দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ গার্ডেনরিচের মতো ফের বিল্ডিং ভেঙে পড়লে কি হুঁশ ফিরবে পুরসভা-প্রশাসনের? প্রশ্ন বন্দর এলাকার বাসিন্দাদের। গত মার্চে গার্ডেনরিচে নির্মীয়মাণ বহুতল ভেঙে পড়ায় পুরসভার ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছিলেন এলাকাবাসীরা। এমনকী পুলিশের সঙ্গে স্থানীয় প্রোমোটারদের যোগসাজশ নিয়েও তাঁদের অনুযোগ ছিল।
প্রায় দু’মাস পরেও পুরসভা এবং পুলিশের ভূমিকায় সন্তুষ্ট হতে পারছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাই এখনও প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কায় ভুগছেন তাঁরা। স্থানীয়দের অভিযোগ, বেআইনি নির্মাণের কারণে এখনও বহু জায়গায় বিপজ্জনক পরিস্থিতি হয়ে রয়েছে। অনেক পুরোনো বাড়ি রয়েছে এলাকায়। ময়ূরভঞ্জ রোডের ধোবি গলি এলাকায় একাধিক বেআইনি নির্মাণ এবং বিপজ্জনক বাড়ি নিয়ে অভিযোগ রয়েছে স্থানীয়দের একটা বড় অংশের।
কলকাতা পুরসভার ৭৮ নম্বর ওয়ার্ডে পুরসভার বোর্ড লাগানো একটি ‘বিপজ্জনক’ বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়ায় নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। অভিযোগ, পুরসভা অথবা পুলিশের তরফে কোনও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এর আগেও ওই বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়েছিল। গত শনিবার ভোটের দিন ফের একই ঘটনা ঘটেছে। তা ছাড়া এলাকায় বেশ কয়েকটি বেআইনি নির্মাণ রয়েছে।
স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, ‘বেআইনি কাজকর্মের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলেই হুমকি দেওয়া হয়। ফলে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চান না। যতক্ষণ না পর্যন্ত বিপর্যয় ঘটছে, ততক্ষণ চুপ থাকে পুরসভা-প্রশাসনের কর্তারা।’ বন্দর এলাকায় বেআইনি নির্মাণ নিয়ে এখনও যে চাপা ক্ষোভ রয়েছে, তা স্পষ্ট স্থানীয়দের বক্তব্যে। তবে স্থানীয় দুষ্কৃতী বা অসাধু প্রোমোটারদের বিরুদ্ধে ভয়ে সরাসরি কেউ মুখও খুলতে নারাজ।
ভূকৈলাস রোডের বাসিন্দা এক প্রৌঢ় বলেন, ‘সবাই সব জানেন। তা সত্ত্বেও কেউ কিছু বলেন না। কিন্তু এ ভাবে আর বেশি দিন চলতে পারে না। রাজনৈতিক নেতাদের মদতও রয়েছে।’ একই অভিযোগ খিদিরপুর, হুসেন শাহ রোড, ওয়াটগঞ্জ-সহ বিভিন্ন এলাকায়। সেখানকার বাসিন্দাদের বক্তব্য, ‘বেশ কিছু এলাকায় বেআইনি বহুতল নির্মাণ বন্ধ হয়েছে। তবে ইতিমধ্যেই যে ভাবে পুরসভার আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বহুতল উঠেছে, তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে হলে গোটা এলাকাই গুঁড়িয়ে দিতে হবে। গত পনেরো বছরে এই নির্মাণগুলি হয়েছে।’
এ বিষয়ে কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের এক পদস্থ কর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিটি বেআইনি নির্মাণের ক্ষেত্রে নিয়ম মেনে ব্যবস্থা নিচ্ছি। সমস্ত প্রক্রিয়া শেষ করতে আরও সময় লাগবে।’