দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: জীবনদাতা ভেষজের অপর নাম যষ্টিমধু। একটি প্রাচীন ভেষজ উদ্ভিদ, যা বহু শতাব্দী ধরে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এর বৈজ্ঞানিক নাম Glycyrrhiza glabra,এটি প্রধানত এশিয়া, দক্ষিণ ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্যে জন্মায়। যষ্টিমধুর মূল বা শিকড়ই এর প্রধান ব্যবহারযোগ্য অংশ। সাধারণত এটি মুলেঠি নামেও পরিচিত। প্রায় সব পানের দোকানে সহজেই পাওয়া যায়।
আয়ুর্বেদিক পন্থায় যষ্টিমধু নানান রোগ প্রতিরোধ করে। চুলের বৃদ্ধি, মাথাব্যথা, মাইগ্রেনের ব্যথা, চোখের সমস্যা, কান, নাকের রোগ, মুখের ঘা, কাশি, শ্বাসকষ্ট, হেঁচকি, হার্ট, পেটের সমস্যা, বমি, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, ডায়রিয়া, রক্তাল্পতা কমাতে এটি খুবই উপকারী। আলসার, দুর্বলতা, মৃগীরোগের মতো রোগের ক্ষেত্রেও এটি কার্যকরী।
জেনে নিন যষ্টিমধুর গুণাগুণঃ
১) ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের মতো অনেক উপাদান থাকে যষ্টিমধুতে । সর্দি-কাশির সমস্যায় এটি ভাল কাজ করে। মুলেঠিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজ আছে। এটি অনেক বিপজ্জনক রোগ থেকে মুক্তি দিতে পারে।
২) যষ্টিমধুর ছোট একটি টুকরো মুখে রেখে তার রসটুকু নিয়ে নিতে হবে। অথবা তিন থেকে পাঁচ গ্রাম গুঁড়ো খেতে হবে। এটি পিষে শরীরে লাগালে ঘামের দুর্গন্ধ দূর হয়। এর পাউডার দুধে মিশিয়েও খাওয়া যেতে পারে।
৩) দুরারোগ্য কোনও ব্যাধিতে ভুগে থাকলে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এটি ব্যবহার করুন। তবে যষ্টিমধু খুব বেশি খেলে পেশী এবং পায়ে ব্যথা হতে পারে এবং কখনও কখনও হাতও ফুলে যেতে পারে। অতএব এটি সেবন করার আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
৪) যষ্টিমধু প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে এবং শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন বের করে দেয়।
৫) কাশি, ব্রংকাইটিস, হাঁপানি এবং গলা ব্যথার মতো সমস্যায় যষ্টিমধু অত্যন্ত উপকারী। এটি শ্লেষ্মা পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।
৬) যষ্টিমধু ত্বকের রং উজ্জ্বল করতে এবং ব্রণ কমাতে ব্যবহৃত হয়। এটি ত্বকের প্রদাহ কমিয়ে দেয়।
৭) এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এবং ভাইরাসজনিত সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা দেয়।
সতর্কতাঃ যষ্টিমধুর অতিরিক্ত ব্যবহার কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ঘটাতে পারে, যেমন রক্তচাপ বৃদ্ধি, শরীরে অতিরিক্ত পানি জমে যাওয়া বা ক্যালিয়ামের অভাব। দীর্ঘমেয়াদে এটি গ্রহণ করার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।