গুয়াহাটি, ১৭ ডিসেম্বর : চলে গেছেন জনপ্রিয় অসমিয়া চলচিত্রাভিনেতা এবং পরিচালক জয়ন্ত দাস। গৌহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শনিবার রাত ৮:৪১ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৪ বছর। গতকাল রাতেই বহু গুণমুগ্ধের উপস্থিতিতে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে প্রয়াত জয়ন্তের।
জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরে লিভারজনিত রোগে আক্রান্ত ছিলেন অভিনেতা জয়ন্ত দাস। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত ৯ ডিসেম্বর তাঁকে বেসরকারি অ্যাপলো হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছিল। চিকিৎসা চলছিল সরকারি অর্থানুকূল্যে। পরে রাজ্য সরকারের নির্দেশে তাঁকে স্থানান্তর করা হয় গৌহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
‘মুকুতা’ শীর্ষক অসমিয়া ছায়াছবিতে শিশু অভিনেতা হিসেবে অভিনয়-জীবন শুরু করেন জয়ন্ত। পরবৰ্তীতে ৮০-র দশকে কটন কলেজে একজন ক্ৰিকেটার হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন তিনি। বিচারপতি উজ্জ্বল ভুইয়াঁর হাত ধরে তিনি প্ৰবেশ করেছিলেন নাট্যজগতে। এর পর তাঁর জীবনের গতিপথ বদলে যায়।
অসমিয়া সিনেমায় প্ৰথম দিকে খলনায়কের ভূমিকায় অভিনয় করে দৰ্শকের মন জয় করেন। এর পর তিনি কৌতুকাভিনেতা হিসেবে ব্যাপক জনপ্ৰিয় হযে যান। 'ভাড়াঘর' শীৰ্ষক ধারাবাহিকে হেমন্ত কাকতির চরিত্ৰে অভিনয় করে দর্শকদের কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে উঠেছেন। 'পাপু নিকু সংবাদ' শীর্ষক চলচ্চিত্র ছিল তাঁর জীবনের প্রথম কমেডি সিনেমা। এছাড়া তিনি অভিনয় করেছেন যথাক্রমে ‘বুকুর মাজত জ্বলে’, ‘জোন জ্বলে কপালত’, ‘ভূমিপুত্ৰ’, ‘নায়ক’, ‘কন্যাদান’, ‘মন’, ‘কাদম্বরী’, ‘মইনা চরাইর মইনা মাত’, ‘জোনাকী মন’, ‘আই কোত নাই (মা)’, ‘অদম্য’, ‘অধিনায়ক’, ‘খেল দ্য গ্যাম, ‘রামধেনু’ প্রভৃতি একাধিক ছায়াছবিতে। অভিনয় ছাড়াও বেশ কয়কটি ছায়াছবির পরিচালনা করেছেন জয়ন্ত দাস।
গত ৯ তারিখ জনপ্রিয় অভিনেতার শারীরিক অসুস্থতার খবর ছড়িয়ে পড়লে রাজ্যের সাংস্কৃতিক জগতের সঙ্গে জড়িতদের পাশাপাশি তাঁর অনুরাগীরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন। ইত্যবসরে রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্ৰী কেশব মহন্ত হাসপাতালে গিয়ে জয়ন্ত দাসের সঙ্গে দেখা করে তাঁর শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিয়ে চিকিৎসার খরচ রাজ্য সরকার বহন করবে বলে ঘোষণা করেছিলেন।স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তাঁক অ্যাপলো হাসপাতাল থেকে গৌহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।