দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ নারীর কর্মসংস্থান এবং মজুরি নিয়ে কাজ করে এবার অর্থনীতিতে নোবেল জয় করেলেন যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্লডিয়া গোল্ডিন। সোমবার স্থানীয় সময় বেলা পৌনে ১২টার দিকে সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে ২০২৩ সালের অর্থনীতি শাখার নোবেলজয়ী হিসাবে মার্কিন অর্থনীতিবিদ ক্লডিয়া গোল্ডিনের নাম ঘোষণা করে সুইডেনের রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্স। খবর বিবিসির।
স্টকহোমে নোবেলজয়ীর নাম ঘোষণার অনুষ্ঠানে জুরিরা বলেন, নারী শ্রমিকদের বাজার সম্পর্কে সাধারণ লোকজনের জানাশোনা ও বোঝাপড়ার উন্নয়নে বিশেষ অবদানের জন্য হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক ও গবেষককে চলতি বছর নোবেলের জন্য যোগ্য ব্যক্তি বলে মনে করেছে একাডেমি। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মানবসভ্যতায় নারীর অর্থনৈতিক অবদান, উৎপাদন ও বাজারব্যবস্থায় অংশগ্রহণ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাকর্ম রয়েছে অধ্যাপক ক্লডিয়া গোল্ডিনের। বিভিন্ন রেকর্ড ও আর্কাইভ ঘেঁটে অর্থনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ নিয়ে যেসব তথ্য হাজির করেছেন এই অধ্যাপক, তা রীতিমতো বিস্ময় জাগানিয়া।
অধ্যাপক ক্লডিয়া গোল্ডিন যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে শ্রমবাজারের ইতিহাস নিয়ে পড়াচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ২০০ বছরের শ্রমশক্তির তথ্যের সঙ্গে গোল্ডিনের কাজের তুলনা করে সুইডিশ একাডেমি বলেছে, তিনি শ্রমবাজারে নারী শ্রমিকদের প্রভাবের বিষয়টি বুঝতে সহায়তা করেছেন। তিনি দেখিয়েছেন কীভাবে এবং কেন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে লিঙ্গভিত্তিক কর্মসংস্থান এবং আয়ের পরিমাণে পার্থক্য দেখা দেয়।
সমাজে নারীর অর্থনৈতিক অবদান বিচারবিশ্লেষণের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো নারীর বিয়ে ও সন্তানধারণ। মূলত এ দুই কারণে অর্থনীতিতে নারীর ভূমিকা পুরুষের চেয়ে কম বলে বিবেচনা করেন অনেকেই।
কিন্তু নারীর বিয়ে ও সন্তানধারণের মাধ্যমেও নারী কীভাবে অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখছেন হাজার হাজার বছর ধরে, তা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছেন ক্লডিয়া গোল্ডিন। মূলত এ কারণেই তাকে নোবেলের জন্য মনোনীত করা হয়েছে।
৫৪ বছরের ইতিহাসে তৃতীয় নারী হিসাবে অর্থনীতিতে নোবেল জয় করলেন ক্লডিয়া গোল্ডিন। আর তিনিই প্রথম এ পুরস্কারের অর্থ কোনো পুরুষ সহকর্মীর সঙ্গে ভাগ করে নিচ্ছেন না।
অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কারের মাধ্যমে চলতি বছরের নোবেল পুরস্কার ঘোষণার পর্ব শেষ হলো। পুরস্কারের অর্থমূল্য হিসাবে ১ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনার পাবেন অধ্যাপক গোল্ডিন।
গত বছর অর্থনীতিতে ব্যাংকের ভূমিকা কতটা, অর্থনৈতিক সংকট এড়াতে ব্যাংকের সুরক্ষা কতটা জরুরি, সেই আন্তঃসম্পর্কে আলো ফেলে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের তিন অর্থনীতিবিদ বেন এস বেরনানকে, ডগলাস ডব্লিউ ডায়মন্ড এবং ফিলিপ এইচ ডিবভিগ। উল্লেখ্য, অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া শুরু হয়েছে ১৯৬৯ সাল থেকে। ২০২২ সাল পর্যন্ত এই শাখায় নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে মোট ৫৪টি। চলতি বছরের ৫৫তম পুরস্কারটি অর্জন করলেন তিনি।