠনিক জেলার বিজেপি নেতা জিতেন চট্টোপাধ্যায় অভিযোগে বলেন," স্থানীয় তৃণমূল নেতা সন্তোষ পাশওয়ানের মদতে চলে চোরাই কয়লার রমরমা কারবার। রাতের অন্ধকারে ইসিএলের ডালুরবাঁধ, শোনপুরবাজারি, খোট্টারডিহি খোলামুখ খনি থেকে অবাধে কয়লা লুট হয়। সেই কয়লা রাতভর মোটরসাইকেলে করে ওইসব ডিপোতে জমা হয়। তারপর সেখান থেকে বীরভুমে পাচার হয়।" যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল নেতা সন্তোষ পাশওয়ান।

তিনি বলেন," সম্পূর্ন ভিত্তিহীন অভিযোগ। কয়লা কেন্দ্র সরকারের। কোলিয়ারির পাহারায় কেন্দ্রীয়বাহিনী। চুরির দায়ে তাদের।" প্রসঙ্গত, কয়লাকান্ডে তোলপাড় গোটা রাজ্য। কেন্দ্রীয় গয়েন্দা সংস্থা সিবিআই ও রাজ্যের সিআইডি অবৈধ কয়লার চোরাচালনে ধরপাকড় শুরু করেছে। ঘটনায় একাধিক কয়লা মাফিয়া ধরা পড়েছে। ঘটনার তদন্তে জোর তৎপরতা শুরু করেছে রাজ্য কেন্দ্র উভয় গয়েন্দা বিভাগ। এমনকি খনি সংস্থা ইসিএলের বেশ কয়েকজন আধিকারিকও গ্রেফতার হয়েছে। কয়লা পাচার কাণ্ডে প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের যোগসাজশ রয়েছে বলে অভিযোগ তদন্তকারী সংস্থার। একইসঙ্গে তদন্তকারীদের র‍্যাডারে রয়েছে বেশ কয়েকটি ছোট শিল্প সংস্থা। লোকসভা ভোটের আগে আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ অবৈধ কয়লা পাচার রুখতে সক্রিয় হয়েছিল। বেশ কিছু অবৈধ কয়লা পাচারের হদিশ উদ্ধার করেছিল।

বন্ধ কারখানার আড়ালে রমরমিয়ে চলছে অবৈধভাবে কয়লা পাচারের কারবার। গত বছর আগস্টের শেষের দিকে দুর্গাপুর-ফরিদপুর থানার সরপি এলাকায় সিমেন্ট ফ্যাক্টরীর আড়ালে অবৈধ কয়লা কারবারের হদিশ পায় পুলিশ। ঘটনায় সিমেন্ট ফ্যাক্টরী থেকে বাজেয়াপ্ত করে ১০ মেট্রিক টন অবৈধ কয়লা। তার কয়েকদিন আগে কাঁকসার বাঁশকোপায় অবৈধ কয়লা বোঝাই তিনটি লরি ধরা পড়ে পুলিশের জালে। ঘটনায় দুজন চালক গ্রেফতার হয়। ওই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ আসানসোলের সালানপুরে একটি বেসরকারী ফ্যাক্টরীর কয়লা পাচার চক্রের হদিশ পায়। যেখান থেকে ওইসব কয়লা পাচার হচ্ছিল। সেখানে কয়লা ছাড়াও জেসিবি মেশিন বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। এছাড়াও দুর্গাপুর পারুলিয়ায় গত বছর সেপ্টম্বর মাসে প্রচুর অবৈধ কয়লা আটক হয়। ভোট মিটতেই আবারও নতুন করে কয়লা পাচার সক্রিয় অঞ্চলে। অজয় নদের লোদারঘাট দিয়ে ঝাড়খন্ড থেকে ট্রাক্টরে করে অবাধে কয়লা ঢুকছে এরাজ্যে। জামুড়িয়ারব জোড়জানকি, পলাশতলি, কাস্তা, দেশেরমোহনা, বেলেডাঙা এলাকায় ক্রেশার সংলগ্ন ডিপোতে ওইসব কয়লা মজুত হচ্ছে। তারপর সেখান থেকে লরি ডাম্পারে করে জামুড়িয়ার বিভিন্ন কারখানায় পাচার হচ্ছে। চুরুলিয়ার একটি দশ বাম্পার এলাকায় একটি সাপ্লাই সংস্থার অফিস থেকে কখনও কখনও চালানও দেওয়া হয়। যদিও ওইসব চালানের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। অভিযোগ, ক্রেশারের আড়ালে চলছে অবৈধ কয়লার রমরমা কারবার। কয়লার উপরের স্তরটি ফার্কেল নামে পরিচিত। ওই ফার্কেল কোলিয়ারিতে ছাঁট করা হয়। আর জামুড়িয়া এলাকায় ওইসব ক্রেশারে ছাঁট ফার্কেল চাঙড় ভাঙা হয়। তারপর অবৈধ কয়লার সঙ্গে মিশিয়ে বিভিন্ন কারখানায় পাচার করা হয়।

ভোট মিটতেই আবারও নতুন করে কয়লা পাচারের পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। যদিও খোলামুখ খনি ও কোলিয়ারি সাইডিংয়ের নিরাপত্তা নিয়ে ইসিএল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কোন মন্তব্য করতে চায়নি। তবে শুক্রবার ডালুরবাঁধের ঘটনায় পুলিশ জানিয়েছে, এখনও কোন অভিযোগ দায়ের হয়নি।


You might also like!