
দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে, কার্তিক পূর্ণিমা তিথিতে দেবলোকে দীপাবলি পালিত হয়। দেবতাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে মর্ত্যলোকেও এই দিনে প্রদীপ জ্বালানোর প্রথা রয়েছে। বিশেষত, এই তিথিতে বেনারস ও হরিদ্বারের গঙ্গার ঘাটগুলি আলোর মালায় সজ্জিত করা হয়। সেই নৈসর্গিক শোভা দেখতে হাজার হাজার ভক্ত বেনারস ও হরিদ্বারে ভিড় জমান। মনে করা হয় যে, কার্তিক পূর্ণিমার দিনেই মহাদেব ত্রিপুরাসুর নামক এক প্রবল শক্তিশালী রাক্ষসকে বধ করেছিলেন। এই কারণে কার্তিক পূর্ণিমাকে ‘ত্রিপুরারি পূর্ণিমা’ নামেও অভিহিত করা হয়। এই বিষয়ে পুরাণে কী কাহিনি প্রচলিত আছে, জেনে নিন।
মহাভারতের কর্ণ পর্বে দেব দীপাবলির উল্লেখ আছে। স্বর্গ আক্রমণ করে ত্রিপুরাসুর নামে এক ভয়ংকর দানব। তার হাত থেকে দেবতাদের উদ্ধারের জন্য কার্তিক পূর্ণিমা তিথিতে ত্রিপুরাসুরকে বধ করেন মহাদেব। ব্রহ্মার বর পেয়ে ত্রিপুরাসুর প্রায় অমরত্ব লাভ করে। ত্রিপুরাসুরের তিন ছেলে তারকাক্ষ, কমলাক্ষ ও বিদ্যুন্মালি। অভিজিৎ মুহূর্তে একটিমাত্র তীরে এদের তিনজনকে বধ করলে তবেই ত্রিপুরাসুরকে বধ করা সম্ভব।
ব্রহ্মার বরে বলীয়ান হয়ে স্বর্গ, মর্ত্য ও পাতাল জুড়ে প্রচণ্ড অত্যাচার শুরু করে ত্রিপুরাসুর। তখন দেবতাদের অনুরোধে মহাদেব সৃষ্টি রক্ষা করতে এগিয়ে আসেন। তিনি পৃথিবীকে নিজের রথ বানান। এই রথের একটি চাকা হয় সূর্য, অন্য চাকা হয় চন্দ্র। মেরূ পর্বত হয় ধনুক এবং স্বয়ং বিষ্ণু হন তীর, বাসুকি নাগ হয় এই ধনুকের জ্যা। এই ভাবে যখন সূর্য, চন্দ্র ও পৃথিবী এক সরলরেখায় আসে, তখন অভিজিৎ মুহূর্তে একটি একটি তীরে তারকাক্ষ, কমলাক্ষ ও বিদ্যুন্মালি-সব ত্রিপুরাসুরকে বধ করেন মহাদেব। ত্রিপুরাসুরকে বধ করার পর মহাদেব ত্রিপুরারি নামে পরিচিত হন। কার্তিক পূর্ণিমায় তারকাসুর নিধনের পর দেবলোকে প্রদীপ জ্বালিয়ে উদযাপন করেন দেবতারা। মহাদেবের বাসস্থান কাশীতেও জ্বালানো হয় প্রদীপ। সেই থেকে কার্তিক পূর্ণিমা তিথিতে পালিত হয় দেব দীপাবলি।
