দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলা ভাষা ও বাঙালি পরিচিতি নিয়ে বিজেপি শাসিত রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সংস্থার ভূমিকা ঘিরে তীব্র বিতর্কের আবহে এবার সংসদে তৃণমূল কংগ্রেসের পাশে দাঁড়াল কংগ্রেসও। লোকসভা এবং রাজ্যসভা— দুই কক্ষেই ভাষার অবমাননা ও বাংলাভাষীদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ তুলে মুলতুবির প্রস্তাব জমা দিয়েছে কংগ্রেস। এই ইস্যুতে সংসদে রাজনৈতিক তাপমাত্রা ক্রমেই চড়ছে।
মঙ্গলবারই ভার্চুয়াল ভাষণে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দলের সাংসদদের নির্দেশ দিয়েছিলেন, সংসদে জোরালো প্রতিবাদ জানাতে হবে বাংলা ও বাঙালির প্রতি বিজেপির "অবমাননাকর আচরণ" এবং জাতীয় স্তরে বাংলা ভাষার গুরুত্ব খর্ব করার চেষ্টার বিরুদ্ধে। তার পরদিন, অর্থাৎ বুধবার, সংসদের অধিবেশন শুরুর আগে তৃণমূলের সাংসদরা সংসদ চত্বরে ‘মকরদ্বার’-এর সামনে জমায়েত হন এবং প্রতিবাদে মুখর হন। তাদের কণ্ঠে শোনা যায়— “জাতীয় সংগীতের অপমান দেশদ্রোহ, বাংলা-বাঙালির অপমান মানছি না, মানব না”, ও “বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাংলাভাষীদের উপর অত্যাচার কেন?” ইত্যাদি স্লোগান।
এই আবহে বৃহস্পতির দিন কংগ্রেসও এক ধাপ এগিয়ে লোকসভা ও রাজ্যসভা— উভয় কক্ষেই মুলতুবির নোটিস দেয়। কংগ্রেস সূত্রে খবর, বাংলা ও বাঙালিদের প্রতি বিজেপির দৃষ্টিভঙ্গির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে তারা তৃণমূলের সঙ্গে সমন্বয় গড়ে তুলতে আগ্রহী। এই প্রসঙ্গে এক শীর্ষ কংগ্রেস নেতা বলেন, “ভাষার অপমান ও জাতিগত বিদ্বেষের রাজনীতির বিরুদ্ধে সর্বদলীয় প্রতিরোধ প্রয়োজন। বাংলা এক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক। তা নিয়ে যারা প্রশ্ন তোলে, তারা ভারতীয় চেতনার বিরোধী।” রাজনৈতিক মহলে জল্পনা আরও জোরাল হয়েছে এই কারণে যে, বৃহস্পতিবার রাতেই কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর আয়োজিত নৈশভোজে তৃণমূলের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিত থাকার কথা। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে বাংলা ভাষা ও বাঙালিদের অপমান ইস্যুতে সংসদীয় সমন্বয় ও ভবিষ্যৎ প্রতিবাদ কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হতে পারে। পাশাপাশি, বিহারের সাম্প্রতিক SIR (Social Impact Report) ঘিরে বিতর্ক নিয়েও আলাপ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তৃণমূল ও কংগ্রেসের এমন সম্মিলিত প্রতিবাদে বিজেপি কী জবাব দেয়, সেদিকেই এখন নজর সংসদ ও দেশের রাজনৈতিক মহলের।