দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ চারিদিকে পুজো নিয়ে সাজোসাজো রব, প্রতি বছরের মত এ বছর ও পুজো নিয়ে বাংলার মানুষের উন্মাদনা উদ্দীপনা কম নয়। এখন প্রায় সমস্ত পুজোতেই থিমের রঙ লেগেছে, থিমের কথা উঠলে মনে পড়ে দক্ষিন কলকাতার একটি পুজোর কথা। সালটা ২০১৫ , পুজোর বাজার তখনো শুরু হয়নি তার আগেই গড়িয়াহাটের মোড় থেকে ইএম বাইপাস, টালি থেকে টালা ছেয়ে গেল 'এত বড় সত্যি'তে। পরে সামনে এল এই 'বড় সত্যি' আসলে দেশপ্রিয় পার্কের পুজোর থিম, সেই বছর সত্যিই দেশপ্রিয় পার্কে ছিল সবচেয়ে বড় চমক। বিশ্বের সব থেকে বড় দুর্গা। ৮৮ ফিটের দুর্গা দেখতে রীতিমতো হুড়োহড়ি পড়ে গিয়েছিল। ভিড়ের চাপে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় সে বছরদেশপ্রিয় পার্কের পুজো শুরুর আগেই বেজে যায় বিদায়ের বাদ্যি। পুজোর শহরে এক বিতর্কিত পুজো হিসাবে থেকে যায় দেশপ্রিয় পার্কের দুর্গাপুজো।
দেশপ্রিয় পার্কের সেই বিতর্কিত দুর্গা প্রতিমা গড়েছিলেন মিন্টু পাল। bangla.aajtak.in-কে মিন্টু পাল জানান যে ওই প্রতিমা গড়তে ৬ মাস সময় লেগেছিল। ২২ জন কারিগর ও মিন্টু পাল নিজে দাঁড়িয়ে সেই মূর্তি গড়ে তুলেছিলেন। ফাইবার গ্লাসের মূর্তি ছিল। কিন্তু হঠাৎ যে এই বিতর্ক হবে তা নিজেও বুঝতে পারেননি মৃৎশিল্পী।
শিল্পী মিন্টু পাল বলেন, সেই দুর্গা তো কেউই দেখতেই পেল না। এমনকী এই পুজো ও দুর্গা প্রতিমা নিয়ে বিতর্ক এমন হয় যে তা সংরক্ষণও করা হয়নি। খুব আক্ষেপের স্বরেই তিনি জানান যে রাজ্য সরকার প্রথমে পরিকল্পনা করেছিল যে এই দীর্ঘ প্রতিমাকে ইকো পার্কে রাখবে। কিন্তু সেই পরিকল্পনা আজও বাস্তবিত হয়নি।
দেশপ্রিয় পার্কের ঠাকুরটি এখন রয়েছে এই পুজোতে যারা স্পনসর ছিল অর্থাৎ স্টার সিমেন্ট, তাদের কাছেই রয়েছে এই দুর্গা প্রতিমা। তাঁর কথায়, যদিও এটা জনসমক্ষে রাখা উচিত ছিল, মানুষের দেখার কথা ছিল এই মূর্তিটি। শিল্পী জানান, তিনি ও তাঁর কারিগরেরা এই মূর্তিটি পার্ট পার্ট করে খুলে স্টার সিমেন্টের ডানকুনির গোডাউনে রেখে আসেন। মিন্টু পাল খুবই আক্ষেপের সুরে জানান যে তাঁকে বলা হয়েছিল সংরক্ষণ করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হলে তাঁকে জানানো হবে।
শহর কলকাতা তারপর বহু পুজোর আমেজ গায়ে মেখেছে কিন্তু মিন্টু পালের সেই সৃষ্টির স্থান পায়নি কোথাও। শিল্পী হতাশার সঙ্গে জানান জানান যে এভাবে বাংলার সৃষ্টিকে ধ্বংস করা হচ্ছে।